Dhaka 1:30 pm, Monday, 23 December 2024

অবৈধ ভাবে পুশের কারণে চিংড়ি শিল্পে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা হারাচ্ছে

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দ্বিতীয় বৃহত্তর শিল্প হিসাবে চিংড়ি মাছ বাংলাদেশে খ্যাত কিন্তু এই শিল্পটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে পুশের কারণে।

দেশের সাদা সোনা নামে পরিচিত বাগদা , গলদা, হরিনা, চাকা, চালি,ও বেজাতীয় চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আমাদের দেশ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে এই চিংড়িতে পুশ এবং পানিতে রাত অব্দি ভিজিয়ে রাখার কারণে আমাদের এই শিল্প আজ নানা বিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারছে না।

তাছাড়া এই চিংড়ি আহরণকারী ডিপো ও আড়ৎ গুলোতে নেই কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। চিংড়ি আহরণের সাথে জড়িত যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা তারা কোন নিয়ম-নীতি মেনে চলেনা নিজেদের খেয়াল খুশিমতো নিয়ম বানিয়ে এই চিংড়ি আহরণের কাজ চালানো হচ্ছে যা আমরা সরজমিনের তথ্য সংগ্রহ করে দেখতে পেয়েছি যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাটের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় সর্বত্রই মাছের ডিপো, গুলোতে নিয়ম-কানুনের কোন বালাই নেই বললেই চলে বসত ঘর, বারান্দা, পুকুরপাড়ে, ড্রেনের পাশে নোংরা জায়গায় এই চিংড়ি মাছের অবস্থান দেখতে পাওয়া যায়। এখানে হরহামেশাই গলদা, বাগদা মাছে অপদ্রব্য পুশ হয়ে থাকে। সংরক্ষণের ত্রুটি, অপদ্রব্য পুশের কারণে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছের আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশ আজ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। এদের কাছে সংশ্লিষ্ট মৎস্য দপ্তরের ন্যূনতম কোনো কাগজপত্র নাই। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এ ব্যবসা রমরমার সাথে চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে যেসব ডিপোতে দু-একটি দপ্তরের কাগজ রয়েছে তারাও নিয়মকানুন কিছুই মানছে না। তারা ভ্যানের উপর, মরিচাধরা টেবিলে, সুপারি-বাঁশের মাচায়, পলিথিন রাস্তার উপর বিছিয়ে নোংরা, জীবাণুযুক্ত পরিবেশে মাছ রেখে বেঁচা-কেনা করছে। অনেক কেন্দ্রে গোপনে পুশ ডাক্তার দিয়ে মাছে নিষিদ্ধ অপদ্রব্য পুশ করা হচ্ছে। কোথাও‌ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে দেখা যায় না। রামপাল মংলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায় এই চিংড়ি মাছ গুলো ড্রামের ভিতর করে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে বিক্রি করতে নিয়ে আসে এটাও পুশ করার শামিল অপরাধ। কয়রা পাইকগাছার প্রত্যন্ত অঞ্চলে একই ধরনের অপরাধ পরিলক্ষিত হয়। মাঝেমধ্যে দুই-একটা অভিযান পরিচালিত হলেও এগুলো থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোস্টগার্ডের অভিযানে দেখা যায় যে আটক কৃত পুশ চিংড়ি মাছের বেশিরভাগই সাতক্ষীরা অঞ্চলের।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে নতুন বাজার ও রুপসা এলাকায় গড়ে উঠেছে চিংড়ি মাছের কমিশন এজেন্ট ঘরগুলো। বিভিন্ন সূত্র মতে অত্র এলাকার মাছের ঘরগুলোতে অবৈধ ভাবে চলছে চিংড়ী মাছে পুশ করার মহাউৎসব। ঘরগুলোর সামনের দিকে তালা দিয়ে পিছনে রুমে চলে পুশিং কার্যক্রম বিকাল তিনটা থেকে রাত অবধি চলে এই কার্যক্রম। ফলে বাংলাদেশে আজ প্রক্রিয়াজাতকরণ চিংড়ী রপ্তানীর ব্যবসা ধংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

অবৈধ ভাবে পুশের কারণে চিংড়ি শিল্পে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা হারাচ্ছে

