পুকুর আছে, পাড় নাই। কিছুদিন না যেতেই কোটি টাকার রাস্তা ধ্বসে পড়ে পুকুরে। বর্তমানে জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তার ধারে গড়ে উঠা পুকুরগুলোর কারনে রাস্তার এরকম ভেঙে পড়ার চিত্র সবখানেই চোখে পড়ে। ঠিক তেমনটিই নাটোরের সিংড়া থানাধীন বাঁশের ব্রীজ-কৈগ্রাাম হয়ে রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন পরিষদে চলাচলের একমাত্র রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ায় চরম জনদুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। এর কারণ হিসেবে স্থানীয় লোকজন দায়ী করেছেন পুকুরের মালিক ও ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তাদের কে।
নতুন নির্মিত রাস্তায় (প্যালাসাইডিং বা রিটানিং) ওয়াল তৈরি না থাকায় রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করেছে আবার কোথাও রাস্তার অর্ধেকটাই পুকুরে বিলীন হয়ে গেছে। কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই রাস্তা বা সড়ক অল্প দিনের মধ্যেই যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সরকারের প্রতিবছর রাস্তা মেরামতে কোটি কোটি টাকা জলে পড়ছে।
স্থানীয়রা বলছেন, পুকুরের মালিক নিজেদের স্বার্থে মাছ চাষের জন্য পুকুরটি লীজ দেন। কিছুদিন না যেতেই এসব রাস্তা গিলে ফেলে পুকুরে। অল্প অল্প করে ভাঙতে ভাঙতে বর্তমানে পুরো রাস্তাটিই যেন পুকুরে বিলীন হতে চলেছে। এতে জনসাধারণ পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। বছরের পর বছর এসব ভাঙা রাস্তার আর মেরামত হয় না। পুুকুরধারে রাস্তা ভাঙনের জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য কোন কার্যকর পদক্ষেপও নেয় না। যার ফলে জনগুরুত্বপূর্ণ সরকারী এই রাস্তা ভেঙ্গে গিয়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। অনতিবিলম্বে পুকুরের পাড় এবং পাশে গাইড ওয়াল দিয়ে রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ১২ নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডস্থ বাশেঁর ব্রীজ-কৈগ্রামের এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গুরুত্বপূর্ণ যানবাহন, ব্যবসায়ী সহ হাজারো মানুষ আসা-যাওয়া করে। আর এই রাস্তাটির পাশ ঘেষে প্রায় সাড়ে ৪ বিঘা জমির উপর রয়েছে একটি পুকুর। এই পুকুরে পাড় না থাকায় রাস্তা ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই রাস্তার পাশে মাছ চাষের জন্য পুকুরটি ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘ দিন ধরে পুকুর মালিক জুনু প্রামানিকের ছেলে মুন্টু ও সেন্টু এবং অপর মালিক আদুকানা প্রামানিকের ছেলে মকছেদ,মকলেছ ও মজনু’র কাছ থেকে লীজ নিয়ে এই পুকুরে মাষ চাষের ব্যবসা করে আসছেন একই এলাকার পাঁকুড়িয়া গ্রামের আসাদুল ইসলাম। মাষ চাষে তাদের পরিবার লাভবান হলেও ক্ষতি হচ্ছে ওই গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র সরকারী রাস্তাটির। পুকুরটি যেন কাল হয়ে দাড়িয়েছে জনগুরুতপূর্ণ এই রাস্তাটির।
অভিযোগের বিষয়ে লীজ গ্রহীতা আশাদুলের কাছে জানতে চাইলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ১২নং রামানন্দ খাজুরা ইউনিয়ন এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করি। পুকুরে পাড় না থাকায় রাস্তা ভেঙ্গে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে মৌখিক আকারে উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তাকে অবগত করেছি। খুব শীঘ্রয় এটি মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।