নামি দামি শপিং মলে সাজানো এসব মোবাইল সেট দেখে বোঝাই যায় না, এসব নতুন না পুরোনো, বৈধ পথে না অবৈধ পথে আনা। প্রায়ই প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে ইতিপূর্বে গোয়াইনঘাট সীমান্ত পথে আসা মোবাইল ফোনের ৩০ লাখ টাকা মূল্যের একটি বড় চালান ধরা পড়ে, সেই সময় সীমান্ত লাইন ম্যান্ডেন করতো ছাত্রলীগ নেতা তুষার ও রাহেল সিরাজ। প্রশাসনের সাথে চুক্তিতে ভাটা পড়লেই আটক হত বড়-বড় মোবাইল চালান। শুধু মোবাইল চালান নয়,নন চ্যানেলে দামি-দামি ল্যাপটপও আসতো ওই সীমান্ত পথে। এগুলো বেশি বিক্রি হতো সিলেট নগরীর করিম উল্লা মার্কেটে, দোকানের তাড়িয়াতে উঠার পর বুঝে উঠা দায় কোনটি বৈধ কোনটি অবৈধ।
অন্য দিকে সিলেট নগরীর জনবহুল এলাকায় চলাচলকারীদের অনুসরণ করে পিছু নেয় মোবাইর ফোন চোর চক্রের সদস্যরা। সুযোগে দামি মোবাইলটি হাতিয়ে নেয়। অনেক সময় ওরা সিএনজি চালিত অটোর সহযাত্রী হয়ে মোবাইল সেটটি হাতিয়ে নেয়। সিএনজি অটোচালকদের সহযোগিতা থাকার বিষয়টিও ধরা পড়েছে।
এই চক্রে নারী সদস্যরাও রয়েছে। তারা কোনো সময় বোরকা পরে বা সাধারণ বেশেও বাসাবাড়িতে হানা দেয়। সুযোগে চট করে ঘরের ভেতরে ঢুকে হাতের কাছে রাখা মোবাইলটি প্রথমেই আল গুছে সরিয়ে ফেলে। কারো জিজ্ঞাসার মুখে পড়লে চট করে বলে ‘বাসা ভাড়া নিতে চাই’ অথবা যে কোনো একজনের নাম বলে জানতে চায় এটা ‘অমুকের বাসা’ কি না। নারী বলে কেউ তেমন সন্দেহ করে না। কিন্তু যখন মোবাইলটি খুঁজে পাওয়া যায় না। তখন বেশ দেরি হয়ে যায়। এ রকম একাধিক ঘটনার খবর পাওয়া যাচ্ছে। এসব অভিযোগ নিয়ে কেউ থানায় যাচ্ছে। আবার নানা ঝক্কি-ঝামেলার জন্য অনেকেই বিষয়টি চেপে যাচ্ছে। গত কয় দিন আগে নগরী থেকে একজন ফটো সাংবাদিকের মোবাইল ফোন চুরি হলে পরে আইএমইআই নম্বরের সূত্র ধরে ছাতক উপজেলা থেকে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে।
এদিকে অনেক সময় ওই চক্র আইএমইআই নম্বর বদল করে ফেলে। আবার মোবাইলের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রয় করে দেয় বলে তাদের আর ধরা যায় না। তবে এই পন্থাটিও কী ভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। সীমান্তের ওপার থেকে আসা বিভিন্ন ব্রান্ডের মোবাইল ফোন চোরাই পথে সিলেটের সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে। আর এসব সিলেট, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের নামিদামি শপিং মলে চলে যাচ্ছে। সিলেটের সীমান্ত এলাকা বিছানাকান্দি দিয়ে অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রায়ই প্রবেশ করেছে নামী দামি ব্যান্ডের মোবাইল ফোন। তবে বর্তমান সময়ে চোরাচালান চক্রের কাউকে আটক করা যাচ্ছে না।
একটি ব্যবসায়ী চক্র শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে চোরাই পথে মোবাইল এনে দেশের বিভিন্ন এলাকার মার্কেটে পাইকারি বিক্রি করে থাকে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এসব অবৈধ পথে আসা সীমান্ত লাইন প্রশাসন ম্যান্ডেন করত ছাত্রলীগ নেতা তুষার, রাহেল সিরাজ, কদমতলি পয়েন্টের মোবাইল ব্যবসায়ী জনি সহ বেশ কয়েক জন। ক্ষমতা পরিবর্তনের পর এরা এখন গাঁ ঢাকা দিয়েছে। কেউ দেশে আত্মগোপনে কেউ আবার ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।