নরসিংদীর রায়পুরায় ৯ বছর বয়সী এই শিশু আব্দুর রহমান। তিনি মাত্র ১ বছর ১ মাসে পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়ে অনন্য গৌরব অর্জন করেছেন। তার এমন সাফল্যে অভিভাবক শিক্ষক শিক্ষার্থী এলাকাবাসী উচ্ছ্বসিত আনন্দিত।
আব্দুর রহমান উপজেলার বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর গ্রামের অবস্থিত রামনগর হাফেজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানা মাদরাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী। এখানেই তিনি ১০ মাসে নূরানী পড়ে ১বছর ৩০ দিনে পবিত্র কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেছেন।
শিশু আব্দুর রহমান উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর নগর গ্রামের পূর্বপাড়া গ্রামের মো.আবুল বাসারের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। আব্দুর রহমান বড়।
হাফেজ আব্দুর রহমান বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ তালার অশেষ মেহেরবানীতে শিক্ষকদের সর্বাত্মক সহযোগিতায় ১ বছর ১মাসে হেফ্জ শেষ করতে পেরেছি। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন। বড় আলেম হয়ে দিনের খেদমতে দেশ বিদেশে সুনাম অর্জন করতে পারি।’
আ: রহমানের সহপাঠীরা বলেন,’ সে খুবই বিনয়ী নম্র ভদ্র শিক্ষকদের আন্তরিকতা যত্নে নিজ চেষ্টায় অল্পে আল্লাহ তায়া’লার রহমতে হেফজ শেষ করতে পেরেছে তার সফলতায় আমরা খুবই আনন্দিত গর্বিত। আল্লাহ তাকে দিনের খেদমতে কবুল করে নেন।’
মাদরাসার অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা আব্দুল কাদির বলেন, ‘ আব্দুর রহমান এই মাদরাসায় ভর্তি হয় ২০২২ সালে ডিসেম্বর সে মক্তব কায়দা, নূরানী থেকে পড়া শুরু করে। ২০২৩ সালে হেফজ বিভাগে ভর্তি হন ২০২৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারী হেফজ সম্পন্ন করে। শুরুতেই প্রতিদিন চার-পাঁচ পৃষ্ঠা করে সবক প্রদান করত। তার বাবা সর্বাত্মক সহযোগিতা ছিলো বেশি। তিনি তাকে মাদরাসায় রাখতো নিয়মিত খাবার দিয়ে যেতো। মাশাআল্লাহ, তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা, একাগ্রতা ও আন্তরিকতা তাকে এত অল্প দিনে হিফজ সম্পন্ন করতে সাহায্য করেছে।আমরা তার সার্বিক উন্নতি কামনা করছি।’
মাদরাসার সভাপতি নাজির উল্লাহ ভূইয়া বলেন, ‘১৯৭১ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮১ সাল থেকে অত্যন্ত দক্ষতার সহিত সুনামের সহিত এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় পরিচালিত হয়ে আসছে। নূরানী, খারািজি, হেফজ, তিনটি বিভাগ ২ শতাধিক শিক্ষার্থী ৮-১০ জন দক্ষ শিক্ষক ধারা পরিচালিত হয়। এতে হিফজ বিভাগের পাশাপাশি মক্তব বাংলা ও ইংরেজি পড়ানো হয়। এতে ভালো মানের শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে পাঠদান করি। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা উপজেলা জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন পুরুষ্কার অর্জন করে চলেছে। তিনি আরও বলেন, মাদরাসার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি সময়কে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে এসেছি।
মাদরাসা ও শিক্ষার্থীদের সফলতার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই। এলাকার ছেলে এত অল্প দিনে আব্দুর রহমানের সাফল্যের মুখ দেখতে পারাটা সত্যিই গৌরবের বিষয়। আমি তার উত্তরোত্তর উন্নতি সফলতা কামনা করছি।’
স্থানীয় বাসিন্দা অলী মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবৎ সুনামের সহিত পরিচালিত হচ্ছে। শিক্ষকরা সময়ের প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার ফলেই বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করছে। এর আগেও এই মাদরাসার এক শিক্ষার্থী ৭ মাস হেফজ সম্পন্ন করেছিল। আব্দুর রহমানের এমন সাফল্যে অনেক শিক্ষার্থী অনুপ্রাণিত হবে। এলাকাবাসী তার উত্তর উত্তর সফলতা কামনা করে।’