Dhaka 11:27 pm, Tuesday, 24 December 2024
বেকিং নিউজ :
Logo বাঘায় অবৈধ পুকুর খননে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা Logo লালমোহনে ফুটপাতের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ অভিযান Logo বাউফলে সাদপন্থি তাবলীগ জামাতের নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল Logo বড়দিন উপলক্ষে বুধবার বন্ধ থাকবে বেনাপোল দিয়ে আমদানি-রপ্তানি Logo Tratar para Recursos Real en Casino con manga larga Facultad Logo গোদাগাড়ীতে রাত হলেই শুরু হয় পুকুর খননের মহাউৎসব,নিরব ভূমিকায় প্রশাসন Logo ময়মনসিংহে সরকারী দপ্তর থেকে বিদেশি পিস্তলসহ বিপুল অস্ত্র-মাদক উদ্ধার করেছে পুলিশ Logo রাজশাহী জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত-সভাপতি আসাদ-সম্পাদক আখতার Logo লালমোহন টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক ফল প্রকাশ ও অভিভাবক সমাবেশ Logo বাউফলে ফ্লিম্মি ষ্টাইলে ধান ও মাছ লুটের অভিযোগ

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট

রেল স্টেশনে কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই টিকিট কাটতে পারেন না। ফলে ট্রেন মিস করেন। আবার অনেকে টিকিট কাটতে না পেরে বিনা টিকিটেই ট্রেনে চড়েন। চেকিং হলে বলেন, কাউন্টারে ভিড় থাকায় টিকিট না কেটেই উঠতে বাধ্য হয়েছেন। এমন নানা অজুহাতে রেলে বিনা টিকিটে যাত্রীরা ভ্রমণ করছেন। এবার টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে রেল স্টেশনে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অনলাইনভিত্তিক প্রতিটি স্টেশনেই এ মেশিন স্থাপন করা হবে। রেলওয়ের এই উদ্যোগকে যাত্রীরা স্বাগত জানিয়েছেন। তবে টিকিট কাটতে অতিরিক্ত চার্জে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী যুগান্তরকে বলেন, রেলে বিনা টিকিটের যাত্রী রোধ এবং তাৎক্ষণিক ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা শুরুতে ১৫টি মেশিন স্থাপন করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি অনলাইনভিত্তিক স্টেশনে এ ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হবে। স্টেশন কাউন্টারে প্রায়ই ভিড় হয়। ভিড় এড়াতে এ মেশিন সহায়ক হবে। যাত্রীরা খুব সহজেই নিজের টিকিট নিজেই মেশিন থেকে ১৫ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে কাটতে পারবেন। এ ব্যাপারে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করবেন। রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আধুনিক এ মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সহজ ডটকম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের টিকিট নিজে কাটতে পারবেন। তবে এজন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে যে পরিমাণ চার্জ (২০ টাকা) দিতে হয়, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটলে একই পরিমাণ চার্জ কাটা হবে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।

