মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, হাওর অঞ্চলের সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে হাওর অঞ্চল হবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এজন্য সুষ্ঠু পরিকল্পনা প্রণয়ন করে আমাদের হাওর অঞ্চলের সম্ভাবনা খুঁজে বের করতে হবে।
শুক্রবার (৮ মার্চ) ঢাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ গবেষণা ফাউন্ডেশন আয়োজিত হাওরের সম্ভাবনা : প্রাপ্তি ও সংকট উত্তরণের পথরেখা শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চল হচ্ছে জীব বৈচিত্র্যের এক অপার আধার। হাওরকেন্দ্রিক অর্থনীতির যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে তা কাজে লাগাতে বহুমুখী ও পরিকল্পিত উপায়ে উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। হাওর অঞ্চলের উন্নয়নকে জাতীয় উন্নয়নের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করা গেলে শেখ হাসিনার হাত ধরে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলে মাছের উৎপাদন মূলত ব্যাহত হয় স্থায়ী অভয়াশ্রমের অভাব, ক্ষতিকর চায়না জালের ব্যবহার, ডিম ওয়ালা মাছ ও পোনা নিধণ, ইজারা প্রথা, সেচ দিয়ে মাছ শিকার, জমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার এবং হাওরের গভীরতা কমে যাওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে পানিশূন্য হয়ে পড়ার কারণে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের তাগিদ দেন।
মন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চলে বোরোর আবাদ ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নের জন্য সঠিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি ভিত্তিতে করতে হবে। হাওর এলাকার জীবন ব্যবস্থায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ভিত্তি অনেকটা পানি বিজড়িত। পানির সাথে সম্পর্কিত কর্মকাণ্ড যেমন ধান চাষ, মাছ চাষ, হাঁস পালন, নৌকা যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে হবে।
তিনি বলেন, মা মাছ যখন ডিম দেয় তখন আমরা ধরে ফেলি। কারেন্ট জাল দিয়ে ছোট ছোট রেনুপোনা ধরে ফেলি। এসব বিষয়ে সচেতন করার জন্য আমাদের সামাজিক ক্যাম্পেইন করতে হবে। হাওরের অভয়াশ্রমগুলোর ব্যবস্থাপনা ভালোভাবে করতে হবে। তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে একত্রে বসে একটা পেপার ওয়ার্ক তৈরি করতে এসময় নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, আমরা সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে থেকেও প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমি আমরা পারি। করোনাসহ অনেক সমস্যা সমাধানে উন্নত বিশ্বের মালিক দাবিদারদের চেয়েও শেখ হাসিনা অনেক বেশি করতে সমর্থ হয়েছেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, হাওরের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে তেমনি নানাবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অতিবৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢলের কারণে মাছ চাষ ও বোরো ফসল উৎপাদন আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া প্রতিনিয়ত পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে বাহিত পলি জমে নদী ভরাট হওয়ায় নদীর পানি ধারণক্ষমতা কমে যাচ্ছে। তিনি এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট সব সরকারি বেসরকারি কর্তৃপক্ষকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।