জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের সক্ষমতা বাড়ানো এবং এর প্রভাব কমানোর কার্যক্রম বেগবান করতে ১০০ কোটি টাকা বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত যেসব দেশে সবচেয়ে গভীর বাংলাদেশ তাদের অন্যতম। এই অভিঘাতের গভীরতা ও ব্যাপ্তি বিবেচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে অভিযোজনের সক্ষমতা বাড়ানো ও প্রভাব কমানোর জন্য আমরা পরিকল্পিতভাবে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছি।
এসংক্রান্ত কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাস উপযোগী পৃথিবী গড়ে তোলা এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমরা সর্বদা সচেষ্ট রয়েছি। ২০১১ সালে বাংলাদেশের সংবিধানে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের গুরুত্ব বিবেচনায় এসংক্রান্ত ১৮ ক অনুচ্ছেদ সন্নিবেশ করা হয়েছে। এ উদ্যোগকে কার্যকর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন আইন প্রণয়নসহ রেগুলেটরি এবং ফিসক্যাল পলিসি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
’ তিনি আরো বলেন, “২০১৯ সালে জাতীয় সংসদে আমরা ‘প্লানেটারি ইমার্জেন্সি’ নামের একটি মোশন গ্রহণ করেছি। এসব কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) এবং জাতিসংঘ সমর্থিত গ্লোবাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট মবিলিটি সংস্থা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ক্লাইমেট মবিলিটি চ্যাম্পিয়ন লিডার অ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করেছে।”
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাব মোকাবেলায় সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে বিসিসিএসএপি প্রণয়ন করি, যা বর্তমানে হালনাগাদ করা হচ্ছে। বিসিসিএসএপি-এ বর্ণিত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে গঠিত জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড (সিসিটিএফ) পরিচালনার জন্য ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত তিন হাজার ৯৬৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এর অধীনে ৯০৮টি সরকারি ও ৬১টি বেসরকারি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭২১টি প্রকল্প সফলভাবে সমাপ্ত হয়েছে। এ ছাড়া ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্লামেন্ট ফিসক্যাল ফ্রেমওয়ার্ক প্রণয়ন করা হয়, যা ২০২০ সালে হালনাগাদ করা হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলায় অভিযোজন ও প্রশমন কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টি সরকারের সব উন্নয়ন পরিকল্পনায় গুরুত্ব সহকারে স্থান পাচ্ছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সব সরকারি প্রকল্প প্রস্তাব মূল্যায়নের সময় আবশ্যিকভাবে জলবায়ু সংশ্লেষ বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।
বর্তমানে আমরা জলবায়ুসংশ্লিষ্ট ২৫টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বাজেটে জলবায়ুসংক্রান্ত বরাদ্দের পরিমাণ ও প্রকৃত ব্যয় নিরূপণ করছি। এ ছাড়া সম্প্রতি জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় গৃহীত প্রকল্পের সুষ্ঠু সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিসিডিপি গঠন করা হয়েছে।’
মন্ত্রী জানান, সামাজিক বনায়নসহ দেশব্যাপী বনায়ন কার্যক্রম ও বৃক্ষরোপণের ফলে বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ দেশের মোট আয়তনের ২২.৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে আটটি জাতীয় উদ্যান, ২০টি বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য, চারটি ইকোপার্ক, একটি উদ্ভিদ উদ্যান, দুটি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া (সোয়াচ অব নো-গ্রাউন্ড ও সেন্ট মার্টিন) এবং দুটি বিশেষ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এলাকাসহ ৩৭টি সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রকাশক : মাসুদ রানা সুইট । সম্পাদক : আবুল হাসনাত অমি । নগর সম্পাদক : ইফতেখার আলম বিশাল নির্বাহী সম্পাদক : রুবেল আহম্মেদ । মফস্বল সম্পাদক : মোস্তাফিজুর রহমান । ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নীলা সুলতানা । বার্তা সম্পাদক : -------------- । সহ-বার্তা সম্পাদক : আলিফ বিন রেজা । সহ-বার্তা সম্পাদক :
Copyright © 2024 Dainiksopnerbangladesh.com. All rights reserved.