দেশের আরও পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব হাসপাতালে পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাইরয়েড, কিডনি, লিভার, বোন ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা দেওয়া হবে। এতে গরিব ও সাধারণ মানুষ কম খরচে এসব রোগের ডায়াগনসিস ও চিকিৎসাসেবা পাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরমাণু চিকিৎসাসেবা সম্প্রসারণে সম্প্রতি বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন দেশের পাঁচটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস (ইনমাস) স্থাপন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের প্রস্তাব করেছে। পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো প্রকল্প প্রস্তাবে বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নের প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে চলতি বছরে শুরু হয়ে ২০২৮ সালে শেষ হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জের বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, টাঙ্গাইলের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, নোয়াখালী আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইনমাস স্থাপন করা হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনা সূত্রে জানা গেছে, পরমাণু চিকিৎসাসেবা চালু করে সেবা সম্প্রসারণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন করতে চায় সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশের বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরমাণু চিকিৎসাসেবা চালু করা হচ্ছে।
পরমাণু শক্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ১৯৬০ সাল থেকে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন বিভিন্ন ধরনের পরমাণু চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত দেশের ১৪টি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ইনমাস এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইনমাস স্থাপন করে অত্যাধুনিক পরমাণু প্রযুক্তির চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে আরও ৮টি ইনমাস স্থাপনের কাজ চলছে।
আধুনিক মানের পরমাণু চিকিৎসায় ইনমাস স্থাপন প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে পরমাণু চিকিৎসাসেবা প্রদান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামো তৈরি, হাসপাতালগুলোর জন্য ১৫৫টি বৈদেশিক ও ৭৫০টি স্থানীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, আসবাবপত্র স্থাপন ও যানবাহন ক্রয়, জনবল নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন।
এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় হাসপাতালগুলোর জন্য ইনমাস স্থাপন ও রোগীর সেবা কার্যক্রম বৃদ্ধির লক্ষ্যে আধুনিকমানের পিইট-সিটি, এসপিইসিটি-সিটি, এসপিইসিটি, বিএমডি, রেডিওইমিউনোসাই সিস্টেম, স্বয়ংক্রিয় গ্যামা কাউন্টার, থাইরয়েড ক্যামেরা, থাইরয়েড আপটেক সিস্টেম, কালার ডপলার মেশিনসহ অন্যান্য নতুন এবং আধুনিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।