অনুমোদনহীন ভবনের গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের নির্দেশ দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বুধবার চট্টগ্রামে ব্রিফিংয়ে তিনি এ নির্দেশ দেন। এদিন কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রিপেইড মিটার প্রকল্পের ডেটা সেন্টার উদ্বোধন করেন তিনি।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বেইলি রোডের মতো দুর্ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না থাকলে গ্যাস সংযোগ দেওয়া যাবে না। আগে সংযোগ দেওয়া হলেও যদি নিয়মবহির্ভূত কাজে ব্যবহার হয়, তবে সেই সংযোগ কাটা হবে। আবাসিকের অনুমোদন নিয়ে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালালে, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ না হলে, নকশার ব্যত্যয় হলে সেই ভবনের গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হবে।’ এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, অনুমোদিত শিল্প এলাকা ছাড়া কোথাও গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে না।
তিন বছরের মধ্যে চট্টগ্রামের সব গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব মিটার লাগানো হচ্ছে, সেগুলো জাপানের। জাইকার সহযোগিতায় এই কার্যক্রম চলছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গ্যাস কোম্পানিগুলোর বেশি বকেয়া বিদ্যুৎকেন্দ্র ও সার কারখানায়। এ দুই খাতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বকেয়া জমেছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস চাইলে বকেয়া পরিশোধ করতে হবে। সার কারখানা বকেয়া না দিলে তাদের গ্যাস দেওয়া হবে না।’ এ সময় পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এর আগে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের নিজস্ব ভবন নির্মাণের স্থান এবং পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা অয়েল কোম্পানির স্থাপনা পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন তেল পরিবহনের ব্যবস্থা হচ্ছে। জ্বালানি তেল খালাস, সংরক্ষণ ও পরিবহন অটোমেশনের আওতায় আসবে।’ তিনি জানান, তেলের দাম নির্ধারণ এবং পরিচালনা পেপারলেস ও হিউম্যানলেস হবে। সিঙ্গেল মুরিং (এসপিএম) লাইন প্রকল্পে পরীক্ষামূলক তেল পরিবহন চলছে। এতে বছরে প্রায় হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। মহেশখালীর গভীর সমুদ্রের মাদার ভেসেল থেকে পাইপলাইনে পতেঙ্গা ডিপোতে তেল চলে আসবে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ডিপোগুলো অটোমেশন হচ্ছে। পতেঙ্গা থেকে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল পর্যন্ত পাইপলাইন হচ্ছে। ট্যাঙ্কলরিগুলোও আধুনিকায়ন করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘আজ বৃহস্পতিবার দেশে জ্বালানি তেলের দামে বিরাট পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। এর পর থেকে মাসের প্রথম সপ্তাহে দাম নির্ধারণ হবে। স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা চালু করতে পারলে সেখানেও অর্থ সাশ্রয় হবে।’ বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদসহ কোম্পানিগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।