নাটোরের সিংড়ায় পুলিশের অভিযানে মটরসাইকেল উদ্ধার ও দুইজন চোরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ মে) তারিখে পুলিশ সুপার নাটোরের নির্দেশক্রমে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্ত্বে একটি চৌকস টিম টানা ১৬ ঘন্টার অভিযানে দুপুর আনুমানিক দুইটার সময় জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ এলাকা থেকে আসামী রফিকুল ও ছালাম সহ মোটরসাইকেল টি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল ডিএসবি নাটোর এর সিংড়া থানা এলাকায় কর্মরত ওয়াচার কাং/ ৫৪৬ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এর ব্যবহৃত T.V.S Apache RTR লাল রংয়ের ১৬০ সিসি মোটরসাইকেল যাহার ইঞ্জিন নং- OE4HZ2537503 চেসিস নং- MD634KE47J2H36802, মুল্য ১,৬২,০০০/- (এক লক্ষ বাষট্টি হাজার)। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন ১। মোঃ আব্দুস সালাম(৩০), পিতা-মোঃ আবু তালেব আকন্দ, সাং-শাহানগর (পশ্চিম পাড়া, থানা- শেরপুর, জেলা-বগুড়া) ২। মোঃ রফিকুল ইসলাম(৩৮), পিতা-মোঃ মজিবর রহমান, সাং-মহকাতের পাড়া, থানা সোনাতলা, জেলা-বগুড়া।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত (১০ মার্চ) তারিখ সকাল অনুমান সাড়ে নয়টার সময় ডিএসবি নাটোর এর সিংড়া থানা এলাকায় কর্মরত ওয়াচার কং/৫৪৬ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, এর ব্যবহৃত টি.ভি.এস এপাসি আরটি আর (T.V.S Apache RTR) লাল রংয়ের ১৬০ সিসি গাড়িটি তথ্য সংগ্রহের কাজ শেষে সিংড়া থানার উত্তর পাশের প্রাচীর সংলগ্ন সিংড়া পৌর এলাকা চকগোপাল মৌজার ভাড়া বাসার গেটের সামনে বেলা এগারোটার সময় তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি হ্যান্ডেল লক করে রেখে বাসার মধ্যে প্রবেশ করেন। প্রয়োজনীয় কাজ শেষে বেলা এগারোটা পয়ত্রিশ মিনিটের সময় বাসা থেকে বের হয়ে দেখেন গেটের সামনে রাখা তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি নাই। মোটরসাইকেল দেখতে না পেয়ে সিংড়া থানা পুলিশের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করতে থাকে। কিন্তু কোথাও মোটর সাইকেলটির সন্ধান না পেয়ে রাস্তার পাশে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায় তার ব্যবহৃত মোটর সাইকেলটি অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি বেলা এগারোটা ছাব্বিশ মিনিটের সময় সিংড়া থানার পূর্ব পাশের রাস্তা দিয়ে চালাইয়া লইয়া যাইতেছে। উক্ত মোটর সাইকেল টি চুরির প্রেক্ষিতে ওয়াচার কং/৫৪৬ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম সিংড়া থানায় লিখিত এজাহার দায়ের করিলে অফিসার ইনচার্জ সিংড়া থানা নাটোর মহোদয় সিংড়া থানার মামলা নং-১৮, তাং-(১২ মার্চ) ধারা-৩৭৯ পেনাল কোড রুজু করেন। মামলার প্রেক্ষিতে সিংড়া থানা একটি চৌকস টিম প্রথমে আসামী রফিকুল ও ছালামকে গ্রেফতার করে পুলিশ রিমান্ডে আনিলে জিজ্ঞাসাবাদে আসামির দেওয়া তথ্য মতে অফিসার ইনচার্জ সিংড়া থানা নাটোর এর নেতৃত্তে সিংড়া থানা এবং জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) নাটোর এর সম্মিলিত একটি চৌকস টিম আসামী রফিকুল ও ছালামকে সহ অভিযানে বের হয়। প্রথমে তারা গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানাধীন নলছড়া ব্রক্ষ্মপুত্র নৌকা ঘাটে (১৬ মে) তারিখ রাত্রি দুই ঘটিকায় গিয়ে আসামী রফিকুলের পিতার সহায়তায় নৌকা ভাড়া করে আসামী রফিকুলের দেওয়া ভাস্য মতে রাত্রিতে তিন ঘন্টা নৌকায় যাত্রা শেষে অভিযান টিম জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানাধী চর হলকা হাবড়াবাড়ী চরে পৌছায়। সেখানে রফিকুলের চাচাতো ভাই জনৈক সুজনের বাড়ীতে গিয়ে আসামী রফিকুলের চাচাতো ভাই সুজনকে মোটর সাইকেল টি ক্রয় করা ব্যাক্তির বর্ননা দেয়। পরবর্তীতে তাহার নাম জানা যায় মোস্তফা পিতা সাইজুদ্দি সাং- চর হলকা হাবড়াবাড়ী থানা-দেওয়ানগঞ্জ, জেলা-জামালপুর। তখন অভিযানিক টিম সুজনকে সাথে নিয়ে একই চরের দক্ষিন পাড়ায় মোস্তফার বাড়ীতে গেলে মোস্তফা পিতা জানায় মোস্তফা ঢাকায় থাকে। তাহারা গাড়ী ক্রয়ের বিষয়ে কিছু জানেনা। এমতাবস্থায় অভিযানিক টিম কৌশল করে মোস্তফার পিতা সাইজুদ্দিকে সঙ্গে নিয়ে দেওয়ানগঞ্জ থানায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে এবং এলাকা মেম্বার আশরাফুল সহ গন্যমান্য ব্যাক্তিদের গাড়ী উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। যেন প্রতিনিধি সহ এলাকার লোকজন (১৭ মে) বিকাল চারটার সময় বিভিন্ন যায়গায খোজাখুজি করে জানায় যে তারা গাড়ীটির সন্ধান পেয়েছে । পরবর্তীতে তারা একটি ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে মোটরসাইকেল টি নিয়ে জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ থানায় এসে অভিযানিক টিমের নিকট হস্তান্তর করেন। পরবর্তীতে অভিযানিক টিম দেওয়ানগঞ্জ থানার ফেরিঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা যোগে তিন ঘন্টার যাত্রা শেষে গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা থানার ফেরিঘাটে উপস্থিত হয়। পরবর্তীতে অভিযান টিম সেখান থেকে আসামী রফিকুল ও ছালাম সহ উদ্ধারকৃত মোটরসাইকেল টি নিয়ে সিংড়া থানার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে সিংড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম বলেন,আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।