স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর চলমান অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সচেতন নাগরিকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সংগঠনটি গতকাল সোমবার দেশব্যাপী পদযাত্রা ও সংহতি সমাবেশ করেছে। কালের কণ্ঠ’র প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর—
গতকাল সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে ছাত্রলীগের পদযাত্রা শুরু হয়। পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে সমাবেশ করেন দলটির নেতাকর্মীরা।
রাজু ভাস্কর্যে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঙ্গে ‘ফ্রি ফ্রি, প্যালেস্টাইন; ওয়ান টু থ্রি ফোর, জেনোসাইড নো মোর; ফ্রম দ্য রিভার টু দ্য সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’ প্রভৃতি স্লোগানে গলা মেলান নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের পাশে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের অবস্থান। যেসব দেশ বিভিন্ন সময় ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিপক্ষে ভেটো দিয়েছে, আজ ওই সব দেশের শিক্ষার্থীরাও ফিলিস্তিনিদের মুক্তির পক্ষে আন্দোলন করছে। যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনের কথা বলে, রাইট টু প্রটেস্টের কথা বলে, তাদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে গেছে।
ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছে, শিক্ষকরা লাঞ্ছিত হয়েছেন। স্বাধীন মতপ্রকাশের কারণে যারা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নির্যাতন করে, তাদের আমরা ধিক্কার জানাই।’
সাদ্দাম হোসেন আরো বলেন, ‘আমরা জানি গণহত্যার যন্ত্রণা কত বেশি, স্বাধীনতার জন্য অপেক্ষা কত কষ্টের। সে কারণে আমরা এই আন্দোলন গড়ে তুলেছি।
সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, ‘বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত—শাসক আর শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’ তাই বাংলাদেশ ছাত্রলীগও বিশ্বের শোষিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা বিশ্ব মোড়লদের বিরুদ্ধে গিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি হওয়া অন্যায়, অপরাধ, গণহত্যার কথা যে দৃঢ় কণ্ঠে বলেছেন, তা সত্যিই বিরল।’
বাংলাদেশে অধ্যয়নরত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী ইসহাক আহমেদ সমাবেশে উপস্থিত থেকে তাঁদের প্রতি অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, ‘গাজায় তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থী আছে। কিন্তু তারা বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারছে না এই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে।’
সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজিবুল ইসলাম, উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ প্রমুখ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিলের নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইন। সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হয়। তারপর কাঁঠালতলা, বিজ্ঞান অনুষদ, শাঁখারি বাজার, রায়সাহেব বাজার মোড় ঘুরে বাহাদুর শাহ পার্কের পাশ দিয়ে এসে ভিসি ভবনের সামনে শেষ হয়। মিছিল শেষে ভিসি ভবন চত্বরে সমাবেশ করেন তাঁরা।
নীলফামারী জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে দুপুরে নীলফামারী সরকারি কলেজ চত্বর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর সুপার মার্কেটের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুল হাসান শাহের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সহসভাপতি জয়দেব রায়, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ সরকার প্রমুখ। বক্তারা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর চলমান ইসরায়েলের হামলা, নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণার দাবি জানান।
দুপুর ১২টার দিকে ফরিদপুর শহরের বায়তুল আমান সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ চত্বর থেকে পদযাত্রাটি শুরু করে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা ছাত্রলীগ। পরে রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি শাখায় ছাত্র সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমেদ, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) ছাত্রলীগ গতকাল সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পদযাত্রা শুরু করে। একাডেমিক ভবন প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা চত্বরে এসে পদযাত্রাটি শেষ হয়। জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের সঙ্গে তারা ফিলিস্তিনের পতাকাও উত্তোলন করে।
এর পর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল্লাহর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. কামাল হোসেন, সহকারী প্রক্টর ড. মাসুদ রানাসহ বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) পদযাত্রা ও পতাকা উত্তোলন কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্রলীগ।
দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু হলের সামনে থেকে পদযাত্রাটি শুরু হয়ে প্রশাসন ভবন, দেবদারু রোড, বিজয় সড়ক এবং জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিডিয়া চত্বরে এসে শেষ হয়। পরে বাংলাদেশের পতাকার সঙ্গে স্বাধীন ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেন বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম। এ সময় তিন শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের পদযাত্রা বঙ্গবন্ধু স্কয়ার থেকে শুরু হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে গিয়ে শেষ হয়। পরে কলেজ চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের মাহমুদ শ্রাবণ প্রমুখ।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন কালের কণ্ঠ’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নীলফামারী, ফরিদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবাদদাতা]
প্রকাশক : মাসুদ রানা সুইট । সম্পাদক : আবুল হাসনাত অমি । নগর সম্পাদক : ইফতেখার আলম বিশাল নির্বাহী সম্পাদক : রুবেল আহম্মেদ । মফস্বল সম্পাদক : মোস্তাফিজুর রহমান । ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : নীলা সুলতানা । বার্তা সম্পাদক : -------------- । সহ-বার্তা সম্পাদক : আলিফ বিন রেজা । সহ-বার্তা সম্পাদক :
Copyright © 2024 Dainiksopnerbangladesh.com. All rights reserved.