Dhaka 9:10 am, Sunday, 22 December 2024

সরকারের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকের আশা শিক্ষকদের

পেনশন স্কিম নিয়ে শিগগিরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বসার কথা থাকলেও পদ্মা সেতু সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় কাজে তিনি ব্যস্ত থাকায় তা হয়নি। বৈঠকের নতুন তারিখও শিক্ষকদের জানানো হয়নি। এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলবে বলে ফেডারেশন সূত্র জানিয়েছে।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন বাতিল করা, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরি করা– এই তিন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। আলোচনা করেই সমাধানে যেতে চান তারা। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। এমনকি সান্ধ্যালীন কোর্সগুলোও কর্মসূচির আওতায় থাকবে। তবে নতুন কোনো কর্মসূচিতে শিক্ষকরা যাবেন না বলে সূত্র জানায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠকের নতুন দিন-তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। আমরা আশা করছি, অতিদ্রুত তিনি আমাদের সঙ্গে বসবেন। আমাদের দাবি– প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অন্য কোনো স্কিম দেওয়া হবে কি হবে না– এটা ভিন্ন কথা। আমরা স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চাই। আমরা বারবার হোঁচট খাচ্ছি, বারবার আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা তো শিক্ষকদের সঙ্গে যায় না। আমরা প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চাই।’

 

দাবি আদায়ে নতুন কোনো কর্মসূচি আসছে কিনা– জানতে চাইলে এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত হবে– আমরা সেটাই করব।  তবে আমরা এমন কিছু করব না, যা অন্যরা করে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই প্রতিবাদ জানাব। যেটা আমরা এখন করছি।’ সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও কর্মসূচি থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত রোববার থেকে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা থাকে। তবে শুক্র-শনিবারেও ইভিনিং কোর্সের ক্লাস থাকে। সেগুলোও বন্ধ থাকবে। এই দুই দিন শুধু তাদের প্রেস ব্রিফিং হবে না।

বর্তমান ব্যবস্থায় একজন অধ্যাপক অবসরের পর মাসে ৪৫ হাজার ৭৯০ টাকা পেনশন পান। এ জন্য তাদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না। সর্বজনীন পেনশন নিয়ে গঠিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ব্যবস্থায় ৩০ বছর বয়সে যোগ দিয়ে ৬৫ বছর বয়সে অবসর নিলে মাসে মাসে বেতন থেকে টাকা কাটার পর পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা। কিন্তু আনুতোষিক বা গ্রাচ্যুইটি বাবদ এককালীন ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেনশন তহবিল বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা যোগ করলে বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন দাঁড়ায় মাসে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এতে সুবিধা কমার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক নেতারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, ১ জুলাই থেকে যারা যোগ দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

সরকারের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকের আশা শিক্ষকদের

আপলোড সময় : 01:49:53 pm, Sunday, 7 July 2024

পেনশন স্কিম নিয়ে শিগগিরই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠক হবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে ওবায়দুল কাদেরের বসার কথা থাকলেও পদ্মা সেতু সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় কাজে তিনি ব্যস্ত থাকায় তা হয়নি। বৈঠকের নতুন তারিখও শিক্ষকদের জানানো হয়নি। এদিকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলবে বলে ফেডারেশন সূত্র জানিয়েছে।

সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয়’ কর্মসূচির প্রজ্ঞাপন বাতিল করা, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরি করা– এই তিন দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষকরা। আলোচনা করেই সমাধানে যেতে চান তারা। একই সঙ্গে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। এমনকি সান্ধ্যালীন কোর্সগুলোও কর্মসূচির আওতায় থাকবে। তবে নতুন কোনো কর্মসূচিতে শিক্ষকরা যাবেন না বলে সূত্র জানায়।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সমকালকে বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠকের নতুন দিন-তারিখ এখনও নির্ধারণ হয়নি। আমরা আশা করছি, অতিদ্রুত তিনি আমাদের সঙ্গে বসবেন। আমাদের দাবি– প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অন্য কোনো স্কিম দেওয়া হবে কি হবে না– এটা ভিন্ন কথা। আমরা স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চাই। আমরা বারবার হোঁচট খাচ্ছি, বারবার আন্দোলন করতে হচ্ছে। এটা তো শিক্ষকদের সঙ্গে যায় না। আমরা প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল চাই।’

 

দাবি আদায়ে নতুন কোনো কর্মসূচি আসছে কিনা– জানতে চাইলে এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘এ বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে যে সিদ্ধান্ত হবে– আমরা সেটাই করব।  তবে আমরা এমন কিছু করব না, যা অন্যরা করে। আমরা নিয়মতান্ত্রিকভাবেই প্রতিবাদ জানাব। যেটা আমরা এখন করছি।’ সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও কর্মসূচি থাকবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত রোববার থেকে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা থাকে। তবে শুক্র-শনিবারেও ইভিনিং কোর্সের ক্লাস থাকে। সেগুলোও বন্ধ থাকবে। এই দুই দিন শুধু তাদের প্রেস ব্রিফিং হবে না।

বর্তমান ব্যবস্থায় একজন অধ্যাপক অবসরের পর মাসে ৪৫ হাজার ৭৯০ টাকা পেনশন পান। এ জন্য তাদের বেতন থেকে কোনো টাকা কাটা হয় না। সর্বজনীন পেনশন নিয়ে গঠিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, নতুন ব্যবস্থায় ৩০ বছর বয়সে যোগ দিয়ে ৬৫ বছর বয়সে অবসর নিলে মাসে মাসে বেতন থেকে টাকা কাটার পর পেনশন পাওয়া যাবে ১ লাখ ২৪ হাজার ৬৬০ টাকা। কিন্তু আনুতোষিক বা গ্রাচ্যুইটি বাবদ এককালীন ৮০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা নতুন ব্যবস্থায় পাওয়া যাবে না। এই টাকা পেনশন তহবিল বা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে যে মুনাফা পাওয়া যায়, তা যোগ করলে বর্তমান ব্যবস্থায় পেনশন দাঁড়ায় মাসে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকা। এতে সুবিধা কমার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষক নেতারা। কর্তৃপক্ষ বলছে, ১ জুলাই থেকে যারা যোগ দেবেন, তাদের ক্ষেত্রে নতুন ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে।