কুমিল্লার বুড়িচংয়ে দৈনিক কুমিল্লা প্রতিদিনের সম্পাদক ও দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম সুমন এর উপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার রাতে উপজেলা সদর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে বুড়িচং থানা পুলিশের একটি দল।
গ্রেফতারকৃতরা হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান এবং বুড়িচং উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শামীম হোসেন। এর আগে হামলার ঘটনায় সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনকে আসামি করে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ৫ই আগস্টের পূর্বে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গ্রেফতারকৃত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের এই দুই নেতা ছাত্রদের উপর হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটায়। এ বিষয়ে সাংবাদিক সুমন বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করে। এরপর থেকেই হামলাকারীরা সাংবাদিক সুমনকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে সাংবাদিক সুমন বুড়িচং উপজেলার পাচোঁড়া এলাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এন জাহিন হোসেন এর সংবাদ সংগ্রহের জন্য যায়। অনুষ্ঠান শেষে ফেরার পথে হামলাকারীরা সুমনকে মারধর করে আহত করে। পরে স্থানীয়রা আহত সুমনকে উদ্ধার করে বুড়িচং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় সুমন বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম সুমন এর উপর নেক্কারজনক হামলা ও মারধরের ঘটনায় জাতীয় সাংবাদিক নির্যাতন প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন (জেএসএনপিএফ) বিবৃতিতে হামলাকারীদেরকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে স্থানীয় প্রশাসনকে সময় বেঁধে দেয়। পরে বিবৃতির পরপরই জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে থানা পুলিশের একটি টিম আহত সাংবাদিক সুমনকে দেখতে হসপিটাতে ছুটে যান এবং মাত্র ৩ ঘন্টার মধ্যেই হামলাকারী দুইজনকে গ্রেফতার করেন।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার ও থানা পুলিশকে কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংগঠনটি। বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক জানায়, মামলা দায়ের পর পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার ১ ও ২ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত ১নং আসামির বিরুদ্ধে পূর্বেও বুড়িচং থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের রাতেই জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। রবিবার কুমিল্লা আদালতের মাধ্যমে জেলখানায় প্রেরণ করা হবে।