আপলোড সময় : 12:57:18 pm, Tuesday, 2 April 2024

বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী দ্বিতীয় বৃহত্তর শিল্প হিসাবে চিংড়ি মাছ বাংলাদেশে খ্যাত কিন্তু এই শিল্পটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে পুশের কারণে।

দেশের সাদা সোনা নামে পরিচিত বাগদা , গলদা, হরিনা, চাকা, চালি,ও বেজাতীয় চিংড়ি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে আমাদের দেশ। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই যে এই চিংড়িতে পুশ এবং পানিতে রাত অব্দি ভিজিয়ে রাখার কারণে আমাদের এই শিল্প আজ নানা বিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে পারছে না।

তাছাড়া এই চিংড়ি আহরণকারী ডিপো ও আড়ৎ গুলোতে নেই কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা। চিংড়ি আহরণের সাথে জড়িত যে সমস্ত ব্যবসায়ীরা তারা কোন নিয়ম-নীতি মেনে চলেনা নিজেদের খেয়াল খুশিমতো নিয়ম বানিয়ে এই চিংড়ি আহরণের কাজ চালানো হচ্ছে যা আমরা সরজমিনের তথ্য সংগ্রহ করে দেখতে পেয়েছি যে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা খুলনা সাতক্ষীরা বাগেরহাটের প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় সর্বত্রই মাছের ডিপো, গুলোতে নিয়ম-কানুনের কোন বালাই নেই বললেই চলে বসত ঘর, বারান্দা, পুকুরপাড়ে, ড্রেনের পাশে নোংরা জায়গায় এই চিংড়ি মাছের অবস্থান দেখতে পাওয়া যায়। এখানে হরহামেশাই গলদা, বাগদা মাছে অপদ্রব্য পুশ হয়ে থাকে। সংরক্ষণের ত্রুটি, অপদ্রব্য পুশের কারণে রপ্তানিযোগ্য চিংড়ি মাছের আন্তর্জাতিক বাজারে সুনাম নষ্ট হচ্ছে। দেশ আজ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা হারাচ্ছে। এদের কাছে সংশ্লিষ্ট মৎস্য দপ্তরের ন্যূনতম কোনো কাগজপত্র নাই। তারা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে এ ব্যবসা রমরমার সাথে চালিয়ে যাচ্ছে। এদিকে যেসব ডিপোতে দু-একটি দপ্তরের কাগজ রয়েছে তারাও নিয়মকানুন কিছুই মানছে না। তারা ভ্যানের উপর, মরিচাধরা টেবিলে, সুপারি-বাঁশের মাচায়, পলিথিন রাস্তার উপর বিছিয়ে নোংরা, জীবাণুযুক্ত পরিবেশে মাছ রেখে বেঁচা-কেনা করছে। অনেক কেন্দ্রে গোপনে পুশ ডাক্তার দিয়ে মাছে নিষিদ্ধ অপদ্রব্য পুশ করা হচ্ছে। কোথাও‌ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করতে দেখা যায় না। রামপাল মংলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায় এই চিংড়ি মাছ গুলো ড্রামের ভিতর করে সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে বিক্রি করতে নিয়ে আসে এটাও পুশ করার শামিল অপরাধ। কয়রা পাইকগাছার প্রত্যন্ত অঞ্চলে একই ধরনের অপরাধ পরিলক্ষিত হয়। মাঝেমধ্যে দুই-একটা অভিযান পরিচালিত হলেও এগুলো থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। কোস্টগার্ডের অভিযানে দেখা যায় যে আটক কৃত পুশ চিংড়ি মাছের বেশিরভাগই সাতক্ষীরা অঞ্চলের।

শহরের প্রাণকেন্দ্রে নতুন বাজার ও রুপসা এলাকায় গড়ে উঠেছে চিংড়ি মাছের কমিশন এজেন্ট ঘরগুলো। বিভিন্ন সূত্র মতে অত্র এলাকার মাছের ঘরগুলোতে অবৈধ ভাবে চলছে চিংড়ী মাছে পুশ করার মহাউৎসব। ঘরগুলোর সামনের দিকে তালা দিয়ে পিছনে রুমে চলে পুশিং কার্যক্রম বিকাল তিনটা থেকে রাত অবধি চলে এই কার্যক্রম। ফলে বাংলাদেশে আজ প্রক্রিয়াজাতকরণ চিংড়ী রপ্তানীর ব্যবসা ধংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে।