Dhaka 1:39 am, Monday, 23 December 2024

বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপি প্রস্তুত : শিল্প সচিব

চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, এবার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে। এর সবগুলো মডিউলকে ওভারহোলিং তথা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামতপূর্বক ঢেলে সাজানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দিয়ে তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করা হয়েছে। তাছাড়া বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রাথমিক পরিশোধন ছাড়া যাতে কোনো ট্যানারির বর্জ্য সিইটিপিতে আসতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের পুরো টিম নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। এখানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আছেন বিসিকে চেয়ারম্যান আছেন ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা রয়েছেন আমরা সবাই মিলে এসেছি মূলত গতকাল কোরবানির সেটির যে চামড়া আনা হয়েছে তা দেখতে। এখানে যে সিইটিপি রয়েছে, তা পুরোপুরি প্রস্তুত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেটি সরেজমিনে দেখতে আমরা এখানে এসেছি।

 

তিনি আরও বলেন, সব সময় বলা হতো, সিইটিপি কার্যকর নয় সিইপিটি কার্যকর হচ্ছে না এসব কারণে আমাদের আউটলেটে যে পানি রয়েছে বা স্যাম্পল যেটা হচ্ছে সেটার মানমাত্রা বেশি হচ্ছে, সেই জায়গা নিরসন করতে পারি তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই আমরা কাজ করছিলাম আমরা বলেছি। সিইটিপির যে মডিউল গুলা সেটির সবগুলোকে ওভারহোলিং করা হয়েছে। বায়োলজিক্যাল যে সব কাজ ছিল, সেগুলোকে আমরা লাইভ করেছি বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্যে। আর যেটা করা হয়েছে তা হলো-পানির পিউরিফাই করার জন্য ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা সেটা আমরা করেছি।

 

জাকিয়া সুলতানা বলেন, প্রতিটি ট্যানারি মালিককে বলা হয়েছে, তারা কোনোভাবেই অন ট্রিটমেন্ট ভাবে কোন পানি যদি ছাড়ে, তাহলে তাদের আর কোনো পানি দেবে না কর্তৃপক্ষ। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখতে পেরেছি পুরো সিইটিপি ঘুরে দেখেছি, গত কয়েক বছর ধরে আমরা উন্নতি করছিলাম, এই সিইটিপিতে বারবার এসেছি। সব সংশ্লিষ্টরা মিলে যে টাস্ক ফোর্স সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হলো, সেটি দেখেছি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি, লবণ মাখানো ছাড়া কেনো চামড়া ঢুকবে না। সেটিও দেখলাম, এবার উন্নতি হয়েছে। গত ৬৩ বছরের মধ্যে এ বছর সর্বোচ্চ পরিমাণ ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টন। ফলে লবণের সংকট নেই। আর এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তৃণমূলে প্রচারণা করা হয়েছে। কারণ আমাদের সিইটিপির যে কার্যক্ষমতা ২৫ হাজার লিটারের মতো, সেটির ওপর চাপ কম পড়বে। এজন্য বলেছি, ঢাকার বাইরের চামড়া সাত দিন এখানে ঢুকবে না। ফলে ক্রমান্বয়ে চামড়া এলে সিইটিপির ওপর একবারে চাপ তৈরি হবে না। এটার ভালো ফল আমরা এর মধ্যে পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ঢাকায় সিইটিপি-২ ও চট্টগ্রামে আরও একটি সিইটিপি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি করা গেলে, আমাদের সারা বছরের চামড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা, কোরবানির সময় এক কোটি আর সারা বছর আরও এক কোটি, মোট দুই কোটি চামড়া প্রসেসের জন্য যত ধরনের ক্যাপাসিটি প্রয়োজন, তা আমরা অর্জন করবো।

সচিব বলেন, এলডব্লিউজির সক্ষমতা অর্জন করতে আমরা কাজ করছি। বেশ কয়েকটি ট্যানারি এরই মধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট চালু করেছে। এভাবে সব ট্যানারি যদি ক্রোম রিকভারি ইউনিট চালু করে, আমরা এতে এগিয়ে যাব।

তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের বিষয়ে হাইকোর্টের চারটি নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে। বড় ট্যানারিগুলো ইতোমধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিআরইউ) স্থাপন করেছে। পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম ও বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) ছাড়া অন্যান্য প্যারামিটারগুলো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই রয়েছে। পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের সঠিক মান নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও আমাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হবে।

পরিদর্শনকালে বিসিকের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা ও মো. শামীমুল হক প্রমুখ।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপি প্রস্তুত : শিল্প সচিব

