Dhaka 11:11 pm, Sunday, 22 December 2024

ভারতের আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশে প্রবেশের বাধায় সিলেটের বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি সীমান্তে শতর্ক অবস্থানে প্রশাসন

বাংলাদেশে সংখ্যালুঘু নির্যাতনের উপর ইস্যুকরে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশ অভিমুখে মার্চ করেছে হিন্দু ঐক্যমঞ্চের কয়েকশ নেতাকর্মীরা। তাদের টার্কেট বাংলাদেশে প্রবেশ করে নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টিকরা। সিলেটের বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি স্থলবন্দরে এক পর্যায়ে ভারতীয় হাজার হাজার জনতা বাংলাদেশে প্রবেশেরও চেষ্টা চালায়।
এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও করিমগঞ্জ পুলিশের সদস্যরা কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দু ঐক্যমঞ্চের ব্যানারে ভারতের কয়েকশ নাগরিক বাংলাদেশ অভিমুখে এ মার্চে অংশ নেন। ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ অভিমুখে এ মুভমেন্টের একাধিক ভিডিও  রোববার (১ লা ডিসেম্বর ২৪ইং) সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে সিলেটসহ সীমান্ত এলাকাগুলোতে তোলপাড় শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সুতারকান্দি সীমান্ত চেকপোস্টের অদূরে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জে একটি রাস্তায় বিএসএফ জওয়ানরা সড়কে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন। ব্যারিকেডের পাশেই কয়েকশ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসার জন্য পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিলো। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএসএফ জওয়ানরাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যোগ দেন।
এদিকে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে বিক্ষোভকারী ভারতীয় হিন্দু মঞ্চের নেতারা সুতারকান্দি স্থলবন্দর পর্যন্ত আসতে পারেনি। ওখানেই তাদের আটকে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আসামের বরাক ভ্যালীর এক হিন্দু নেতা ক্ষোভের সঙ্গে বলতে থাকেন, জীবন গেলে যাবে, তবুও তারা বাংলাদেশে যাবেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে তারা এই মার্চ করছেন বলে দাবী করেন।
এ ঘটনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার ও জকিগঞ্জ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিজিবির ৫২ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক  লে. কর্নেল মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে ভারতের ভেতরে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ করেছে। এটা শেওলা সীমান্তের ওপারে।
এদিকে, সীমান্তের ওপারে ভারতে এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে খবর আস ছিলো সিলেটে। এ কারণে সিলেটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফ থেকে সীমান্ত এলাকা থেকে সিলেটে আসা সড়ক গুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে তল্লাশি ছাড়াও নাশকতাকারীদের ধরতে অভিযানও চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, সোমবার (২ ডিসেম্বর ২৪ইং) দুপুরের দিকে ভারতের শ্রীভূমির (করিমগঞ্জ) শুল্ক স্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন ভারতের সনাতনী ঐক্য মঞ্চ সংগঠনের সদস্যরা। এরপর জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আমদানি রপ্তানিসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারী সনাতনী ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে বিজিবি সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক (অপরারেশন) মেজর গাজী মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে কোন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে সকল সীমান্তেই বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা এই ধরণের বিভিন্ন ভিডিও দেখেছি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ভারতের আন্দোলনকারীরা বাংলাদেশে প্রবেশের বাধায় সিলেটের বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি সীমান্তে শতর্ক অবস্থানে প্রশাসন

আপলোড সময় : 04:40:42 pm, Tuesday, 3 December 2024
বাংলাদেশে সংখ্যালুঘু নির্যাতনের উপর ইস্যুকরে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ এলাকায় বাংলাদেশ অভিমুখে মার্চ করেছে হিন্দু ঐক্যমঞ্চের কয়েকশ নেতাকর্মীরা। তাদের টার্কেট বাংলাদেশে প্রবেশ করে নৈরাজ্য পরিস্থিতি সৃষ্টিকরা। সিলেটের বিয়ানীবাজার সুতারকান্দি স্থলবন্দরে এক পর্যায়ে ভারতীয় হাজার হাজার জনতা বাংলাদেশে প্রবেশেরও চেষ্টা চালায়।
এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও করিমগঞ্জ পুলিশের সদস্যরা কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে তাদের বাধা দেয়। বাংলাদেশে কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে হিন্দু ঐক্যমঞ্চের ব্যানারে ভারতের কয়েকশ নাগরিক বাংলাদেশ অভিমুখে এ মার্চে অংশ নেন। ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশ অভিমুখে এ মুভমেন্টের একাধিক ভিডিও  রোববার (১ লা ডিসেম্বর ২৪ইং) সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকে সিলেটসহ সীমান্ত এলাকাগুলোতে তোলপাড় শুরু হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, সুতারকান্দি সীমান্ত চেকপোস্টের অদূরে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জে একটি রাস্তায় বিএসএফ জওয়ানরা সড়কে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন। ব্যারিকেডের পাশেই কয়েকশ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে আসার জন্য পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিলো। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে বিএসএফ জওয়ানরাও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যোগ দেন।
এদিকে বিএসএফ ও ভারতীয় পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে বিক্ষোভকারী ভারতীয় হিন্দু মঞ্চের নেতারা সুতারকান্দি স্থলবন্দর পর্যন্ত আসতে পারেনি। ওখানেই তাদের আটকে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে আসামের বরাক ভ্যালীর এক হিন্দু নেতা ক্ষোভের সঙ্গে বলতে থাকেন, জীবন গেলে যাবে, তবুও তারা বাংলাদেশে যাবেন। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে তারা এই মার্চ করছেন বলে দাবী করেন।
এ ঘটনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার ও জকিগঞ্জ সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বিজিবির ৫২ ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক  লে. কর্নেল মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশ সীমান্তের অন্তত দুই কিলোমিটার দূরে ভারতের ভেতরে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ করেছে। এটা শেওলা সীমান্তের ওপারে।
এদিকে, সীমান্তের ওপারে ভারতে এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে খবর আস ছিলো সিলেটে। এ কারণে সিলেটের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তরফ থেকে সীমান্ত এলাকা থেকে সিলেটে আসা সড়ক গুলোতে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে তল্লাশি ছাড়াও নাশকতাকারীদের ধরতে অভিযানও চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, সোমবার (২ ডিসেম্বর ২৪ইং) দুপুরের দিকে ভারতের শ্রীভূমির (করিমগঞ্জ) শুল্ক স্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন ভারতের সনাতনী ঐক্য মঞ্চ সংগঠনের সদস্যরা। এরপর জকিগঞ্জ শুল্ক স্টেশন দিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আমদানি রপ্তানিসহ সব ধরনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারী সনাতনী ঐক্য মঞ্চের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে বিজিবি সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক (অপরারেশন) মেজর গাজী মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন জানান, এ বিষয়ে কোন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে সকল সীমান্তেই বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি বিয়ানীবাজার থানা পুলিশ সর্তক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমরা এই ধরণের বিভিন্ন ভিডিও দেখেছি।