Dhaka 11:36 pm, Monday, 30 December 2024

প্রয়োজন কোটা সংস্কার

এশিয়া ও ইউরোপের অনেক দেশেই এ পদ্ধতি বহাল

শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার বড় দেশগুলোতেও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় আনতে কোটার পাশাপাশি নানা ব্যবস্থা রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে বেসরকারি চাকরিতেও কোটা সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের একটি রায় নিয়ে হঠাৎ করেই দেশজুড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ বিষয়টি এখনো বিচারাধীন ও সমাধানযোগ্য।

 

আশঙ্কা করা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলনের পেছনে তরুণ শিক্ষার্থীদের আকাক্সক্ষাকে পুঁজি করে তৎপরতা চালাচ্ছে দেশবিরোধী শক্তি। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে পারেন। সেটি তাদের অধিকার। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ আছে। কিন্তু সেটি তারা না করে সড়কে নেমে এসেছেন। পথঘাট অচল করছেন। যেহেতু এটি আদালতের বিষয়। এরপরও সরকারের সঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বৈঠক হতে পারে। যে ভুল বুঝ রয়েছে এতে তার অবসান হবে।

একই সঙ্গে শিক্ষাবিদরা কোটা পুরোপুরি বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য কোটার প্রয়োজন আছে। এক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে কোটা কতটা থাকবে তা সংস্কার করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। সংস্কারের মাধ্যমেই কোটা সংকটের সমাধান আসতে পারে। এক্ষেত্রে কোটা বণ্টনে স্বতন্ত্র একটি নীতিমালা দরকার। তবে তার আগে উচ্চ আদালতে চলমান বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে হবে।
গত পাঁচ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ছিল না। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের আগে তিনটি বিসিএসে কোটা বহাল থাকলেও অধিকাংশ পদ পূরণ করা হয়েছে মেধাতালিকা থেকে। এর মধ্যে ৩৩তম বিসিএসে এই ব্যবস্থার মধ্যে ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রার্থী মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন। ৩৫তম বিসিএসে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ নিয়োগ পেয়েছেন মেধার ভিত্তিতে। এই পরীক্ষাগুলো হয়েছিল কোটা বহাল থাকার সময়।

 

এরপর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় দেখা যায়, নারীদের অংশগ্রহণ কমছে। সমাজে পিছিয়ে পড়াদের চাকরির সুযোগও নিচের দিকে নামছে। যা পুরো সমাজ ব্যবস্থার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন এক রিট মামলার নিষ্পত্তির ফলে আবারও সরকারি চাকরিতে, বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য সব কোটা ফিরে এসেছে। আর তাতেই বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধের পর সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা। আইনজীবীরা বলছেন, কোটার জন্য একটি আইন পাস করা হলে মতপার্থক্য ও বিতর্ক দূর হবে। এ ধরনের একটি পরিপত্র বিভিন্ন সময় জটিলতার সৃষ্টি করে।
সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, কোটা সুবিধায় আবেদন করলেও তাদের লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে হয়, এরপর তারা চাকরি পান। সুতরাং তারা মেধাবী ননÑ এ রকম বলার কোনো সুযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মেধার মাপকাঠিতে হয়তো অনেকে পয়েন্ট জিরো জিরো ওয়ান পারসেন্ট কম নম্বর পেয়েছেন, কোটা না থাকার কারণে তিনি পিছিয়ে গেছেন। এটা সব দেশেই হয়ে থাকে। আর যে কারণেই কোটার বিষয়ে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে চাকরিপ্রার্থীদের। প্রায় সব দেশের চাকরিতে সাধারণত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা রাখা হয়। অনেক দেশে জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে নারী কোটা রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথম থেকে নবম গ্রেড প্রথম শ্রেণি, দশম থেকে ১২তম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণি, ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেড তৃতীয় শ্রেণি এবং ১৭ থেকে ২০তম গ্রেড হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১ শতাংশ, অনগ্রসর জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ আছে ১ শতাংশ কোটা রয়েছে।
বিভিন্ন দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভারতে জনসংখ্যার অনুপাতে কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের বৈষম্য রোধ করতে ১৯৮৯ সালে ভারতের আইনসভা কর্তৃক অনুমোদিত ‘দলিত, সংখ্যালঘু এবং উপজাতি বৈষম্য দূরীকরণ আইন’ নামে একটি সাংবিধানিক আইন রয়েছে। নেপালে সরকারি চাকরিতে বর্ণ, জাত এবং লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে কোটাব্যবস্থা সংরক্ষণ করা হয়েছে। দেশটিতে সাধারণ কোটা ৫৫ শতাংশ এবং সংরক্ষিত কোটা ৪৫ শতাংশ। ১৯৯৩ সালে নেপালের আইনসভা প্রণীত ‘সরকারি চাকরি আইন’ নামের বিশেষ একটি আইনের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সুরক্ষিত।
পাকিস্তানে সরকারি চাকরির পাশাপাশি পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশটির বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য জনসংখ্যার অনুপাতে কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনিক চাকরি ব্যবস্থায় মাত্র ৭.৫ শতাংশ সরাসরি মেধা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হয়। বাকি অনুপাতটি প্রাদেশিক বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ওই দেশে সাধারণ কোটা ৭.৫ শতাংশ, পাঞ্জাব- ৫০ শতাংশ, সিন্ধ- ১৯ শতাংশ খাইবার পাখতুনখোয়া- ১১.৫ শতাংশ, বালুচিস্থান- ৬ শতাংশ সিন্ধ কোটা আবার দুটি বিশেষ ভাগে বিভক্ত- শহরাঞ্চল- ৪০ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চল- ৬০ শতাংশ।
মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০.১ শতাংশ মালয়, ২২.৬ শতাংশ চীনা, ৬.৭ শতাংশ ভারতীয়, ১১.৮ শতাংশ স্বদেশজাত এবং ৮.৮ শতাংশ অন্যান্য। চাকরির ক্ষেত্রে গোষ্ঠীগত সুবিধা পাওয়া যায় দেশটিতে। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কানাডায় বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়, সংখ্যালঘু, নারী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোটাব্যবস্থা থাকলেও অনুপাতের সংখ্যাটি নির্দিষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রে শুধু শতকরা ৮ ভাগ চাকরি প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

