বান্দরবানের রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ৪৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঢাকায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু তাকে কিভাবে এবং কোত্থা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এর বিস্তারিত কিছুই জানানো হয়নি। তবে বলা হয়েছে, র্যাবের মধ্যস্থতায় ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনের মুক্তি ঘটেছে। মধ্যস্থতার বিপরীতে কোনো মুক্তিপণ প্রদান করা হয়েছে কিনা তা জানানো হয়নি। উদ্ধারের পর নেজাম উদ্দিনকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি সুস্থ রয়েছেন।
গণমাধ্যম বা কোনো পক্ষের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, র্যাব ও পুলিশের সমন্বয়ে ড্রোন ব্যবহার করে নেজাম উদ্দিনের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। এরপর র্যাবের অভিযানে সফলতা আসে।
রুমার সূত্রগুলো জানিয়েছে, র্যাব-১৫, এপিবিএনসহ বান্দরবান পুলিশের ৫০ সদস্যকে নিয়ে রুমার বেথেল পাহাড়ে অভিযান চালানো হয়। সেই পাহাড় থেকেই তাকে উদ্ধার করা হয়েছে। র্যাবের মধ্যস্থতায় নেজাম উদ্দিনকে মুক্ত করা হয়েছে। মধ্যস্থতার নেপথ্যে কিছু রয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। প্রশাসন থেকে কিছুই বলা হয়নি। তবে এক্ষেত্রে কেএনএফ সদস্যরা তাকে কোন স্থানে রেখেছিল এবং সেখানে ফেলে গেছে কি না তাও বলা হয়নি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি নূরে আলম মিনা জনকণ্ঠকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় জানিয়েছেন, উদ্ধারের পর তাকে পরিবারের কাছে স্থানান্তর করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তিনি যদি চট্টগ্রাম বা অন্য কোনো স্থানে যেতে চান তাকে স্কট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। এর বেশি কিছু তিনি জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নেজাম উদ্দিনকে রুমার সোনালী ব্যাংকের পাশাপাশি মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ার সময় কেএনএফ সদস্যরা অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে নিয়ে যায়। অপহরণের পর কেএনএফ সদস্যরা তাকে নিয়ে রুমার অদূরে বেথেল পাহাড়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। এর আগে জানানো হয়, নেজাম উদ্দিনকে মুক্তির জন্য ২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করে কেএনএফ সদস্যরা।
বুধবার রাতে কেএনএফ সদস্যদের পক্ষ থেকে নিজাম উদ্দিনের স্ত্রীকে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে এ অর্থের কথা বলা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বজনদের পক্ষ থেকে। র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈনও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন ১৫-২০ লাখ টাকার মুক্তিপণ দাবি করা হয়। তবে বান্দরবানের প্রশাসনিক কোনো সূত্রে এ বিষয়ে বক্তব্য দেয়নি।
অপরদিকে রুমা ও থানচিতে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের তিন শাখায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কেএনএফ (কুকি চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সদস্যরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে অর্থ, অস্ত্র-গোলাবারুদ লুট করার ঘটনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনো কূলকিনারা করা যায়নি। তিনস্তরের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। রুমা ও থানচিতে সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজমান রয়েছে। কিছু কিছু দোকানপাট খুললেও অধিকাংশ বন্ধ রয়েছে।
বান্দরবানের ছয় উপজেলার মধ্যে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচিতে সব ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। এর আগে বুধবার বলা হয়েছিল, ছয় উপজেলায় বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া পুলিশ ও বিজিবির নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। রুমা ও থানচিতে কেএনএফ সদস্যদের দুঃসাহসিক ঘটনায় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট মহল বিস্মিত। কেএনএফের পক্ষ থেকে এমন ঘটনা হতে পারে তা আগেভাগে কেউই কল্পনায় আনেনি।
এদিকে কেএনএফের সঙ্গে শান্তি কমিটির চলমান আলোচনা স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন শান্তি কমিটির আহবায়ক বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা। অপরদিকে সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখা থেকে ভল্ট ভাঙার সুযোগ করতে না পেরে টাকা যেমন অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গেছে, তেমনি থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংক শাখার ভল্টও ভাঙতে পারেনি দুর্বৃত্তরা। তবে থানচির সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে ৬ লক্ষাধিক এবং কৃষি ব্যাংক শাখা থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ক্যাশ কাউন্টার থেকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে কেএনএফ সদস্যরা।
