নড়াইলে মানব পাচারকারী চক্রের দুই সদস্য চারশোটি অবৈধ মোবাইল সিম ও আটটি মোবাইল ফোনসহ গ্রেফতার।
নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানাধীন নওয়াপাড়া গ্রামের জনৈক মোঃ আরিফুর জ্জামান (২৬) এর বড় ভাই মোঃ আল আমিন শেখ (২৮) দুই বছর পূর্বে লিবিয়ায় গমন করে। গত মার্চ/২০২৪ মাসে মোঃ আল আমিন শেখ তার ভাইকে জানায় যে, ৪/৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তাদের একটি বাড়িতে আটকে রেখে নির্যাতন করছে। অতঃপর অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তাদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানায় যে, তার ভাইকে বাঁচাতে হলে বিকাশের মাধ্যমে দশ লক্ষ টাকা দিতে হবে।
এছাড়া আরো বলে যে, টাকা না দিলে তার ভাইকে তারা মেরে ফেলবে। এরপর উক্ত ব্যক্তি মোঃ আল আমিন শেখকে মারধর করার কিছু অডিও, ভিডিও এবং ছবি প্রেরণ করে। এজন্য ভিকটিমের পরিবার উক্ত ব্যক্তির দেওয়া বিকাশ নাম্বারে তিনবারে তাদের দাবিকৃত দশ লক্ষ টাকা প্রেরণ করে। কিন্তু উক্ত মানব পাচারকারী চক্রটি আরো টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ভিকটিম মোঃ আল আমিন শেখকে আবারও মারধর করতে থাকে।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের ছোটভাই মোঃ আরিফুর জামান লোহাগড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে লোহাগড়া থানার মামলা নং-৮, তারিখ-৬/৫/২০২৪, ধারা-২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৬/৭ ধারায় রুজু হয়। মামলা রুজু হওয়ার পর নড়াইল জেলা পুলিশ সুপার মোহাঃ মেহেদী হাসান’র নির্দেশনায় জেলার সিসিআইসি ও গোয়েন্দা টিম মাঠে নামে। গত ২৮/০৫/২০২৪ তারিখ তারেক আল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস), জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ছাব্বিরুল আলম এবং সিসিআইসি শাখার ইনচার্জ মোঃ শাহ দারা খানের নেতৃত্বে লোহাগড়া থানার টিমসহ যৌথ আভিযানিক টিম অভিযান পরিচালনা করে কুষ্টিয়া জেলার সদর থানাধীন দহকোলা গ্রাম হতে রাত আনুমানিক ২১.৩০ মিনিটের সময় সন্দিগ্ধ আসামি মোঃ তরিকুল ইসলাম (৩৫) পিতা-মোঃ আয়ুব আলী এবং কুবাদ আলী (৪২) পিতা- মসারত মন্ডল দ্বয়কে গ্রেফতার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা পলাতক অন্যান্য আসামি এবং লিবিয়ায় অবস্থানকারী মানবপাচার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় লিবিয়াতে মানুষকে আটক রেখে মারধর করে অডিও, ভিডিও ও ছবি প্রেরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। গ্রেফতারকৃত আসামিদের কাছ থেকে চারশো টি অন্যের নামে নিবন্ধিত অবৈধ মোবাইল সিম এবং আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। মানব পাচার চক্রের অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।