Dhaka 10:41 pm, Saturday, 21 December 2024

দুই মন্ত্রণালয়কে সংসদীয় কমিটির কঠোর বার্তা

স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে কঠোর বার্তা দিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সম্প্রতি এক বৈঠকে এ দুই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান পদে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। অবিলম্বে শূন্য পদ পূরণ করে এ সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেন সংসদ সদস্যরা। পাশাপাশি নিজের কর্মস্থলের বাইরে ডেপুটেশনে (প্রেষণ) থাকা ডাক্তার ও নার্সদের দ্রুত কর্মস্থলে ফেরানোর পরামর্শ দেন তারা। একই বৈঠকে এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর করুণ অবস্থা তুলে ধরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তৃতীয় বৈঠক গত ৩ জুলাই (বুধবার) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নূর-ই-আলম চৌধুরী, ড. বীরেন শিকদার, মেহের আফরোজ, শরীফ আহমেদ, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, শাহদাব আকবর, মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ এবং শাহ সারোয়ার কবীর অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) ড. মো. জিয়াউদ্দীন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকের এজেন্ডা অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। সেই আলোচনার সূত্র ধরে দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোর বর্তমান অবস্থা উঠে আসে। এ সময় কমিটির সদস্যরা সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনেশিয়ানসহ জনবল সংকট নিয়ে কথা বলেন। তাদের কেউ কেউ বলেন, এসব হাসপাতালে গেলে ডাক্তার পাওয়া যায় না। আবার ডাক্তার পাওয়া গেলে টেকনেশিয়ানের অভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায় না। আর নার্স সংকটের কারণে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীরা ঠিকমতো সেবা পায় না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় রোগীরা। গ্রামের মানুষ সেবা না পেয়ে চিকিৎসার জন্য শহরে ছুটে আসেন। এভাবে চলতে পারে না।

 

এ সময় কোনো কোনো সংসদ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক ডাক্তার ও নার্সের পোস্টিং উপজেলা পর্যায়ে হলেও নানা অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে তারা শহরে ডেপুটেশনে (প্রেষণে) বসে থাকেন। এতে গ্রামের মানুষ চিকিৎসাসেবা েকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেজন্য এসব ডাক্তার ও নার্সের ডেপুটেশন বাতিল করে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরানো উচিত।

সরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রমে কমিটি সদস্যদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জবাবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান জনবল সংকটের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় আট হাজার ডাক্তার ও ছয় হাজার নার্সের পদ শূন্য রয়েছে। সেজন্য জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

 

সচিবের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে শূন্য পদ পূরণ করে সংসদীয় কমিটিতে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়।

সূত্র জানায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর সারা দেশের এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের যুগোপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। প্রশিক্ষণার্থীদের চাকরি ও নিজ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সমাজে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে দেশের ছয় বিভাগে ছয়টি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্রে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে ১৫-২৫ বছর বয়সী এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের যুগোপযোগী কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়ার কথা। যাতে তারা সমাজ ও পরিবারের বোঝা ও করুণার পাত্র না হয়ে নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

কিন্তু সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী। তিনি তার নিজ এলাকা মাদারীপুরের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতিগুলো কেনা হলেও ব্যবহার তো দূরের কথা আজ পর্যন্ত সেগুলো খোলাই হয়নি। মনে হয় দেশের সবগুলো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চিত্র এমনই।’

এ সময় সমাজকল্যাণ সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘সমাজসেবায় অন্তত ২ হাজার ৮০০ পদ শূন্য রয়েছে।’

এ সময় কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি চুপ থাকেন। আমলাতন্ত্রে চুপ থাকা খুব ভালো। শুধু কাজ করে যান।’

পরে বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শূন্যপদ পূরণের ব্যবস্থা করাসহ বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের ডেপুটেশন বন্ধ করার সুপারিশ করে কমিটি। কমিটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ যে ভূমি আছে সেখানে সকল প্রে, অফিস ভবন, আবাসিক ভবন এবং অন্যান্য সব ধরনের স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করে যে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে, তার যথাযথ বাস্তবায়ন, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে বিনামূল্যে যে মুদ্রণ সেবা প্রদান করা হয় তার আর্থিক মূল্য নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অবহিত করার সুপারিশ করে।

এ ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যেসব প্রকল্প থেকে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে গাড়ি ফেরত দেওয়া হয়নি তাদের পত্র দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি দ্রুত গাড়ি ফেরত দেওয়ারও সুপারিশ করে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

