Dhaka 12:48 pm, Sunday, 22 December 2024

অধ্যক্ষকে ঘুষ না দেওয়ায় চার শিক্ষকের বেতন বন্ধ

অধ্যক্ষের চাহিদা মতো ঘুষের টাকা না দেওয়ায় বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গুরুদাসপুরের বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের চার শিক্ষক। ভুক্তভোগি শিক্ষকরা প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তাতেও টনক নড়ছে না অধ্যক্ষ একরামুল হকের।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়- বাংলা বিভাগের মো. শাহীন আলম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মো. শামসুল আলম ও আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ, ভূগোল বিভাগের মো. আনোয়ার হোসেন ও জিএম কামরুজ্জামান এবং গণিত বিভাগের মো. আলী জাফর ও প্রশান্ত কুন্ডুকে সরকারিভাবে প্রভাষক পদে অস্থায়ী নিয়োগ দান করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- ৩৭.০০.০০০.০৮৫.১৫.০৭৭(এ).২১-১০৭১ নম্বর স্বারকের আলোকে ঐ শিক্ষকদের ‘সরকারি শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮’ এর বিধি-৫, বিধি-৬ এবং সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০০০ এর বিধি-৩ ও বিধি-৫ মোতাবেক বকেয়াসহ ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে বেতন ভাতা চালুর কথা।

শিক্ষা মন্ত্রীকে পাঠানো শিক্ষকদের ওই অভিযোগে দেখাযায়- ২০১২ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান এই ৭ শিক্ষক। কলেজটি সরকারি করণ হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু বাংলা, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে অধিভুক্তি জটিলতায় সেসময় তাদের বেতন ভাতা চালু হয়নি। জটিলতা নিরশন হওয়ার পর গত বছরের মার্চে গেজেট প্রকাশ করা হয়। গেজেট অনুযায়ী ২৩ সালের ২৫ জুলাই সরকারিভাবে আবারো যোগদান করেন তারা। কলেজ সরকারি করণের তারিখ হতে বেতন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও কলেজের পক্ষ থেকে বেতন ভাতার চাহিদা পাঠানো হয়নি।

ভুক্তভোগি শিক্ষক মো. শাহীন আলম ও মো. শামসুল আলম বলেন- গেজেটের পর বেতন ভাতার চাহিদার জন্য তারা অধ্যক্ষ একরামুল হককে বার বার অনুরোধ করেন। কিন্তু অধ্যক্ষ পাত্তা দেননি। উপরন্ত কলেজের বাংলা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুর রশিদের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ দেওয়ায় একই সাথে নিয়োগ পাওয়া গণিত বিষয়ের শিক্ষক প্রশান্ত কুন্ডুর বেতন ভাতা চালু হয়েছে। অধ্যক্ষের সাথে লিয়াজু করায় শিক্ষক জিএম কামরুজ্জামান ও আলী জাফরের বেতন প্রক্রিয়াও চালুর পথে। তবে শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন- অধ্যক্ষের কথা মতোই তিনি ভুক্তভোগি শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।

ভুক্তভোগি আরো দুই শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ ও আনোয়ার হোসেন বলেন- ১ লাখ টাকা ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের বেতন ভাতার চাহিদা পাঠাতে গড়িমশি শুরু করেন অধ্যক্ষ একরামুল হক। বাধ্য হয়ে তারা প্রতিকার চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রী, মাউশিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে শিক্ষকদের বার বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিচ্ছেন অধ্যক্ষ।

তারা আরোও বলেন- দীর্ঘদিন ধরে বিনাবেতনে চাকুরি করছেন তারা। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছেন। একারণে অধ্যক্ষকে ঘুষের টাকা দিতে না পেরে ফাঁকা চেক দিয়েও নিস্তার পাননি।

অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ ড. একরামুল হক বলেন- চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন ভাতা চালু হয়ে যাবে। তাছাড়া শিক্ষকদের বেতন ভাতার চাহিদা পাঠাতে তিনি কোনো ঘুষ দাবি করেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