রেলযাত্রীদের অনেকে বলছেন, এমন উদ্যোগ সত্যিই আনন্দের। তবে অতিরিক্ত চার্জ কাটার বিষয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যাত্রীরা বলছেন, টিকিটপ্রতি অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে কেন? এটা যাত্রীদের প্রতি অবিচার। একজন যাত্রী চারটি টিকিট কাটলে ৮০ টাকা চার্জ কেটে নেবে-এটা অনুচিত। এ প্রসঙ্গে রেলযাত্রী জোহায়ের ইবনে কলিম বলেন, কাউন্টারে স্বল্প সময়ে টিকিট পাওয়া যায় না বলে আমাদের মেশিনে ছুটতে হবে। অথচ এর জন্য অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। এটা আমাদের প্রতি অন্যায়। মেট্রোরেলে যাত্রীদের বড় অংশ মেশিনে টিকিট কাটে। তাদের কোনো অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে অনলাইনে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে যে ২০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়, সেটাও বিশ্বের কোথাও নেই। তিনি রেলের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, তবে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া যাবে না।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ট্রেনেই কমবেশি বিনা টিকিটের যাত্রী চড়ছেন। কিছু যাত্রীর কাছ থেকে জরিমানাও আদায় করতে দেখা গেছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনা টিকিটের যাত্রীকে খুব সহজেই স্টেশনে প্রবেশ ও বের হতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রামগামী যাত্রী ফিরোজ হোসেন বলেন, আসনবিহীন টিকিট কাটার জন্য দীর্ঘ সময় কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ততক্ষণে ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে যায়। অনেকে বাধ্য হয়েই টিকিট না কেটে ট্রেন উঠে পড়েন। এখন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করায় অল্প সময়ের মধ্যে সিট কিংবা সিটবিহীন টিকিট দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটতে পারব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, স্টেশনে থাকা ভেন্ডিং মেশিন থেকে চার্জবিহীন টিকিট কাটার দাবি জানাচ্ছেন যাত্রীরা। শুরুতে কমলাপুর স্টেশনে ৪টি, বিমানবন্দর স্টেশনে ২টি, চট্টগ্রাম স্টেশনে ২টি, সিলেট স্টেশনে ১টি, কক্সবাজার স্টেশনে ১টি, রাজশাহী স্টেশনে ২টি, খুলনা স্টেশনে ১টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে ১টি ও রংপুর স্টেশনে ১টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভেন্ডিং মেশিন বসানো স্টেশনগুলোয়ও মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এছাড়া যেসব স্টেশনে ব্যাপক ভিড় হয়, সেসব স্টেশনে একের অধিক মেশিন বসানো হবে। ভেন্ডিং মেশিনের সুবিধা হলো-এর মাধ্যমে যাত্রীরা অনলাইনেও টাকা দিতে পারবেন। অর্থাৎ রেলে টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের কাছে যদি খুচরা না থাকে, তাহলেও যাত্রীরা অনায়াসে টিকিট কাটতে পারবেন। তবে এ সুবিধা শুরুতে থাকছে না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যায়ক্রমে ভেন্ডিং মেশিন থেকে সরাসরি টাকা দিয়েও টিকিট কাটা যাবে।

রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির যুগান্তরকে বলেন, অনলাইনে যেভাবে টিকিট কাটা হয়, ঠিক সেভাবেই ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটা যাবে। তবে ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কাটা বেশ সহজ হচ্ছে। অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটা যাবে। এ পরিষেবার ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরু হলে অনেকটা ঝামেলা কমবে যাত্রীদের। তাছাড়া বিনা টিকিটের যাত্রীসংখ্যাও কমবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

About Author Information

জনপ্রিয়

বাঘায় অবৈধ পুকুর খননে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট

আপলোড সময় : 02:19:20 pm, Tuesday, 23 April 2024

রেল স্টেশনে কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে অনেকেই টিকিট কাটতে পারেন না। ফলে ট্রেন মিস করেন। আবার অনেকে টিকিট কাটতে না পেরে বিনা টিকিটেই ট্রেনে চড়েন। চেকিং হলে বলেন, কাউন্টারে ভিড় থাকায় টিকিট না কেটেই উঠতে বাধ্য হয়েছেন। এমন নানা অজুহাতে রেলে বিনা টিকিটে যাত্রীরা ভ্রমণ করছেন। এবার টিকিট কাটা নিশ্চিত করতে রেল স্টেশনে অটোমেটিক টিকিট ভেন্ডিং মেশিন বসানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অনলাইনভিত্তিক প্রতিটি স্টেশনেই এ মেশিন স্থাপন করা হবে। রেলওয়ের এই উদ্যোগকে যাত্রীরা স্বাগত জানিয়েছেন। তবে টিকিট কাটতে অতিরিক্ত চার্জে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। 

রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী যুগান্তরকে বলেন, রেলে বিনা টিকিটের যাত্রী রোধ এবং তাৎক্ষণিক ট্রেনে ভ্রমণ করা যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা শুরুতে ১৫টি মেশিন স্থাপন করেছি। পর্যায়ক্রমে দেশের সবকটি অনলাইনভিত্তিক স্টেশনে এ ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করা হবে। স্টেশন কাউন্টারে প্রায়ই ভিড় হয়। ভিড় এড়াতে এ মেশিন সহায়ক হবে। যাত্রীরা খুব সহজেই নিজের টিকিট নিজেই মেশিন থেকে ১৫ থেকে ৬০ মিনিটের মধ্যে কাটতে পারবেন। এ ব্যাপারে রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মচারীরা যাত্রীদের সহযোগিতা করবেন। রেলওয়ে অপারেশন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, আধুনিক এ মেশিনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে সহজ ডটকম। এর মাধ্যমে যাত্রীরা সহজেই নিজের টিকিট নিজে কাটতে পারবেন। তবে এজন্য অনলাইনে টিকিট কাটতে যে পরিমাণ চার্জ (২০ টাকা) দিতে হয়, ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটলে একই পরিমাণ চার্জ কাটা হবে। ইন্টারনেট ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ যাত্রীরা টিকিট কাটতে পারবেন।

