রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলতে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বুধবার রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে সড়ক পরিবহণ উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম সভায় তিনি এ নির্দেশ দেন।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় কোনো ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানো যাবে না। এ বিষয়ে শুধু নিষেধাজ্ঞা আরোপ নয়, এগুলো চলতে যাতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ২২ মহাসড়কে রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করুন।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরে যে ধরনের লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে, তা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে দেখা যায় না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শহরে আধুনিক গণপরিবহণ চলাচল করে। কিন্তু ঢাকায় লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে। এগুলো দেখতেও তো খারাপ লাগে। এর চেয়ে ঢাকার বাইরে মফস্সল এলাকাগুলোয় উন্নতমানের গণপরিবহণ চলে। মন্ত্রী বলেন, ঢাকা সিটিতে মোটরসাইকেল অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। এখন মোটামুটি সবাই হেলমেট পরেন। কিন্তু ঢাকার বাইরেও একটা নীতি গ্রহণ করা দরকার-‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ (হেলমেট ছাড়া তেল নয়)। সারা দেশে মোটরসাইকেলের চালকসহ দুজনের বেশি বহন করা যাবে না। আর প্রত্যেকের হেলমেট থাকতে হবে। নয়তো জ্বালানি বিক্রি করা যাবে না। এ সময় সড়কে ৪৩ বছরের পুরোনো গাড়ি কিভাবে চলাচল করে তা বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারের কাছে জানতে চান। তাৎক্ষণিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই ৪৩ বছর বিআরটিএ কি ঘুমিয়ে ছিল। ঢাকা শহরে লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি। গাড়িগুলো গরিব গরিব চেহারার। আর ৩০ জুনের মধ্যে ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সারা দেশে মোটরসাইকেল-ইজিবাইকের কারণে দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি স্ক্র্যাপ (ধ্বংস) করতে হবে। বিআরটিএ কত আইন করে, নীতি করে, কাজের কাজ তো কিছু হচ্ছে না। সড়কের যানজট ও দুর্ঘটনা তো কমছে না। তাহলে নিরাপদ সড়কের স্বপ্ন দেখে লাভ কী? সভায় অংশ নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ভয়াবহ ব্যাপার, যখন ব্যাটারিচালিত রিকশার চালকরা দুই পা ওপরে উঠিয়ে বেপরোয়া গতিতে চালায়। অনেক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি আছেন, যারা চোখে কিছুটা কম দেখেন, তারাও এ রিকশা নিয়ে নেমে পড়েন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, সিদ্ধান্তে আসা দরকার যে ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা, অটোরিকশা, ইজিবাইক চলবে না। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সড়ক পরিবহণ ও শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহজাহান খান মেয়াদোত্তীর্ণ ও লক্কড়ঝক্কড় গাড়িগুলোকে ডাম্পিং নয়, সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের সুপারিশ করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।