Dhaka 2:03 pm, Monday, 23 December 2024

গ্রেফতার আতংকে বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় ছাত্রলীগ,আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর অজ্ঞাত মামলায় আসামী হওয়ার পর বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হচ্ছে শিগগির। এই অভিযানে নিয়মিত মামলার আসামিসহ ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও মাদক প্রতিরোধে গুরুত্ব দেয়া হবে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিক থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী এই অভিযান চলতে পারে বলে থানা পুলিশ সূত্র জানায়।
সূত্র বলছে, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক এই অভিযান চলবে। পুরনো মামলার তালিকা দেখে দাগী অপরাধী এবং  ফৌজদারিসহ রাজনৈতিক মামলার আসামিদের গ্রেফতারের ও অভিযান পরিচালিত হবে।
সূত্রমতে, পুলিশের অভিযানে রাজনৈতিক মামলার আসামিসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলার সাথে সম্পৃক্তদেরও গ্রেফতার করা হবে। দুর্গাপূজার আগে থানা পুলিশ বিয়ানীবাজার থেকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা সায়ফুল আলম রুকন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাদের রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। এই ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক ঢুকে পড়ে।
উপজেলার বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। একাধিক মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন কর্মীরাও। তবে এসব নেতাকর্মীর মধ্যে কেউ-কেউ সামাজিক মাধ্যমে সরব রয়েছেন। তৃণমূলের অনেকেই এত দিন নিজ-নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসব কর্মীও এখন মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা ঘরছাড়া। তারা নিজেদের গোপন রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের পরিবার-পরিজনরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজারে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতসহ আওয়ামী লীগের অন্তত হাজার খানেক নেতাকর্মী আসামি হয়েছেন। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের পুরনো সংঘর্ষ এবং মামলাও যাচাই করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে থানায় অন্তত ২ ডজন মামলা রয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও বেশির ভাগ মামলা চলমান। পুলিশি গ্রেফতার অভিযানে সেসব মামলাও সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলায় যাদের নাম আছে, তারা জেনে বুঝেই আত্মগোপনে গেছেন। সতর্ক ভাবে থাকছেন। আর পুলিশের অভিযানে আসামিও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

গ্রেফতার আতংকে বিয়ানীবাজার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা

আপলোড সময় : 05:56:33 pm, Tuesday, 15 October 2024
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় ছাত্রলীগ,আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর অজ্ঞাত মামলায় আসামী হওয়ার পর বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হচ্ছে শিগগির। এই অভিযানে নিয়মিত মামলার আসামিসহ ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও মাদক প্রতিরোধে গুরুত্ব দেয়া হবে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিক থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী এই অভিযান চলতে পারে বলে থানা পুলিশ সূত্র জানায়।
সূত্র বলছে, পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক এই অভিযান চলবে। পুরনো মামলার তালিকা দেখে দাগী অপরাধী এবং  ফৌজদারিসহ রাজনৈতিক মামলার আসামিদের গ্রেফতারের ও অভিযান পরিচালিত হবে।
সূত্রমতে, পুলিশের অভিযানে রাজনৈতিক মামলার আসামিসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলার সাথে সম্পৃক্তদেরও গ্রেফতার করা হবে। দুর্গাপূজার আগে থানা পুলিশ বিয়ানীবাজার থেকে আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা সায়ফুল আলম রুকন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাদের রিমান্ড ও জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন। এই ঘটনার পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক ঢুকে পড়ে।
উপজেলার বেশির ভাগ আওয়ামী লীগ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। একাধিক মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেফতার আতঙ্কে আছেন কর্মীরাও। তবে এসব নেতাকর্মীর মধ্যে কেউ-কেউ সামাজিক মাধ্যমে সরব রয়েছেন। তৃণমূলের অনেকেই এত দিন নিজ-নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসব কর্মীও এখন মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেফতার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা ঘরছাড়া। তারা নিজেদের গোপন রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের পরিবার-পরিজনরাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজারে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতসহ আওয়ামী লীগের অন্তত হাজার খানেক নেতাকর্মী আসামি হয়েছেন। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের পুরনো সংঘর্ষ এবং মামলাও যাচাই করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে থানায় অন্তত ২ ডজন মামলা রয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও বেশির ভাগ মামলা চলমান। পুলিশি গ্রেফতার অভিযানে সেসব মামলাও সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলায় যাদের নাম আছে, তারা জেনে বুঝেই আত্মগোপনে গেছেন। সতর্ক ভাবে থাকছেন। আর পুলিশের অভিযানে আসামিও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।