একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। যা মানব জাতিকে উদার ও দয়ালু হতে শিক্ষা দেয়। মহান আল্লাহ তায়ালা উদার ব্যক্তিদের সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যারা আল্লাহর পথে নিজের ধন-সম্পদ ব্যয় করে এবং নিজেদের অনুগ্রহের কথা প্রকাশ করে না, আর কাউকে কষ্ট দেয় না; তাদের জন্য প্রতিপালকের কাছে প্রতিদান রয়েছে এবং তাদের ভয় নেই।’ সূরা বাকারা: আয়াত ২৬২।
পৃথিবীতে যুগে যুগে অসংখ্য মানুষ উদারতার পরিচয় দিয়ে গেছেন। মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় উদার ব্যক্তি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (সা:)। এমনকি শত্রুরাও তার কাছ থেকে উদারতা ছাড়া আর কিছু আশা করতেন না। যারা তার ওপর অত্যাচার করতো, তাদের প্রতিও তিনি দয়াবান ছিলেন।
রাসূলে পাক (সা:) এর স্মৃতিবিজড়িত শহর সেই মদিনাতে একজন উদার ব্যক্তিকে অনুসরণ করে আজিম খান নিজ অর্থায়নে নামাজিদের মাঝে ফ্রিতে চা পরিবেশন করেছেন।
এসময় তার আশেপাশে কে বা কারা আছেন, তাও লক্ষ্য রাখেন না।
আজিম খান বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের চিফ মেকানিকেল ইঞ্জিনিয়ার (সিএমই) দপ্তরের অফিস সহকারী পদে কর্মরত আছেন। এছাড়া শিরোইল কলোনি এলাকায় তিনি একটি মাদরাসাও পরিচালনা করেন।
আজিম খান প্রতিদিন দুটি ফ্লাক্সে করে বাসায় তৈরি করা চা ও ২০০ ওয়ান টাইম কাপ নিয়ে নগরীর শিরোইল কলোনি জামে মসজিদের বাইরে দাড়িয়ে থাকেন। অন্যদিকে তার চাচা নাদিম হোসেন ওয়ান টাইম কাপগুলো নামাজি ও শিশু-কিশোরদের মাঝে বিতরণ করেন। প্রথম রোজা থেকে মাগরিবের নামাজ শেষে প্রতিদিন চা খাওয়াচ্ছেন তিনি। এপর্যন্ত ৫২০০ জন নামাজিদের ফ্রিতে চা খাইয়েছেন।
ইফতার শেষে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লি ও শিশু কিশোররা চা খেয়ে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলেন এবং আজিম খানকে ধন্যবাদ জানান।
জানতে চাইলে সেলুন ব্যবসায়ী মাস্তান আলী জানান, চাটি অত্যন্ত সুস্বাদু, সারাদিন রোজা রাখার পর নামাজ শেষে চা খাওয়ার প্রবনতা বেড়ে যায়। আর মসজিদ থেকে বের হয়ে যদি বাসার তৈরি চা পাওয়া যায় তাহলেত কোন কথাই নাই। এছাড়া আজিম খানের চা খেলে গলা পরিস্কার হয় এবং জমে থাকা ক্বফ বের হয়ে যায়।
আজিম খানের ব্যক্তিত্ব এতই অসাধারণ যে, প্রত্যেকটি মানুষ মুগ্ধ হয়ে যায়।
অন্যান্য মুসল্লীরা বলেন, চা খাওয়ানোর বিনিময়ে কিছু না নিয়ে ছেলেটি মানবতার সেবায় ব্যস্ত। তার এমন নিঃস্বার্থ উদারতা সম্পূর্ণ মানবজাতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।
একজন মুসলমান ও রাসূলের অনুসারী হিসেবে সবার উচিত বন্ধু থেকে শত্রু, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও অন্যান্য সব মানুষের সঙ্গে সদাচরণ করা, সহায়তা করা। যেকোনো সমস্যায় তাদের পাশে দাঁড়ানো।