স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় (এলজিআরডি) মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় পুরো জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি, পথভ্রষ্ট হয়েছে। জাতি তার লক্ষ্য উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে। তারপর লড়াই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে বিক্ষিপ্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকে সংঘটিত করে জাতির পিতার আদর্শ ও স্বপ্ন পূরণের জন্য দায়িত্ব পালন শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বের কারণে এ জাতি আজ বিশ্ব দরবারে মর্যাদার সঙ্গে টিকে আছে।
বর্তমানে উন্নত বাংলাদেশের জন্য পথ নকশা করে কাজ করছে সরকার। আর এই লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য আমাদেরকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে মন্ত্রীর নিজ গ্রাম মনোহরগঞ্জ উপজেলার পোমগাঁওতে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে উপজেলা যুবলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। পরে একই স্থানে উপজেলা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তিনি।
মন্ত্রী বলেন, আগামীতে আমাদের চ্যালেঞ্জ উন্নত বাংলাদেশ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হলে আমাদেরকে গ্রামীণ অর্থনীতির অবস্থা উন্নতি করতে হবে। গ্রামের প্রতিটি মানুষের অর্থনীতি উন্নতি করতে হবে। যারা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেয় তাদের পর্যালোচনা করে দেখেন।
তারা কি ছিল, তারা পারলে আমরা পারব না কেন? সেজন্য আমাদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বড় হতে চাইলে হালাল পথে চেষ্টা করলে আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবেন, আপনি সফল হবেন। তবে দুর্নীতি করে, কাউকে ঠকিয়ে সফল হওয়া যায় না। দুর্নীতি করে, কাউকে ঠকিয়ে সম্পদ অর্জন করলেও সে সম্পদ রক্ষা করতে পারবেন না। সে সম্পদ থাকবে না।
সৎ ও যোগ্য লোকদের দলীয় নেতৃত্বে আনতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীতে কেউ অসৎ পন্থায় সফল হয়নি। বিলগেটস, জাকারবার্গসহ অনেকের সফলতার মুখরোচক অনেক কাহিনি শোনা যায়। কিন্তু তারা সৎভাবে তাদের কাজ করার কারণেই আজ সফল। মনোহরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ, যুবলীগ একটি উর্বর, মেধাবী ও শক্তিশালী সংগঠনে রূপ নেবে বলে মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। আর যারা ঘরের কথা বাইরে বলে তারা ছোট লোক। সামান্য বিষয়ে ফেসবুকে লাইভ করে, পোস্ট দিয়ে অন্যকে কটাক্ষ করা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, জনগণের প্রতি আপনাদের দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে আপনারা জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। তাই জনগণের দুঃখ-দুর্দশায় তাদের পাশে থাকতে হবে, তাদের জন্য কাজ করতে হবে। একজন কুলি, মজুর, রিকশাচালক, বিধবা মা-বোন আপনার কাছে আসলে তাকে তার প্রাপ্য সম্মান দিতে হবে, তাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা যাবে না। যদি কেউ করে, তার ধ্বংস অনিবার্য।
যুবলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি যুবলীগের নেতাকর্মীদের হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি। কিন্তু আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়া যাবে না। কারো ওপর জুলুম নির্যাচন করা যাবে না, সব সময় মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। মানুষকে সম্মান দিতে হবে। ভালো কাজের মাধ্যমে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।
ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ আমার প্রাণের সংগঠন। ছাত্রলীগ একটি ছাত্র সংগঠন; মেধাবী শিক্ষার্থীরা সব সময় ছাত্রলীগকে বেছে নিয়েছে। ছাত্রলীগ করা ছেলে-মেয়েরা নিজেদের সুশিক্ষিত করে আজ বিভিন্ন সেক্টরে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ছাত্রলীগ কখনো মাদকের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে না, চাঁদাবাজি করতে পারে না। ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকর জ্ঞানগরিমায় সম্পন্ন হতে হবে। সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের দক্ষ করে গড়ে তুলে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। অসৎ পথ পরিহার করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক দেওয়ান জসিম উদ্দিন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান শামীম পৃথক অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতা দেন। দু’টি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাস্টার আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিরীন আক্তার মুক্তা, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মো. কামাল হোসেন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক কামাল হোসেন, আবুল বাশার, শাহীন জিয়া, মাসুদ আলম, জানে আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন বিপ্লব, নাথেরপেটুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ওমর ফারুক রিপন, উত্তর হাওলা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমান শামীম, বিপুলাসার যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদ প্রমুখ। দুটি অনুষ্ঠানে উপজেলার সকল ইউনিয়ন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।