রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে এনটিআরসিএ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা। শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে বিসিএসআইআর ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয় রাজশাহীর প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিলের রহস্যময় ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। তার স্কুলটি ছিল পরীক্ষাকেন্দ্র। সেখানে একজন সাংবাদিকের উপস্থিতি টের পেয়ে তাকে ম্যানেজে একাধিকার চেষ্টা চালান তিনি।
জানা গেছে, কেন্দ্রটিতে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ৪০০ জন। এরমধ্যে ৩১৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেন। বাকি ৮৬ জন ছিলেন অনুপস্থিত। স্কুলের ১০টি কক্ষে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পরীক্ষা নেয়া হয়। এ কেন্দ্রে সিট ছিল নাটোর এনএস সরকারি কলেজের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. সজলের। তিনি উত্তরপত্রে সেট কোড পূরণ করতে ভুলে যান। পূরণের জন্য পরিদর্শককে অনুরোধ করলে তিনি সেট কোড পূরণের সুযোগ না দিয়ে অফিসে চলে যান। এ সময় সজলের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন স্কুলের কয়েকজন স্টাফ। একপর্যায়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হয়। যদিও কিছুক্ষণ পর ওই কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হস্তক্ষেপে সজলের সেট কোড পূরণ করা হয়।
এদিন কেন্দ্রটিতে সাংবাদিক যাওয়ার খবর শুনে স্কুলটির শিক্ষক মজিবুল ইসলাম ও একজন স্টাফের হাত দিয়ে অফিস কক্ষের বাইরে টাকা পাঠান প্রধান শিক্ষক আব্দুল জলিল। এসময় তারা সাংবাদিককে বলেন, ‘হেড স্যর আপনার জন্য টাকাগুলো দিয়েছে।’ তবে ওই সাংবাদিক টাকা গ্রহণ করেননি। ফলে তারা টাকা নিয়ে ফিরে যান। পরে তারা ফের এসে সাংবাদিককে কৌশলে শ্রেণীকক্ষে ডেকে টাকা দিতে চান। পুনরায় টাকার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেন স্থানীয় ওই সাংবাদিক।
পরে টাকা দেয়ার কারণ জানতে চাইলে স্কুলটির প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘ওটা আলাদা বিষয়।’ কী বিষয়- এমন প্রশ্নে আব্দুল জলিল বলেন, ‘আপনার যত ল্যাখার, ল্যাখেন গা। এটাতে আপনার যত খুশি ল্যাখার থাকে, ল্যাখেন গা।’ এসময় শিক্ষকের ওপর দোষ চাপিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি বললাম যে, দ্যাখেন; যাইয়্যা বিদায় কইরা দেন। ও (মজিবুল) ভুল কইরাছে।’
টাকা দেয়ার কারণ জানতে চেয়ে পুনরায় প্রশ্ন করলে সাংবাদিককে একবার নিজের ছাত্র, আরেকবার ভাই ও সর্বশেষ ভাগ্নে হয় বলে দাবি করেন আব্দুল জলিল। বলেন, আমার এক ভাই সাংবাদিক। কোন গণমাধ্যমে কাজ করে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমি তো তাও জানি না। কী অনলাইনে ল্যাখে, তাও জানি না। আমার ছাত্র। ও আইসছে কি না, ওক দেই। আমার ভাইগ্ন্যা আছে একটা, ওই যদি আসে ওক দেই, টাকা দেই, আমার ভাইগ্ন্যা এরকম।’