Dhaka 11:13 am, Monday, 23 December 2024

প্রশাসনে গতি বাড়ানোর উদ্যোগ

♦ ৫ লাখ শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ চায় সরকার ♦ অগ্রগতি জানাতে চিঠি জনপ্রশাসনের

দাফতরিক কাজে গতি বাড়াতে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং আওতাধীন সংস্থার শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিতে গত ফেব্রুয়ারিতে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। তবে সেই পরিপত্র মেনে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে তাগিদপত্র দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পনেরো দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ সংস্থাগুলো জনবল নিয়োগে কী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে- সে বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোতে প্রায় ৫ লাখ শূন্যপদ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান, ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি পদ শূন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, প্রশাসনে অনুমোদিত ১৯ লাখ ১৫১টি পদের বিপরীতে কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ১৪ লাখ। মোট জনবলের প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি পদ শূন্য রয়েছে। এর ফলে সরকারের অনেক সংস্থার কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতাও কমে গেছে।

জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। সরকারের কৃচ্ছনীতির কারণেও সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক গতিতে সম্পন্ন হয়নি। এ ছাড়া মামলা মোকাদ্দমার কারণেও বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে গেছে। কিন্তু নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। প্রশাসনিক কার্যক্রমের সঙ্গে যেহেতু পর্যাপ্ত জনবলের বিষয়টি জড়িত- সে কারণেই সরকারের মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সংস্থার শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইপিবি, টিসিবির নিয়োগ শেষ হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তারপরও কিছু শূন্যপদ রয়েছে। খুব শিগগিরই সেগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শূন্যপদে নিয়োগের চাহিদা দেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সুপারিশ জানালেও ভেরিফিকেশনসহ নানা জটিলতায় দিনের পর দিন আটকে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া। আবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হলেও সেখানে ঘুষ, তদবির, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা জটিলতায় আটকে যায় পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া। এভাবে দিনের পর দিন শূন্যপদের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)-এর সচিব মো. হাসানুজ্জামাল কল্লোল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয় শূন্যপদে নিয়োগের চাহিদা দিলে আমরা সে অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করি। এখন সুপারিশকৃতদের মধ্য থেকে নিয়োগ সম্পন্ন করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারির পর কোনো মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগের চাহিদাপত্র দিয়েছে কি না জানতে চাইলে পিএসসি সচিব জানান, তারা ননক্যাডার পদে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের জনবল নিয়োগের চাহিদা পেয়েছেন।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

প্রশাসনে গতি বাড়ানোর উদ্যোগ

আপলোড সময় : 07:41:01 pm, Wednesday, 20 March 2024

♦ ৫ লাখ শূন্যপদে দ্রুত নিয়োগ চায় সরকার ♦ অগ্রগতি জানাতে চিঠি জনপ্রশাসনের

দাফতরিক কাজে গতি বাড়াতে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ এবং আওতাধীন সংস্থার শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিতে গত ফেব্রুয়ারিতে পরিপত্র জারি করেছে সরকার। তবে সেই পরিপত্র মেনে জনবল নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না সে বিষয়ে তাগিদপত্র দেওয়া হচ্ছে। শুধু তাই নয়, পনেরো দিনের মধ্যে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ সংস্থাগুলো জনবল নিয়োগে কী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে- সে বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন পাঠাতে বলা হয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোতে প্রায় ৫ লাখ শূন্যপদ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান, ২০২২ এর তথ্য অনুযায়ী প্রায় ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি পদ শূন্য রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, প্রশাসনে অনুমোদিত ১৯ লাখ ১৫১টি পদের বিপরীতে কর্মকর্তা ও কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ১৪ লাখ। মোট জনবলের প্রায় ২৫ শতাংশের বেশি পদ শূন্য রয়েছে। এর ফলে সরকারের অনেক সংস্থার কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতাও কমে গেছে।

জন প্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল। সরকারের কৃচ্ছনীতির কারণেও সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বাভাবিক গতিতে সম্পন্ন হয়নি। এ ছাড়া মামলা মোকাদ্দমার কারণেও বিভিন্ন নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে গেছে। কিন্তু নির্বাচিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশাসনের গতি বাড়ানোর পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ সংস্থাগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। প্রশাসনিক কার্যক্রমের সঙ্গে যেহেতু পর্যাপ্ত জনবলের বিষয়টি জড়িত- সে কারণেই সরকারের মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে শূন্যপদে জনবল নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র অনুযায়ী এরই মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ সংস্থার শূন্যপদে নিয়োগ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইপিবি, টিসিবির নিয়োগ শেষ হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। তারপরও কিছু শূন্যপদ রয়েছে। খুব শিগগিরই সেগুলোর নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। সংশ্লিষ্টরা জানান, শূন্যপদে নিয়োগের চাহিদা দেওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) যথাযথ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সুপারিশ জানালেও ভেরিফিকেশনসহ নানা জটিলতায় দিনের পর দিন আটকে থাকে নিয়োগ প্রক্রিয়া। আবার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে হলেও সেখানে ঘুষ, তদবির, প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ নানা জটিলতায় আটকে যায় পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া। এভাবে দিনের পর দিন শূন্যপদের সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)-এর সচিব মো. হাসানুজ্জামাল কল্লোল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কোনো মন্ত্রণালয় শূন্যপদে নিয়োগের চাহিদা দিলে আমরা সে অনুযায়ী নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করে উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করি। এখন সুপারিশকৃতদের মধ্য থেকে নিয়োগ সম্পন্ন করার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে পরিপত্র জারির পর কোনো মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগের চাহিদাপত্র দিয়েছে কি না জানতে চাইলে পিএসসি সচিব জানান, তারা ননক্যাডার পদে কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের জনবল নিয়োগের চাহিদা পেয়েছেন।