১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যাকা-ের পর এই হত্যার প্রতিবাদকারী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চিহ্নিত করে তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে উচ্চপর্যায়ের কমিটি করে দিয়েছে উচ্চ আদালত। এ-সংক্রান্ত রিট আবেদনের ওপর দেওয়া এক রায়ে গতকাল বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব ও অর্থ সচিবের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠনের করতে হবে। এ কমিটি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারীদের চিহ্নিত করে আগামী ৪ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দেবে। পাঁচ বীর মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে ২০২২ সালে এ রিট আবেদনটি করা হয়। রিট আবেদনের যুক্তিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার পর কেউ যেন প্রতিবাদ না করতে পারে সেজন্য তখনকার সামরিক সরকার মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যেও দেশের বিভিন্ন স্থানে অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিবাদ করেন। অনেকেই প্রতিবাদ করতে গিয়ে নির্যাতন, জুলুম ও নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। কিন্তু আজ পর্যন্ত এসব প্রতিরোধ যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি মেলেনি। আবেদনে, এই প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি, তাদের রাষ্ট্রীয় সম্মানী, চিকিৎসা ভাতা ও নিরাপত্তার নির্দেশনা চাওয়া হয়।
রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে একই বছরের ৭ আগস্ট প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি ও তাদের রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা প্রশ্নে রুল দেয় হাইকোর্ট। সেই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল রুল যথাযথ ঘোষণা করে এ রায় হলো। আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত।
আইনজীবী বাকির দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চিহ্নিত করতে বলেছে আদালত। আমরা তাদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, সম্মানীসহ কিছু সুযোগ-সুবিধা চেয়েছিলাম। আদালত রুল যথাযথ ঘোষণা করেছে।’ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদালতের রায়ের অনুলিপি দ্রুত সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হবে।