দিল্লির কোনো গোলামকে আর বাংলাদেশের জনগণের ওপর রাজত্ব করতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
অন্য কোনো দেশ থেকে প্রেসক্রিপশন দেওয়া যাবে না। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছেন ভালো কথা, তবে আশ্রয় দিয়ে তার কথামতো বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অস্থিতিশীল কিছু করতে চাইলে আখেরে ফলাফল ভালো হবে না। বাংলাদেশ সিকিম বা ভুটান নয়। পার্শ্ববর্তী দেশের পলিসি মেকার, নীতিনির্ধারক যারা তাদেরকে বলে রাখতে চাই- বাংলাদেশ ১৮ কোটি মানুষের দেশ।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে রাজশাহী মহানগর ও জেলায় শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন,ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ভারতকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ স্থিতিশীল হবে না। আপনারা কীসের আলামত দিচ্ছেন এগুলো? বাংলাদেশিরা সাহসী ও বীরের জাতি। কীভাবে দেশ পরিচালিত হবে, কাকে নির্বাচিত করতে হবে জনগণ সেটা জানে। অন্য কোনো দেশ থেকে প্রেসক্রিপশন দেওয়া যাবে না।
তিনি আরও বলেন,অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সব রাজনৈতিক দল সমর্থন দিয়েছে। সবাই সহযোগিতা করতে চায়। কিন্তু প্রশাসনের মধ্যে যদি এমন লোক থাকে যারা শেখ হাসিনার ১৫-১৬ বছর ক্ষমতা থাকাকালীন ফ্যাসিবাদ লুণ্ঠনে সহায়তা করেছে, তারা একটি বিপ্লবের সরকারকে কখনোই সমর্থন দিতে পারে না। তারা যদি ক্যাবিনেট সেক্রেটারি হয়, সচিব হয়, গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে বসে তাহলে নির্বাচন কমিশন,বিচার বিভাগসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে এই সংস্কার বাস্তবায়ন হবে না। এরা সংস্কার ব্যর্থ করে দেবে।
রিজভী বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাওয়া কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আওয়ামী লীগ সরকারের অনিয়ম ও দর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বলেন,শেখ হাসিনা সরকার ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি ঋণ নিয়েছেন,পাচার করেছে ১৭ লাখ ৩৭ হাজার কোটি টাকা। ঘনিষ্ঠদের কালো টাকা আয়ের সুযোগ করে দিয়েছিলেন,যাতে বিপদে পড়লে তিনি সেই টাকার ভাগ নিতে পারেন।
রাজশাহী নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন,ভয়ংকর দোজখ থেকে পরিত্রাণ পেয়েছি। আগে রাজশাহীতে এসে প্রাণ নিয়ে ফিরে যেতে পারব কি না,তা নিয়ে সংশয় থাকত। বিএনপির সাংগঠনিক সংগঠনের বাইরে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। এই সংগঠনের মাধ্যমে বিএনপির নির্যাতিত, নিহত পরিবারকে তারেক রহমান ১৫ বছর ধরে দেখে আসছেন।
প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করলেও তা উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন,কেন উদ্ধার হবে না সেটি জানতে চাই। অস্ত্র উদ্ধার না হলে দেশ অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় হবে। শেখ হাসিনা কি ভারতে থেকে উপলব্ধি করছেন জুলুম করে,নির্যাতন করে,জনগণের ওপর দমনপীড়ন চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত,‘আমরা বিএনপি পরিবার’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা,সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা,সদস্যসচিব মামুনুর রশীদ মামুনসহ কেন্দ্রীয় ও রাজশাহী মহানগর বিএনপি,অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সভা শেষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে রাজশাহীর নিহত তিন পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেন রুহুল কবির রিজভী।