আপলোড সময় : 10:27:24 am, Thursday, 20 June 2024

চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা।

মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরের বিসিক চামড়া শিল্প নগরী পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সচিব বলেন, এবার বিসিক চামড়া শিল্প নগরীর সিইটিপিকে পুরোপুরি প্রস্তুত ও কার্যকর করা হয়েছে। এর সবগুলো মডিউলকে ওভারহোলিং তথা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও মেরামতপূর্বক ঢেলে সাজানো হয়েছে। প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দিয়ে তরল বর্জ্যকে পরিশোধন করা হয়েছে। তাছাড়া বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট ব্যবস্থা চালু রয়েছে। প্রাথমিক পরিশোধন ছাড়া যাতে কোনো ট্যানারির বর্জ্য সিইটিপিতে আসতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের পুরো টিম নিয়ে আমরা এখানে এসেছি। এখানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আছেন বিসিকে চেয়ারম্যান আছেন ভোক্তা অধিকারের কর্মকর্তা রয়েছেন আমরা সবাই মিলে এসেছি মূলত গতকাল কোরবানির সেটির যে চামড়া আনা হয়েছে তা দেখতে। এখানে যে সিইটিপি রয়েছে, তা পুরোপুরি প্রস্তুত করতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেটি সরেজমিনে দেখতে আমরা এখানে এসেছি।

 

তিনি আরও বলেন, সব সময় বলা হতো, সিইটিপি কার্যকর নয় সিইপিটি কার্যকর হচ্ছে না এসব কারণে আমাদের আউটলেটে যে পানি রয়েছে বা স্যাম্পল যেটা হচ্ছে সেটার মানমাত্রা বেশি হচ্ছে, সেই জায়গা নিরসন করতে পারি তা নিয়ে অনেকদিন ধরেই আমরা কাজ করছিলাম আমরা বলেছি। সিইটিপির যে মডিউল গুলা সেটির সবগুলোকে ওভারহোলিং করা হয়েছে। বায়োলজিক্যাল যে সব কাজ ছিল, সেগুলোকে আমরা লাইভ করেছি বায়োলজিক্যাল ট্রিটমেন্ট এর উদ্দেশ্যে। আর যেটা করা হয়েছে তা হলো-পানির পিউরিফাই করার জন্য ট্রিটমেন্টের ব্যবস্থা করা সেটা আমরা করেছি।

 

জাকিয়া সুলতানা বলেন, প্রতিটি ট্যানারি মালিককে বলা হয়েছে, তারা কোনোভাবেই অন ট্রিটমেন্ট ভাবে কোন পানি যদি ছাড়ে, তাহলে তাদের আর কোনো পানি দেবে না কর্তৃপক্ষ। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা দেখতে পেরেছি পুরো সিইটিপি ঘুরে দেখেছি, গত কয়েক বছর ধরে আমরা উন্নতি করছিলাম, এই সিইটিপিতে বারবার এসেছি। সব সংশ্লিষ্টরা মিলে যে টাস্ক ফোর্স সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তা কিভাবে বাস্তবায়ন করা হলো, সেটি দেখেছি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি, লবণ মাখানো ছাড়া কেনো চামড়া ঢুকবে না। সেটিও দেখলাম, এবার উন্নতি হয়েছে। গত ৬৩ বছরের মধ্যে এ বছর সর্বোচ্চ পরিমাণ ২৪ লাখ ৩৭ হাজার টন। ফলে লবণের সংকট নেই। আর এ জন্য স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে তৃণমূলে প্রচারণা করা হয়েছে। কারণ আমাদের সিইটিপির যে কার্যক্ষমতা ২৫ হাজার লিটারের মতো, সেটির ওপর চাপ কম পড়বে। এজন্য বলেছি, ঢাকার বাইরের চামড়া সাত দিন এখানে ঢুকবে না। ফলে ক্রমান্বয়ে চামড়া এলে সিইটিপির ওপর একবারে চাপ তৈরি হবে না। এটার ভালো ফল আমরা এর মধ্যে পাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা ঢাকায় সিইটিপি-২ ও চট্টগ্রামে আরও একটি সিইটিপি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটি করা গেলে, আমাদের সারা বছরের চামড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা, কোরবানির সময় এক কোটি আর সারা বছর আরও এক কোটি, মোট দুই কোটি চামড়া প্রসেসের জন্য যত ধরনের ক্যাপাসিটি প্রয়োজন, তা আমরা অর্জন করবো।

সচিব বলেন, এলডব্লিউজির সক্ষমতা অর্জন করতে আমরা কাজ করছি। বেশ কয়েকটি ট্যানারি এরই মধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট চালু করেছে। এভাবে সব ট্যানারি যদি ক্রোম রিকভারি ইউনিট চালু করে, আমরা এতে এগিয়ে যাব।

তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের বিষয়ে হাইকোর্টের চারটি নির্দেশনা যথাযথভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে। বড় ট্যানারিগুলো ইতোমধ্যে ক্রোম রিকভারি ইউনিট (সিআরইউ) স্থাপন করেছে। পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের মধ্যে ক্রোমিয়াম ও বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড (বিওডি) ছাড়া অন্যান্য প্যারামিটারগুলো নির্দিষ্ট সীমার মধ্যেই রয়েছে। পরিশোধন করা তরল বর্জ্যের সঠিক মান নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণে পরিবেশ অধিদপ্তরের পাশাপাশি সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও আমাদের নিজস্ব ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হবে।

পরিদর্শনকালে বিসিকের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা ও মো. শামীমুল হক প্রমুখ।