 

জাপানে বুরাকুমিন এবং কোরিয়ান সম্প্রদায়কে সরকারি চাকরিতে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ছাড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন কিংবা বেসরকারি কোনো পণ্য এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীসংখ্যা পাঁচ শতাধিক হলে বুরাকুমিন এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য ৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চীনের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগত ও আদিবাসী সম্প্রদায়। এই জনগোষ্ঠীর জন্য চীন সরকার স্বীকৃতভাবে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতার বিধান রেখেছে। চীনে নারীদের জন্য একসময় ২০ শতাংশ কোটা ছিল।
এত দেশে কোটা সুবিধা থাকার পরও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা কোটা ব্যবস্থা সংস্কার নয়, বাতিলের দাবি তুলছেন। এর মধ্যে সব গ্রেডের চাকরিতে কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে আনা তাদের প্রধান দাবি। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হচ্ছে ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।

 

সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২০১৮ সালে কোটা বাতিলের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। তারা সেই আন্দোলন যৌক্তিক ছিল বলে অভিমত জানিয়েছিলেন। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দেন। পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তা স্পষ্ট করে।
দীর্ঘদিন পর উচ্চ আদালত সরকারের সেই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে কোটা বহালের নির্দেশনা দিয়েছে। বিষয়টি এখনো বিচারাধীন। এর মধ্যেই আন্দোলনে নেমেছেন িক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

তবে এবার শিক্ষকরা চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে নেই। শিক্ষকরা অবশ্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে পৃথকভাবে আন্দোলন করছেন। তবে শিক্ষকরাও নজর রাখছেন এই আন্দোলনের প্রতি। তারা বলছেন, দেশের অনগ্রসর এবং সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা ব্যবস্থা থাকা দরকার। এক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ মেসবাহ কামাল বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার কারণে নারীরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে গেছে। আদিবাসী বা প্রতিবন্ধীরা চাকরির ক্ষেত্রে কোথাও নেই পাঁচ বছরে। কারণ তাদের সুবিধাটা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কাজেই এটাকে (কোটা) অবশ্যই পুনঃপ্রবর্তন করা দরকার।’
অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবারের বিষয়টি ভিন্ন। সরকার তো কোটা বাতিল করেছিল। এখন আদালত সেটা অবৈধ বলছেন। স্বাভাবিকভাবে সরকার এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলবে না। সেক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমেই সমাধানে আসতে হবে।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, কোটা ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতেই আছে। বাংলাদেশেও এটি সংরক্ষণ করা উচিত। বাংলাদেশে ১৯৭২ সাল থেকে কোটা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। যা ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকার বিশেষ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। এই আন্দোলনে তৃতীয় শক্তি কাজ করছে বলেও তিনি মনে করেন।
বর্তমানে সবমিলিয়ে সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ কোটার দখলে। সেক্ষেত্রে কত শতাংশ কোটা রাখা সহনীয়, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এ নিয়ে একটি নীতিমালা করাটাও জরুরি বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ও সাবেক আমলারা।
সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টনে স্বতন্ত্র নীতিমালা করার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে কোটা পদ্ধতি চালু আছে। বাংলাদেশেও আদিবাসী ও নারী কোটা রাখা যেতে পারে।

আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা দরকার। নীতিমালায় কতবার কোটা সুবিধা পাওয়া যাবে, সেই বিষয়ও রাখা উচিত। কেউ একবার কোটা সুবিধা পলে, তিনি আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নন। এ ছাড়া এ পর্যন্ত কতজন কোটা সুবিধার আওতায় এসেছেন, সে বিষয়েও গবেষণা দরকার।

ট্যাগস :

Write Your Comment

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

প্রয়োজন কোটা সংস্কার

আপলোড সময় : 03:45:55 pm, Thursday, 11 July 2024

এশিয়া ও ইউরোপের অনেক দেশেই এ পদ্ধতি বহাল

শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশেই সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা রয়েছে। ইউরোপ ও এশিয়ার বড় দেশগুলোতেও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় আনতে কোটার পাশাপাশি নানা ব্যবস্থা রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে বেসরকারি চাকরিতেও কোটা সংরক্ষণ করা হয়। কিন্তু উচ্চ আদালতের একটি রায় নিয়ে হঠাৎ করেই দেশজুড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে। অথচ বিষয়টি এখনো বিচারাধীন ও সমাধানযোগ্য।

 

আশঙ্কা করা হচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের আন্দোলনের পেছনে তরুণ শিক্ষার্থীদের আকাক্সক্ষাকে পুঁজি করে তৎপরতা চালাচ্ছে দেশবিরোধী শক্তি। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করতে পারেন। সেটি তাদের অধিকার। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের সুযোগ আছে। কিন্তু সেটি তারা না করে সড়কে নেমে এসেছেন। পথঘাট অচল করছেন। যেহেতু এটি আদালতের বিষয়। এরপরও সরকারের সঙ্গে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বৈঠক হতে পারে। যে ভুল বুঝ রয়েছে এতে তার অবসান হবে।

একই সঙ্গে শিক্ষাবিদরা কোটা পুরোপুরি বাতিল না করে সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা বলছেন, দেশের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য কোটার প্রয়োজন আছে। এক্ষেত্রে সরকারি চাকরিতে কোটা কতটা থাকবে তা সংস্কার করে নির্ধারণ করা যেতে পারে। সংস্কারের মাধ্যমেই কোটা সংকটের সমাধান আসতে পারে। এক্ষেত্রে কোটা বণ্টনে স্বতন্ত্র একটি নীতিমালা দরকার। তবে তার আগে উচ্চ আদালতে চলমান বিষয়টি নিষ্পত্তি হতে হবে।
গত পাঁচ বছর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে কোটা ছিল না। মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের আগে তিনটি বিসিএসে কোটা বহাল থাকলেও অধিকাংশ পদ পূরণ করা হয়েছে মেধাতালিকা থেকে। এর মধ্যে ৩৩তম বিসিএসে এই ব্যবস্থার মধ্যে ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রার্থী মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন। ৩৫তম বিসিএসে ৬৭ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ নিয়োগ পেয়েছেন মেধার ভিত্তিতে। এই পরীক্ষাগুলো হয়েছিল কোটা বহাল থাকার সময়।

 

