অতিবৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা উজানের ঢলে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভেঙে গেছে গোমতী নদীর পানি প্রতিরক্ষা বাঁধ। এতে প্লাবিত হচ্ছে কুমিল্লার বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। দিন যত যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি দিন দিন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। বন্যার পানিতে মাটির ঘরগুলো ধসে পড়ছে, যার ফলে অনেক মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে বিপদে পড়েছেন। তবে, ধসে পড়া ঘরের নিচে চাপা পড়ে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুর পর্যন্ত উপজেলার অন্তত ২০টি ঘর ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভরাসার, ইছাপুরা, বুরবুরিয়া, খাড়াতাইয়া, শিকারপুর, কালিকাপুর, বাকশিমূল ও অজ্ঞাপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে মাটির ঘরগুলো নরম হয়ে ধসে পড়েছে। তবে, ধসে পড়া ঘরগুলোর অধিকাংশই খালি ছিল। গ্রামে পানির পরিমাণ বাড়লে মানুষ ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যান।
কাপুর গ্রামের সাঈদ বলেন, গ্রামের দিকে ঢুকতেই পুকুরপাড়ে একটি মাটির ঘর ছিল। সেটি আজ দুপুর আড়াইটার দিকে ধসে পড়েছে। পানি বাড়ার পর ওই পরিবার আগেই আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।
ইছাপুরা গ্রামে জাহাঙ্গীর আলম বাদশা বলেন- আমার বয়স ৬৫ বছর। এই বয়সে গ্রামের রাস্তাঘাট কখনো ডুবতে দেখিনি। এবারের বন্যা ইতিহাস সৃষ্টি করবে। তিনি আরও বলেন, বুড়িচংয়ে মাটির বসতি বেশি। অতিরিক্ত পানির কারণে ঘরের দেওয়াল নরম হয়ে ধসে পড়েছে।
বাকশিমূল গ্রামের আমজা হোসেন বলেন- এর আগেও একবার গোমতীর বাঁধ ভেঙেছে, কিন্তু আমাদের গ্রামে পানি ওঠেনি। এবার বুকসমান পানি হয়েছে। পানিতে ডুবে ছয়টি মাটির ঘর ভেঙে গেছে।’
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাহিদা আক্তার জানান, মাটির ঘর ধসে পড়ার কথা শুনেছি। তবে বুড়িচংয়ে কয়টা ঘর ধসে পড়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান এখন নেই। বিকেলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। তিনি আরও বলেন, বুড়িচংয়ে বন্যায় একজন মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া তেমন কোনো হতাহতের খবর আমার কাছে নেই।