Dhaka 10:47 pm, Saturday, 21 December 2024

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানে দুদিনে বন্ধ ২০ হাসপাতাল

সারা দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রাজধানীসহ সারা দেশে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার দুদিনের অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকায় ২০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও ৭ প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের অভিযান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

 

এদিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) একযোগে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। এই অভিযানে রোগী ভাগিয়ে নেওয়াসহ রোগীদের সঙ্গে নানা ধরনের প্রতারণা করার অভিযোগে দালাল চক্রের ৩৮ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হবে।

গতকাল দ্বিতীয় দিনের অভিযানে অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক দিয়ে ভুল অপারেশনে শামীমা আক্তার মুন্নি নামে এক নারী রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে উত্তরার হাই-কেয়ার কার্ডিয়াক ও নিউরো হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে দেখা গেছে, ওই হাসপাতালের কোনো লাইসেন্স নেই। ফলে হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. আহসানুল হকের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

এর আগে গত সোমবার পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য উত্তরার হাই-কেয়ার হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় শামীমা আক্তার মুন্নি নামে এক রোগীর। পরদিন মারা যান তিনি। তার ভাই মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, অস্ত্রোপচার যে চিকিৎসকের করার কথা ছিল তিনি করেননি। আরেকজন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন, যার ভুল চিকিৎসায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।

আটত্রিশ বছর বয়সী মুন্নির বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করে মুন্নির পরিবার। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টার নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে।

গতকাল দ্বিতীয় দিনের অভিযানের ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসান জানান, রাজধানীর ১০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের কেয়ার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক, সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজ হাসপাতালে সব ঠিক ছিল। শুধু তথ্য কর্মকর্তার নাম ও ছবি টানাতে বলা হয়েছে। শ্যামলীর আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কালার কোডেড বিন সঠিক না থাকায় মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। শ্যামলীর হাই-কেয়ার অর্থোপেডিকস ও জেনারেল হাসপাতালকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শোকজ করা হয়েছে। একই এলাকার এসবিএফ কিডনি কেয়ার সেন্টারে ফুলটাইম নেফ্রোলজি কনসালট্যান্ট নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পার্টটাইম কনসালট্যান্ট আছে। একই এলাকার ঢাকা ট্রমা সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ল্যাব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তরার লুবানা হাসপাতাল, উত্তরা ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও উত্তরা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করা হয়েছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযানে দুদিনে বন্ধ ২০ হাসপাতাল

আপলোড সময় : 07:10:57 pm, Saturday, 2 March 2024

সারা দেশে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। রাজধানীসহ সারা দেশে গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার দুদিনের অভিযানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন না থাকায় ২০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও ৭ প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার দ্বিতীয় দিনের অভিযান শেষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এসব তথ্য জানানো হয়।

 

এদিকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতাল, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে (পঙ্গু হাসপাতাল) একযোগে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব। এই অভিযানে রোগী ভাগিয়ে নেওয়াসহ রোগীদের সঙ্গে নানা ধরনের প্রতারণা করার অভিযোগে দালাল চক্রের ৩৮ সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হবে।

গতকাল দ্বিতীয় দিনের অভিযানে অন্য হাসপাতালের চিকিৎসক দিয়ে ভুল অপারেশনে শামীমা আক্তার মুন্নি নামে এক নারী রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে উত্তরার হাই-কেয়ার কার্ডিয়াক ও নিউরো হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে দেখা গেছে, ওই হাসপাতালের কোনো লাইসেন্স নেই। ফলে হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার সহকারী পরিচালক ডা. আহসানুল হকের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।

 

এর আগে গত সোমবার পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য উত্তরার হাই-কেয়ার হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় শামীমা আক্তার মুন্নি নামে এক রোগীর। পরদিন মারা যান তিনি। তার ভাই মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের অভিযোগ, অস্ত্রোপচার যে চিকিৎসকের করার কথা ছিল তিনি করেননি। আরেকজন চিকিৎসক অস্ত্রোপচার করেছেন, যার ভুল চিকিৎসায় তার বোনের মৃত্যু হয়েছে।

আটত্রিশ বছর বয়সী মুন্নির বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। এ ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করে মুন্নির পরিবার। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ওই হাসপাতালে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অভিযানে উত্তরার লুবানা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টার নামে আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে।

গতকাল দ্বিতীয় দিনের অভিযানের ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মঈনুল আহসান জানান, রাজধানীর ১০টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করা হয়েছে। এর মধ্যে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডের কেয়ার হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক, সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজ হাসপাতালে সব ঠিক ছিল। শুধু তথ্য কর্মকর্তার নাম ও ছবি টানাতে বলা হয়েছে। শ্যামলীর আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইসলাম ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কালার কোডেড বিন সঠিক না থাকায় মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। শ্যামলীর হাই-কেয়ার অর্থোপেডিকস ও জেনারেল হাসপাতালকে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে শোকজ করা হয়েছে। একই এলাকার এসবিএফ কিডনি কেয়ার সেন্টারে ফুলটাইম নেফ্রোলজি কনসালট্যান্ট নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পার্টটাইম কনসালট্যান্ট আছে। একই এলাকার ঢাকা ট্রমা সেন্টার ও স্পেশালাইজড হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক ল্যাব বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তরার লুবানা হাসপাতাল, উত্তরা ল্যাবএইড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও উত্তরা ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে সতর্ক করা হয়েছে।