দুই মন্ত্রণালয়কে সংসদীয় কমিটির কঠোর বার্তা

আপলোড সময় : 08:29:42 pm, Tuesday, 9 July 2024

স্বাস্থ্য ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে কঠোর বার্তা দিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সম্প্রতি এক বৈঠকে এ দুই মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন কমিটির সদস্যরা। উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার, নার্স ও টেকনিশিয়ান পদে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। অবিলম্বে শূন্য পদ পূরণ করে এ সমস্যা সমাধানের তাগিদ দেন সংসদ সদস্যরা। পাশাপাশি নিজের কর্মস্থলের বাইরে ডেপুটেশনে (প্রেষণ) থাকা ডাক্তার ও নার্সদের দ্রুত কর্মস্থলে ফেরানোর পরামর্শ দেন তারা। একই বৈঠকে এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোর করুণ অবস্থা তুলে ধরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির তৃতীয় বৈঠক গত ৩ জুলাই (বুধবার) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাদিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সদস্য ও জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নূর-ই-আলম চৌধুরী, ড. বীরেন শিকদার, মেহের আফরোজ, শরীফ আহমেদ, মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, শাহদাব আকবর, মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ এবং শাহ সারোয়ার কবীর অংশগ্রহণ করেন। এ ছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) ড. মো. জিয়াউদ্দীন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র জানায়, বৈঠকের এজেন্ডা অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর ও সরকারি কর্মচারী হাসপাতালের কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়। সেই আলোচনার সূত্র ধরে দেশে সরকারি হাসপাতালগুলোর বর্তমান অবস্থা উঠে আসে। এ সময় কমিটির সদস্যরা সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক, নার্স ও টেকনেশিয়ানসহ জনবল সংকট নিয়ে কথা বলেন। তাদের কেউ কেউ বলেন, এসব হাসপাতালে গেলে ডাক্তার পাওয়া যায় না। আবার ডাক্তার পাওয়া গেলে টেকনেশিয়ানের অভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায় না। আর নার্স সংকটের কারণে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি রোগীরা ঠিকমতো সেবা পায় না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন স্থানীয় রোগীরা। গ্রামের মানুষ সেবা না পেয়ে চিকিৎসার জন্য শহরে ছুটে আসেন। এভাবে চলতে পারে না।

 

এ সময় কোনো কোনো সংসদ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনেক ডাক্তার ও নার্সের পোস্টিং উপজেলা পর্যায়ে হলেও নানা অজুহাতে দীর্ঘদিন ধরে তারা শহরে ডেপুটেশনে (প্রেষণে) বসে থাকেন। এতে গ্রামের মানুষ চিকিৎসাসেবা েকে বঞ্চিত হচ্ছে। সেজন্য এসব ডাক্তার ও নার্সের ডেপুটেশন বাতিল করে তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরানো উচিত।

সরকারি হাসপাতালগুলোর কার্যক্রমে কমিটি সদস্যদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার জবাবে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান জনবল সংকটের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, বর্তমানে সারা দেশে প্রায় আট হাজার ডাক্তার ও ছয় হাজার নার্সের পদ শূন্য রয়েছে। সেজন্য জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।

 

সচিবের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে শূন্য পদ পূরণ করে সংসদীয় কমিটিতে প্রতিবেদন পেশ করতে বলা হয়।

সূত্র জানায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর সারা দেশের এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের যুগোপযোগী বিভিন্ন ট্রেডে কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে। প্রশিক্ষণার্থীদের চাকরি ও নিজ কর্মসংস্থানের মাধ্যমে সমাজে পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে দেশের ছয় বিভাগে ছয়টি এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব কেন্দ্রে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে ১৫-২৫ বছর বয়সী এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের যুগোপযোগী কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়ার কথা। যাতে তারা সমাজ ও পরিবারের বোঝা ও করুণার পাত্র না হয়ে নিজেরাই স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি জাতীয় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদান রাখতে সক্ষম হয়।

কিন্তু সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন এতিম ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী। তিনি তার নিজ এলাকা মাদারীপুরের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতিগুলো কেনা হলেও ব্যবহার তো দূরের কথা আজ পর্যন্ত সেগুলো খোলাই হয়নি। মনে হয় দেশের সবগুলো প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের চিত্র এমনই।’

এ সময় সমাজকল্যাণ সচিব মো. খায়রুল আলম সেখ আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, ‘সমাজসেবায় অন্তত ২ হাজার ৮০০ পদ শূন্য রয়েছে।’

এ সময় কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক তাকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘আপনি চুপ থাকেন। আমলাতন্ত্রে চুপ থাকা খুব ভালো। শুধু কাজ করে যান।’

পরে বৈঠকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে শূন্যপদ পূরণের ব্যবস্থা করাসহ বিশেষ প্রয়োজন ব্যতীত স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সব ধরনের ডেপুটেশন বন্ধ করার সুপারিশ করে কমিটি। কমিটি মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের অভ্যন্তরীণ যে ভূমি আছে সেখানে সকল প্রে, অফিস ভবন, আবাসিক ভবন এবং অন্যান্য সব ধরনের স্থাপনা অন্তর্ভুক্ত করে যে মাস্টার প্ল্যান করা হয়েছে, তার যথাযথ বাস্তবায়ন, মুদ্রণ ও প্রকাশনা অধিদপ্তর থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে বিনামূল্যে যে মুদ্রণ সেবা প্রদান করা হয় তার আর্থিক মূল্য নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে অবহিত করার সুপারিশ করে।

এ ছাড়া উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হওয়ার পর যেসব প্রকল্প থেকে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে গাড়ি ফেরত দেওয়া হয়নি তাদের পত্র দিয়ে সতর্ক করার পাশাপাশি দ্রুত গাড়ি ফেরত দেওয়ারও সুপারিশ করে।