রেলযাত্রীদের অনেকে বলছেন, এমন উদ্যোগ সত্যিই আনন্দের। তবে অতিরিক্ত চার্জ কাটার বিষয়ে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। যাত্রীরা বলছেন, টিকিটপ্রতি অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে কেন? এটা যাত্রীদের প্রতি অবিচার। একজন যাত্রী চারটি টিকিট কাটলে ৮০ টাকা চার্জ কেটে নেবে-এটা অনুচিত। এ প্রসঙ্গে রেলযাত্রী জোহায়ের ইবনে কলিম বলেন, কাউন্টারে স্বল্প সময়ে টিকিট পাওয়া যায় না বলে আমাদের মেশিনে ছুটতে হবে। অথচ এর জন্য অতিরিক্ত চার্জ দিতে হবে। এটা আমাদের প্রতি অন্যায়। মেট্রোরেলে যাত্রীদের বড় অংশ মেশিনে টিকিট কাটে। তাদের কোনো অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেয় না। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে অনলাইনে টিকিট কাটার ক্ষেত্রে যে ২০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়, সেটাও বিশ্বের কোথাও নেই। তিনি রেলের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, তবে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া যাবে না।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ট্রেনেই কমবেশি বিনা টিকিটের যাত্রী চড়ছেন। কিছু যাত্রীর কাছ থেকে জরিমানাও আদায় করতে দেখা গেছে। কিন্তু অধিকাংশ বিনা টিকিটের যাত্রীকে খুব সহজেই স্টেশনে প্রবেশ ও বের হতে দেখা গেছে।

চট্টগ্রামগামী যাত্রী ফিরোজ হোসেন বলেন, আসনবিহীন টিকিট কাটার জন্য দীর্ঘ সময় কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ততক্ষণে ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে যায়। অনেকে বাধ্য হয়েই টিকিট না কেটে ট্রেন উঠে পড়েন। এখন ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করায় অল্প সময়ের মধ্যে সিট কিংবা সিটবিহীন টিকিট দ্রুত সময়ের মধ্যে কাটতে পারব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, স্টেশনে থাকা ভেন্ডিং মেশিন থেকে চার্জবিহীন টিকিট কাটার দাবি জানাচ্ছেন যাত্রীরা। শুরুতে কমলাপুর স্টেশনে ৪টি, বিমানবন্দর স্টেশনে ২টি, চট্টগ্রাম স্টেশনে ২টি, সিলেট স্টেশনে ১টি, কক্সবাজার স্টেশনে ১টি, রাজশাহী স্টেশনে ২টি, খুলনা স্টেশনে ১টি, বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনে ১টি ও রংপুর স্টেশনে ১টি ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ভেন্ডিং মেশিন বসানো স্টেশনগুলোয়ও মেশিনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এছাড়া যেসব স্টেশনে ব্যাপক ভিড় হয়, সেসব স্টেশনে একের অধিক মেশিন বসানো হবে। ভেন্ডিং মেশিনের সুবিধা হলো-এর মাধ্যমে যাত্রীরা অনলাইনেও টাকা দিতে পারবেন। অর্থাৎ রেলে টিকিট কাটার জন্য যাত্রীদের কাছে যদি খুচরা না থাকে, তাহলেও যাত্রীরা অনায়াসে টিকিট কাটতে পারবেন। তবে এ সুবিধা শুরুতে থাকছে না। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, পর্যায়ক্রমে ভেন্ডিং মেশিন থেকে সরাসরি টাকা দিয়েও টিকিট কাটা যাবে।

রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির যুগান্তরকে বলেন, অনলাইনে যেভাবে টিকিট কাটা হয়, ঠিক সেভাবেই ভেন্ডিং মেশিন থেকে টিকিট কাটা যাবে। তবে ভেন্ডিং মেশিনে টিকিট কাটা বেশ সহজ হচ্ছে। অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কাটা যাবে। এ পরিষেবার ব্যবহার ব্যাপকভাবে শুরু হলে অনেকটা ঝামেলা কমবে যাত্রীদের। তাছাড়া বিনা টিকিটের যাত্রীসংখ্যাও কমবে।