এরপর বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় দেখা যায়, নারীদের অংশগ্রহণ কমছে। সমাজে পিছিয়ে পড়াদের চাকরির সুযোগও নিচের দিকে নামছে। যা পুরো সমাজ ব্যবস্থার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জুন এক রিট মামলার নিষ্পত্তির ফলে আবারও সরকারি চাকরিতে, বিশেষ করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধাসহ অন্য সব কোটা ফিরে এসেছে। আর তাতেই বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধের পর সারাদেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন আন্দোলনকারীরা। আইনজীবীরা বলছেন, কোটার জন্য একটি আইন পাস করা হলে মতপার্থক্য ও বিতর্ক দূর হবে। এ ধরনের একটি পরিপত্র বিভিন্ন সময় জটিলতার সৃষ্টি করে।
সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, কোটা সুবিধায় আবেদন করলেও তাদের লিখিত পরীক্ষায় পাস করতে হয়, এরপর তারা চাকরি পান। সুতরাং তারা মেধাবী ননÑ এ রকম বলার কোনো সুযোগ নেই। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, মেধার মাপকাঠিতে হয়তো অনেকে পয়েন্ট জিরো জিরো ওয়ান পারসেন্ট কম নম্বর পেয়েছেন, কোটা না থাকার কারণে তিনি পিছিয়ে গেছেন। এটা সব দেশেই হয়ে থাকে। আর যে কারণেই কোটার বিষয়ে এক ধরনের নেতিবাচক মনোভাব কাজ করে চাকরিপ্রার্থীদের। প্রায় সব দেশের চাকরিতে সাধারণত অনগ্রসর জনগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা রাখা হয়। অনেক দেশে জেন্ডার সমতা নিশ্চিতে নারী কোটা রয়েছে।
বাংলাদেশে প্রথম থেকে নবম গ্রেড প্রথম শ্রেণি, দশম থেকে ১২তম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণি, ১৩ থেকে ১৬তম গ্রেড তৃতীয় শ্রেণি এবং ১৭ থেকে ২০তম গ্রেড হচ্ছে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান এবং তাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী কোটা ১ শতাংশ, অনগ্রসর জেলা কোটা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ আছে ১ শতাংশ কোটা রয়েছে।
বিভিন্ন দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভারতে জনসংখ্যার অনুপাতে কোটা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের বৈষম্য রোধ করতে ১৯৮৯ সালে ভারতের আইনসভা কর্তৃক অনুমোদিত ‘দলিত, সংখ্যালঘু এবং উপজাতি বৈষম্য দূরীকরণ আইন’ নামে একটি সাংবিধানিক আইন রয়েছে। নেপালে সরকারি চাকরিতে বর্ণ, জাত এবং লিঙ্গের ওপর ভিত্তি করে কোটাব্যবস্থা সংরক্ষণ করা হয়েছে। দেশটিতে সাধারণ কোটা ৫৫ শতাংশ এবং সংরক্ষিত কোটা ৪৫ শতাংশ। ১৯৯৩ সালে নেপালের আইনসভা প্রণীত ‘সরকারি চাকরি আইন’ নামের বিশেষ একটি আইনের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা সুরক্ষিত।
পাকিস্তানে সরকারি চাকরির পাশাপাশি পাকিস্তানের শিক্ষা ব্যবস্থায় সরকারি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশটির বৈচিত্র্যময় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য জনসংখ্যার অনুপাতে কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রশাসনিক চাকরি ব্যবস্থায় মাত্র ৭.৫ শতাংশ সরাসরি মেধা, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রদান করা হয়। বাকি অনুপাতটি প্রাদেশিক বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ওই দেশে সাধারণ কোটা ৭.৫ শতাংশ, পাঞ্জাব- ৫০ শতাংশ, সিন্ধ- ১৯ শতাংশ খাইবার পাখতুনখোয়া- ১১.৫ শতাংশ, বালুচিস্থান- ৬ শতাংশ সিন্ধ কোটা আবার দুটি বিশেষ ভাগে বিভক্ত- শহরাঞ্চল- ৪০ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চল- ৬০ শতাংশ।
মালয়েশিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০.১ শতাংশ মালয়, ২২.৬ শতাংশ চীনা, ৬.৭ শতাংশ ভারতীয়, ১১.৮ শতাংশ স্বদেশজাত এবং ৮.৮ শতাংশ অন্যান্য। চাকরির ক্ষেত্রে গোষ্ঠীগত সুবিধা পাওয়া যায় দেশটিতে। উন্নত দেশগুলোর মধ্যে কানাডায় বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়, সংখ্যালঘু, নারী এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি চাকরিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ কোটাব্যবস্থা থাকলেও অনুপাতের সংখ্যাটি নির্দিষ্ট নয়। যুক্তরাষ্ট্রে শুধু শতকরা ৮ ভাগ চাকরি প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।

 

জাপানে বুরাকুমিন এবং কোরিয়ান সম্প্রদায়কে সরকারি চাকরিতে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ছাড়া ব্যক্তিমালিকানাধীন কিংবা বেসরকারি কোনো পণ্য এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীসংখ্যা পাঁচ শতাধিক হলে বুরাকুমিন এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জন্য ৫ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
চীনের মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশ হচ্ছে বিভিন্ন জাতিগত ও আদিবাসী সম্প্রদায়। এই জনগোষ্ঠীর জন্য চীন সরকার স্বীকৃতভাবে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম যোগ্যতার বিধান রেখেছে। চীনে নারীদের জন্য একসময় ২০ শতাংশ কোটা ছিল।
এত দেশে কোটা সুবিধা থাকার পরও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা কোটা ব্যবস্থা সংস্কার নয়, বাতিলের দাবি তুলছেন। এর মধ্যে সব গ্রেডের চাকরিতে কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে আনা তাদের প্রধান দাবি। কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো হচ্ছে ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে; পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সব গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে নিয়ে আসতে হবে।

 

সে ক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আরও রয়েছে সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২০১৮ সালে কোটা বাতিলের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলেন। তারা সেই আন্দোলন যৌক্তিক ছিল বলে অভিমত জানিয়েছিলেন। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বক্তব্য দেওয়ার সময় কোটা পদ্ধতি বাতিলের ঘোষণা দেন। পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে তা স্পষ্ট করে।
দীর্ঘদিন পর উচ্চ আদালত সরকারের সেই প্রজ্ঞাপন অবৈধ ঘোষণা করে কোটা বহালের নির্দেশনা দিয়েছে। বিষয়টি এখনো বিচারাধীন। এর মধ্যেই আন্দোলনে নেমেছেন িক্ষার্থী ও চাকরিপ্রার্থীরা।

তবে এবার শিক্ষকরা চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পাশে নেই। শিক্ষকরা অবশ্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে পৃথকভাবে আন্দোলন করছেন। তবে শিক্ষকরাও নজর রাখছেন এই আন্দোলনের প্রতি। তারা বলছেন, দেশের অনগ্রসর এবং সমাজে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা ব্যবস্থা থাকা দরকার। এক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার সংস্কার করা প্রয়োজন।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাবিদ মেসবাহ কামাল বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার কারণে নারীরা সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে গেছে। আদিবাসী বা প্রতিবন্ধীরা চাকরির ক্ষেত্রে কোথাও নেই পাঁচ বছরে। কারণ তাদের সুবিধাটা প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কাজেই এটাকে (কোটা) অবশ্যই পুনঃপ্রবর্তন করা দরকার।’
অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘গতবারের চেয়ে এবারের বিষয়টি ভিন্ন। সরকার তো কোটা বাতিল করেছিল। এখন আদালত সেটা অবৈধ বলছেন। স্বাভাবিকভাবে সরকার এ নিয়ে আগ বাড়িয়ে কিছু বলবে না। সেক্ষেত্রে আদালতের মাধ্যমেই সমাধানে আসতে হবে।’
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক জনকণ্ঠকে বলেন, কোটা ব্যবস্থা সারা পৃথিবীতেই আছে। বাংলাদেশেও এটি সংরক্ষণ করা উচিত। বাংলাদেশে ১৯৭২ সাল থেকে কোটা ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। যা ২০১৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, এ বিষয়ে সরকার বিশেষ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। এই আন্দোলনে তৃতীয় শক্তি কাজ করছে বলেও তিনি মনে করেন।
বর্তমানে সবমিলিয়ে সরকারি চাকরির ৫৬ শতাংশ কোটার দখলে। সেক্ষেত্রে কত শতাংশ কোটা রাখা সহনীয়, তা নিয়েও বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। এ নিয়ে একটি নীতিমালা করাটাও জরুরি বলে মনে করেন শিক্ষাবিদ ও সাবেক আমলারা।
সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব আবু আলম মোহাম্মদ শহীদ খান নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বণ্টনে স্বতন্ত্র নীতিমালা করার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশে কোটা পদ্ধতি চালু আছে। বাংলাদেশেও আদিবাসী ও নারী কোটা রাখা যেতে পারে।

আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে একটি নীতিমালা করা দরকার। নীতিমালায় কতবার কোটা সুবিধা পাওয়া যাবে, সেই বিষয়ও রাখা উচিত। কেউ একবার কোটা সুবিধা পলে, তিনি আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী নন। এ ছাড়া এ পর্যন্ত কতজন কোটা সুবিধার আওতায় এসেছেন, সে বিষয়েও গবেষণা দরকার।