Dhaka 2:05 am, Monday, 23 December 2024

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর তৈরি করে দেব

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে যাদের ঘরবাড়ি একেবারে ভেঙে গেছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনা মূল্যে দেওয়া বাড়িগুলো গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৮ হাজার ৫৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হয়ে গেল।

সেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এরই মধ্যে আমরা তালিকা করেছি কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কতগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। যেগুলো সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদের আমরা ঘর তৈরি করে দেব।

 

আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো নির্মাণে উপকরণ দিয়ে সহায়তা করব। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে আমরা আছি। প্রাথমিকভাবে যা যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি৷’

 

ঘরবাড়ি যাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকে যেন ঘর নির্মাণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব। এরই মধ্যে সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।

প্রত্যেক এলাকা থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেই অনুযায়ী আমরা সহায়তা পাঠাব।’

 

প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর করেন। পরে তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।

এদিন ১৮ হাজার ৫৬৬টি পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর দেওয়া হয়।

 

অনুষ্ঠানে আরো ৭০টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্য দিয়ে দেশের ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে ব্যস্ত ছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের সেবক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই ভূমিহীন মানুষের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার পরও ভূমিহীন মানুষের মধ্যে ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প নিয়ে আমরা ঘর বানাতে শুরু করি।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ভূমি ও গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসিত হয়েছে ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়ে অসহায় মানুষের জীবন বদলে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের সেবক হিসেবেই বাবার মতো সেবা করে যাব। এই দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত জীবন পাবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আশ্রয়ণের মাধ্যমে মানুষের যে পরিবর্তন হয়েছে, তাতে মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন‌্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

 

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সেটিই আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এ জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। বঙ্গবন্ধুর মতো আজীবন দেশের মানুষের কল্যাণে ও তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামকে আমরা নাগরিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসব। সেই নাগরিক সুবিধা আমরা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। পাশাপাশি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি; যার সুফল মানুষ ভোগ করছে।’

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ঘর তৈরি করে দেব

আপলোড সময় : 12:13:14 pm, Friday, 14 June 2024

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে যাদের ঘরবাড়ি একেবারে ভেঙে গেছে, তাদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় বিনা মূল্যে দেওয়া বাড়িগুলো গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা এনে দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৮ হাজার ৫৬৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ ঘর হস্তান্তর কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কয়েক দিন আগে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস হয়ে গেল।

সেখানে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এরই মধ্যে আমরা তালিকা করেছি কোন কোন এলাকায় কতগুলো ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কতগুলো আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। যেগুলো সম্পূর্ণভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাদের আমরা ঘর তৈরি করে দেব।

 

আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ঘরগুলো নির্মাণে উপকরণ দিয়ে সহায়তা করব। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে আমরা আছি। প্রাথমিকভাবে যা যা প্রয়োজন তা করে যাচ্ছি৷’

 

ঘরবাড়ি যাদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যেকে যেন ঘর নির্মাণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমি করে দেব। এরই মধ্যে সেভাবে আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি।

প্রত্যেক এলাকা থেকে আমরা তথ্য সংগ্রহ করেছি। সেই অনুযায়ী আমরা সহায়তা পাঠাব।’

 

প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা, কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা এবং ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জমির মালিকানা দলিলসহ বাড়ি হস্তান্তর করেন। পরে তাদের সঙ্গে মতবিনিময়ও করেন।

এদিন ১৮ হাজার ৫৬৬টি পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পের জমিসহ ঘর দেওয়া হয়।

 

অনুষ্ঠানে আরো ৭০টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান। এর মধ্য দিয়ে দেশের ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলাকে ভূমি ও গৃহহীনমুক্ত হিসেবে ঘোষণা করা হলো।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতাকে হত্যা করার পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা এ দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে ব্যস্ত ছিল। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে জনগণের সেবক হিসেবে যাত্রা শুরু করে। তখন থেকেই ভূমিহীন মানুষের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছিলাম। তখন বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। তার পরও ভূমিহীন মানুষের মধ্যে ঘর তৈরি করে দেওয়ার জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্প নামে একটি প্রকল্প নিয়ে আমরা ঘর বানাতে শুরু করি।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ ৪০ হাজার ভূমি ও গৃহহীন মানুষকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসিত হয়েছে ২৯ লাখ ১০ হাজার ২৬৫ জন।

আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেয়ে অসহায় মানুষের জীবন বদলে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের সেবক হিসেবেই বাবার মতো সেবা করে যাব। এই দেশের মানুষ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত জীবন পাবে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। আশ্রয়ণের মাধ্যমে মানুষের যে পরিবর্তন হয়েছে, তাতে মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন‌্য এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

 

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সেটিই আমাদের কর্তব্য বলে মনে করি। এ জন্যই আমাদের এই প্রচেষ্টা। বঙ্গবন্ধুর মতো আজীবন দেশের মানুষের কল্যাণে ও তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে চাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামকে আমরা নাগরিক সুবিধার আওতায় নিয়ে আসব। সেই নাগরিক সুবিধা আমরা নিশ্চিত করে যাচ্ছি। পাশাপাশি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা, দেশের মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি; যার সুফল মানুষ ভোগ করছে।’