দেশে মাদকের প্রবেশ রোধে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সব ধরনের মাদক শনাক্তে প্রথমে দেশের আন্তর্জাতিক তিন বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক যন্ত্র বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সীমান্তের ইমিগ্রেশন চেকপোস্টেও এসব যন্ত্র বসানো হবে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) ‘মডার্নাইজেশন অব ডিএনসি’ প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দরে প্রাইমারি স্ক্যানিং সিস্টেমের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, ডিএনসি, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ^বিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রতিনিধিদের নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, বিমানবন্দর ও সীমান্তে মাদক শনাক্তকরনের অত্যাধুনিক যন্ত্র না থাকায় মাদকদ্রব্য প্রবেশ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। স^রাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, চোরাচালান রোধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। অবৈধ পণ্য শনাক্ত করতে উন্নতমানের আরও যন্ত্রপাতি বসানো হবে। তা ছাড়া চোরাকারবারিদেরও ধরা হচ্ছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও প্রকল্পের সদস্যসচিব মেহেদী হাসান বলেন, সীমান্ত ও বিমানবন্দর দিয়ে মাদকদ্রব্যের প্রবেশ রোধে আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় সম্প্রতি সরকারের কয়েকটি সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিমানবন্দর ও সীমান্ত এলাকায় মাদক শনাক্ত করার অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি দ্রুত না বসালে চোরাকারবারিরা পার পেয়ে যাবে। এসব তথ্য পেয়ে স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।
জানা গেছে, যাত্রীদের লাগেজ ও যানবাহন তল্লাশি এবং তরল বিস্ফোরক শনাক্ত করতে পৃথক যন্ত্র বসানো হচ্ছে। এ জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে। এসব যন্ত্র বসাতে কত টাকা খরচ হবে, তা নিয়েও চলছে হিসাব-নিকাশ। তবে যন্ত্রগুলোর নাম প্রায় চূড়ান্ত করা হয়েছে। উড়োজাহাজের হোল্ডে রাখার মতো ভারী ব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিন, হ্যান্ডব্যাগ তল্লাশির জন্য ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন, লিকুইড এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (এলইডিএস), আন্ডার ভিইকল স্ক্যানিং সিস্টেম (ইউভিএসএস), ফ্যাপ ব্যারিয়ার গেট উইথ
কার্ড রিডার, ব্যারিয়ার গেট উইথ আরএফআইডি কার্ড রিডার, এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস) এবং এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন (ইটিডি) যন্ত্র থাকবে। ডুয়েল ভিউ এক্স-রে স্ক্যানিং মেশিন ব্যাগের ওপর ও দুই পাশ সব দিক দিয়েই স্ক্যান করতে সক্ষম হবে। এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম দিয়ে ব্যাগ না খুলেই তল্লাশি করতে পারবেন কর্মকর্তারা। আবার কেউ যদি শরীরে অবৈধ কিছু রাখেন, তাও ধরা যাবে সহজেই। এসব যন্ত্রপাতি যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্য থেকে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।