এদিকে রুমা সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে পুলিশ ও আনসারের ১৪ অস্ত্র, ৩৮০ রাউন্ড গুলি এবং অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধারে পুলিশ, বিজিবি ও সেনা সদস্যদের সমন্বয়ে চিরুনি অভিযান শুরু করা হয়। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন উদ্ধার হয়েছে। লুণ্ঠিত অর্থ, অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধারে এখনো কোনো সুফল মেলেনি। অপরদিকে জানা গেছে, কেএনএফ সদস্যরা দুঃসাহসিক এ ঘটনাটি ঘটিয়ে সীমান্তের ওপারে পালিয়ে গেছে। মূলত সীমান্তের ওপারেই এদের মূল ঘাঁটি। সেখান থেকেই কেএনএফের সফল অপকর্ম পরিচালিত হয়ে থাকে।
মুক্তিপণ দাবি করেছিল ॥ রুমা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক মো. নেজাম উদ্দিনকে অস্ত্রের মুখে পাশর্^বর্তী মসজিদ থেকে অপহরণ করে নেয় কেএনএফ সদস্যরা। মূলত ব্যাংকের ভল্টের চাবি তার কাছে না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে অপহরণ করে। উল্লেখ্য, ভল্টের দুটি চাবির মধ্যে একটি ক্যাশিয়ারের কাছে ও অপরটি ম্যানেজারের কাছে ছিল। ক্যাশিয়ারের কাছ থেকে চাবি নিতে পারলেও ম্যানেজারের কাছ থেকে চাবি না পাওয়ায় কেএনএফ সদস্যরা ভল্ট খুলতে পারেনি।
ফলে অক্ষত রয়ে গেছে ভল্টে থাকা পুরো টাকা। যার পরিমাণ প্রায় পৌনে ২ কোটি টাকা। ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নেওয়ার একদিন পর বুধবার রাতে কেএনএফ সদস্যদের পক্ষ থেকে তার স্ত্রী মাইসুরা ইসফাতকে ফোনে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বলা হয় নেজাম উদ্দিন ভালো আছেন। মাইসুরা এ সময় তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ফোন কেটে দেওয়া হয়। মাইসুরা বিষয়টি স্বজন এবং ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন। তবে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা যায়নি। এ ছাড়া প্রশাসনের কোনো ধরনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারেনি।
সোনালী ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপকের বরাত দিয়ে গণসংযোগ দপ্তর থেকে বলা হয়েছে, নেজাম উদ্দিন ভালো আছেন। মুক্তিপণের দাবির বিষয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মুখ খোলেনি। নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী কলেজ শিক্ষিকা মাইসুরা ইসফাত জানিয়েছেন, স্বামীর মুক্তির জন্য তিনি উৎকণ্ঠায় ছিলেন। সোনালী ব্যাংক বান্দরবান শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মনিরুল হাসান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, নেজাম উদ্দিন কাজপাগল অফিসার। তাকে ব্যাংকের গ্রাহকরা বেশি পছন্দ করতেন। ব্যাংকে কাজের ঝামেলা হলে গ্রাহকদের সুবিধার্থে তিনি নিজে সিট থেকে উঠে ক্যাশে টাকা লেনদেন করতেন।
শান্তি আলোচনা স্থগিত ঘোষণা ॥ বান্দরবানে রাষ্ট্রায়ত্ত দুই ব্যাংকের তিন শাখায় দুর্ধর্ষ হামলা চালিয়ে এক ম্যানেজারকে অপহরণ, অস্ত্র, টাকা ও গোলাবারুদ লুটের ঘটনায় কেএনএফের সঙ্গে সব ধরনের আলোচনা স্থগিত ঘোষণা করেছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। কমিটির আহবায়ক পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা মারমা বৃহস্পতিবার সকালে জেলা পরিষদের সভা কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, কেএনএফ সদস্যরা গত মঙ্গলবার রুমায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি ও পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা মারমা জানান, কেএনএফ মঙ্গলবার রুমায় তারাবি নামাজিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা, সরকারি কর্মকর্তা ও পথচারীদের জিম্মি করে হামলা, অর্থ লুটের উদ্দেশে সোনালী ব্যাংকে হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র লুট করে নেওয়া এবং পরদিন বুধবার থানচি উপজেলায় স্থানীয়বাসিন্দাদের জিম্মি করে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ ও দুটি ব্যাংক লুট করে কেএনএফ সদস্যরা।
এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। কেএনএফ এর সঙ্গে আমাদের শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির কয়েক দফায় চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করায় কেএনএফের সঙ্গে শান্তি কমিটির সব ধরনের আলোচনা স্থগিত ঘোষণা করা হলো।
তিনি বলেন, কেএনএফকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য ২০২৩ সালের ২৯ মে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে মতবিনিময় সভা হয়েছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৯ জুন স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি গঠিত হয়। পরবর্তীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি ও কেএনএফের মধ্যে কয়েকদফা ভার্চুয়ালি মিটিংয়ের পর উভয় পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে সরাসরি বসে সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। গত বছরের ৫ নভেম্বর ও চলতি বছরের ৫ মার্চ দুদফা সরাসরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
উভয় সংলাপে কেএনএফের সশস্ত্র কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা এবং অন্যান্য বিষয় সংক্রান্তে দুটি সমঝোতা স্মারক সম্পাদিত হয়। কিন্তু কেএনএফ সম্পূর্ণভাবে চুক্তি ভঙ্গ করে বিভিন্ন সময়ে সশস্ত্র কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। কমিটির তরফ থেকে এ ব্যাপারে বারবার অবগতি করা হলেও তারা কর্ণপাত করেনি। বরং বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর হামলা, অপহরণ ও চাঁদাবাজি চালিয়ে যায়।