অধ্যক্ষকে ঘুষ না দেওয়ায় চার শিক্ষকের বেতন বন্ধ

আপলোড সময় : 08:34:30 pm, Monday, 25 March 2024

অধ্যক্ষের চাহিদা মতো ঘুষের টাকা না দেওয়ায় বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন গুরুদাসপুরের বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের চার শিক্ষক। ভুক্তভোগি শিক্ষকরা প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। তাতেও টনক নড়ছে না অধ্যক্ষ একরামুল হকের।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়- বাংলা বিভাগের মো. শাহীন আলম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের মো. শামসুল আলম ও আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ, ভূগোল বিভাগের মো. আনোয়ার হোসেন ও জিএম কামরুজ্জামান এবং গণিত বিভাগের মো. আলী জাফর ও প্রশান্ত কুন্ডুকে সরকারিভাবে প্রভাষক পদে অস্থায়ী নিয়োগ দান করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- ৩৭.০০.০০০.০৮৫.১৫.০৭৭(এ).২১-১০৭১ নম্বর স্বারকের আলোকে ঐ শিক্ষকদের ‘সরকারি শিক্ষক-কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০১৮’ এর বিধি-৫, বিধি-৬ এবং সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা ২০০০ এর বিধি-৩ ও বিধি-৫ মোতাবেক বকেয়াসহ ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল থেকে বেতন ভাতা চালুর কথা।

শিক্ষা মন্ত্রীকে পাঠানো শিক্ষকদের ওই অভিযোগে দেখাযায়- ২০১২ সালে প্রভাষক পদে নিয়োগ পান এই ৭ শিক্ষক। কলেজটি সরকারি করণ হয় ২০১৬ সালে। কিন্তু বাংলা, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ে অধিভুক্তি জটিলতায় সেসময় তাদের বেতন ভাতা চালু হয়নি। জটিলতা নিরশন হওয়ার পর গত বছরের মার্চে গেজেট প্রকাশ করা হয়। গেজেট অনুযায়ী ২৩ সালের ২৫ জুলাই সরকারিভাবে আবারো যোগদান করেন তারা। কলেজ সরকারি করণের তারিখ হতে বেতন ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও কলেজের পক্ষ থেকে বেতন ভাতার চাহিদা পাঠানো হয়নি।

ভুক্তভোগি শিক্ষক মো. শাহীন আলম ও মো. শামসুল আলম বলেন- গেজেটের পর বেতন ভাতার চাহিদার জন্য তারা অধ্যক্ষ একরামুল হককে বার বার অনুরোধ করেন। কিন্তু অধ্যক্ষ পাত্তা দেননি। উপরন্ত কলেজের বাংলা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুর রশিদের মাধ্যমে ১ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ দেওয়ায় একই সাথে নিয়োগ পাওয়া গণিত বিষয়ের শিক্ষক প্রশান্ত কুন্ডুর বেতন ভাতা চালু হয়েছে। অধ্যক্ষের সাথে লিয়াজু করায় শিক্ষক জিএম কামরুজ্জামান ও আলী জাফরের বেতন প্রক্রিয়াও চালুর পথে। তবে শিক্ষক আব্দুর রশিদ বলেন- অধ্যক্ষের কথা মতোই তিনি ভুক্তভোগি শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছেন।

ভুক্তভোগি আরো দুই শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মাওদুদ ও আনোয়ার হোসেন বলেন- ১ লাখ টাকা ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের বেতন ভাতার চাহিদা পাঠাতে গড়িমশি শুরু করেন অধ্যক্ষ একরামুল হক। বাধ্য হয়ে তারা প্রতিকার চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রী, মাউশিসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এখন অভিযোগ প্রত্যাহার করতে শিক্ষকদের বার বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিচ্ছেন অধ্যক্ষ।

তারা আরোও বলেন- দীর্ঘদিন ধরে বিনাবেতনে চাকুরি করছেন তারা। পরিবার নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পাড় করছেন। একারণে অধ্যক্ষকে ঘুষের টাকা দিতে না পেরে ফাঁকা চেক দিয়েও নিস্তার পাননি।

অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ ড. একরামুল হক বলেন- চাহিদা পত্র পাঠানো হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে শিক্ষকদের বেতন ভাতা চালু হয়ে যাবে। তাছাড়া শিক্ষকদের বেতন ভাতার চাহিদা পাঠাতে তিনি কোনো ঘুষ দাবি করেননি। তার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।