গত মঙ্গল ও বুধবার দুটি ব্যাংকের তিন শাখায় সশস্ত্র হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আমরা বিস্মিত ও মর্মাহত। এ ঘটনায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির চলমান সব ধরনের প্রচেষ্টা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। এ অবস্থায় এ কমিটি মনে করে এসব ঘটনার মধ্য দিয়ে কেএনএফ শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সঙ্গে সংলাপ করার সব ধরনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে।
রুমা ও থানচি পরিস্থিতি ॥ গত মঙ্গল ও বুধবার ব্যাংকে কেএনএফ সদস্যদের সশস্ত্র হামলা, অর্থ ও অস্ত্র এবং গোলাবারুদ লুট ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনার পর রুমা ও থানচিতে অস্বাভাবিক অবস্থার অবসান হয়নি। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। দুটি ব্যাংকের শাখায় সকল কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বাজারে কিছু দোকানপাট খুললেও সকলের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। গত বুধবার রুমা সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে অস্ত্র লুট ও ম্যানেজারকে অপহরণ করে।
এরপর দিন থানচির সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে একযোগে হামলা চালিয়ে প্রায় ৬ লক্ষাধিক টাকা ও ২ লাখ ৪৫ টাকা লুট করা হয়। পরপর দুদিন এ ধরনের দুঃসাহসিক ঘটনার সময় কেএনএফ সদস্যরা গুলিবর্ষণ করে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এরপর রুমা ও থানচিতে অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। কিছু দোকান খুললেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। দিনে দুপুরে থানচিতে অস্ত্রের মহড়া দিয়ে ব্যাংক লুটের ঘটনার পর বৃহস্পতিবার সেখানকার রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা রয়েছে। ওষুধ এবং খাদ্যের মতো জরুরি পণ্য ছাড়া বেশিরভাগ দোকানে তালা ঝুলছে।
থানচি বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সাধারণ সময়ে যে ধরনের লোক সমাগম বাজারে হয়, বর্তমানে তার সামান্য পরিমাণও নেই। মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে যারা নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বাজারে বিক্রি করতে এসে থাকেন তাদের সংখ্যাও ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়ে আছে। উল্লেখ্য, প্রতি রবি ও বুধবার থানচি বাজারে সাপ্তাহিক হাট বসে। সামনে পাহাড়িদের বর্ষবরণের অন্যতম উৎসব সংগ্রাই। সে উৎসব ঘিরে বাজারে বিকিকিনি অনেক বাড়ে। বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে লোকজন বাজারে কেনাকাটা করতে আসে। আগামী রবিবার সাপ্তাহিক বাজার। আমাদের আশঙ্কা, লোকজন এবার বাজারে আসবে কিনা।
শান্তি প্রতিষ্ঠায় কয়েক দফা ভিডিও কনফারেন্স ॥ কেএনএফ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মধ্যে এর আগে একাধিক বার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে অংশ নেন কেএনএফের কথিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মইয়া ওরফে লালজং সই বম, মেজর লিয়ানা ওরফে জেরসিং লিয়ান বম, কর্নেল ভাপুয়া ওরফে লালসাংলম বম এবং মেজর স্টে ওয়াড ওরফে লালসাং রেস বম। বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গত ৫ নভেম্বর প্রথম সশরীরে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়।
এ সময় কেএনএফ তাদের কারাবন্দি ২৩ সদস্যকে তিন মাসের মধ্যে মুক্তি, বম সম্প্রদায়ের বেসামরিক নাগরিক সদস্যদের প্রত্যাবাসন ও পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা নিশ্চিত করা, ভারতের মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ শতাধিক বম জনগোষ্ঠীর মানুষকে সরকারিভাবে দেশে ফিরিয়ে না আনাসহ ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করে।
এছাড়াও কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) নামে এই সংগঠনটি গত ২০২২ সালের শুরুর দিকে দাবি করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, বরকল, জুরাইছড়ি, বিলাইছড়ি ও বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি, রুমা, থানচি, লামা ও আলীকদমসহ ৯টি উপজেলা নিয়ে ‘কুকি-চিন রাজ্য’ গঠনের। এরপর থেকেই মূলত তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র সংঘাতে জড়ায়।
খাগড়াছড়ির ব্যাংকগুলোয় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ॥ পার্বত্যাঞ্চল প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি থেকে জানান, বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনায় খাগড়াছড়ির সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। খাগড়াছড়ির জেলা সদর ও উপজেলা সদরের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপকরা জানান, ‘নিরাপত্তা নিয়ে কোনো উদ্বেগ নেই।
তবে বান্দরবানের ব্যাংক ডাকাতির পর থেকে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তাও বাড়ানো হয়েছে। ‘খাগড়াছড়ির জেলা সদরের সোনালী ব্যাংকের এজিএম সমর কান্তি ত্রিপুরা বলেন, ‘ঘটনার পর ব্যাংকে ভার্চুয়ালি সভা হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আমাদের ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থাও রয়েছে।’