Dhaka 5:05 pm, Saturday, 21 December 2024
বেকিং নিউজ :

লুঙ্গিতে রক্তের দাগে ধরা পড়ল খুনি, অতঃপর

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলে রিপন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১।

গ্রেপ্তার মো.জামাল উদ্দিন (৪০) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মো.মোস্তফা সওদাগরের ছেলে।

শনিবার (১ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ। এর আগে, গতকাল শুক্রবার ৩১ মে জেলার বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত মঙ্গলবার ২৮ মে রাতে উপজেলার চরমাকছুমুল গ্রামের মেঘনা নদী সংলগ্ন এলাকায় এই হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত মো.রিপন (৫২) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মৃত মো.হাবিব উল্ল্যার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে নিজ বাড়ি থেকে রিপন ও তার ভগ্নিপতি জামাল পৃথক সময়ে মেঘনা নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর ২৯ মে দুপুর ২টার দিকে নিহত রিপনের বোনের স্বামী জামালবাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফেরার পর তার স্ত্রী স্বামীর লুঙ্গিতে রক্ত লেগে থাকতে দেখে। এরপর জামাল ভোর বেলায় চট্টগ্রাম যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফিরে আসেনি।

নিহতের ছেলে আরমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত কিছু দিন আগে আমার ফুফা জামাল উদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরাসহ একটি মাছ ধরার ফিশিংবোট চুরি করে নিয়ে আসে। পরে বোটটি আমার বাবা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বোটটি মালিকের কেছে ফিরিয়ে দেয়। গত উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে এলাকায় আমার ফুফা কয়েটি চুরির ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি আমার বাবা স্থানীয়দের জানালে তারা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর ফুফা দুদিন জেল খেটে বেরিয়ে এসে আমার বাবাকে তার সহযোগী একই এলাকার দিদার, রবি, সোহাগ ও নিজামের সহযোগিতায় কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী এবং স্ত্রীর বড় ভাই ভিকটিম রিপনের সাথে তার বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ২৮ মে রাত ১১টার দিকে একটি লোহার রড নিয়ে উপজেলার শিউলী একরাম বাজার থেকে দক্ষিণে বেলাল কোম্পানী মসজিদের পাশে অন্ধকারে আড়ালে ওঁৎ পেতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিম ঘটনাস্থলে পৌঁছল জামাল তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে ভিকটিম রাস্তায় পড়ে যায়। তখন বাজার থেকে কিছু পথচারী ঘটনাস্থলের রাস্তা দিয়ে আসতে দেখে ভিকটিমকে টেনে রাস্তার পাশে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে আসামি জামাল বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে এসে তার পরিহিত জামা কাপড় পরিবর্তন করে রাত দেড়টার দিকে পুনারায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে রিপনের মৃত্যু নিশ্চিত দেখে লাশটি কাঁধে নিয়ে মেঘনা নদীর কিনারায় ফেলে দেয়। পরে তার স্ত্রীকে বিশেষ প্রয়োজনে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আরমান হোসেন বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা মামলায় ধৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চরজব্বর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

লুঙ্গিতে রক্তের দাগে ধরা পড়ল খুনি, অতঃপর

আপলোড সময় : 11:05:18 pm, Sunday, 2 June 2024

নোয়াখালীর সুবর্ণচরে জেলে রিপন হত্যার রহস্য উদঘাটন ও মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১।

গ্রেপ্তার মো.জামাল উদ্দিন (৪০) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মো.মোস্তফা সওদাগরের ছেলে।

শনিবার (১ জুন) রাত পৌনে ৯টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ। এর আগে, গতকাল শুক্রবার ৩১ মে জেলার বেগমগঞ্জের চৌরাস্তা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত মঙ্গলবার ২৮ মে রাতে উপজেলার চরমাকছুমুল গ্রামের মেঘনা নদী সংলগ্ন এলাকায় এই হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহত মো.রিপন (৫২) উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের চরমাকছুমুল গ্রামের মৃত মো.হাবিব উল্ল্যার ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ মে নিজ বাড়ি থেকে রিপন ও তার ভগ্নিপতি জামাল পৃথক সময়ে মেঘনা নদীতে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। এরপর ২৯ মে দুপুর ২টার দিকে নিহত রিপনের বোনের স্বামী জামালবাড়িতে ফিরে আসে। বাড়িতে ফেরার পর তার স্ত্রী স্বামীর লুঙ্গিতে রক্ত লেগে থাকতে দেখে। এরপর জামাল ভোর বেলায় চট্টগ্রাম যাচ্ছে বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ফিরে আসেনি।

নিহতের ছেলে আরমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গত কিছু দিন আগে আমার ফুফা জামাল উদ্দিন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরাসহ একটি মাছ ধরার ফিশিংবোট চুরি করে নিয়ে আসে। পরে বোটটি আমার বাবা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় বোটটি মালিকের কেছে ফিরিয়ে দেয়। গত উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে এলাকায় আমার ফুফা কয়েটি চুরির ঘটনা ঘটায়। বিষয়টি আমার বাবা স্থানীয়দের জানালে তারা তাকে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর ফুফা দুদিন জেল খেটে বেরিয়ে এসে আমার বাবাকে তার সহযোগী একই এলাকার দিদার, রবি, সোহাগ ও নিজামের সহযোগিতায় কুপিয়ে হত্যা করে মরদেহ মেঘনা নদীতে ফেলে দেয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে বলেন, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার স্ত্রী এবং স্ত্রীর বড় ভাই ভিকটিম রিপনের সাথে তার বিরোধ চলে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত ২৮ মে রাত ১১টার দিকে একটি লোহার রড নিয়ে উপজেলার শিউলী একরাম বাজার থেকে দক্ষিণে বেলাল কোম্পানী মসজিদের পাশে অন্ধকারে আড়ালে ওঁৎ পেতে থাকে। একপর্যায়ে ভিকটিম ঘটনাস্থলে পৌঁছল জামাল তার হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে ভিকটিম রাস্তায় পড়ে যায়। তখন বাজার থেকে কিছু পথচারী ঘটনাস্থলের রাস্তা দিয়ে আসতে দেখে ভিকটিমকে টেনে রাস্তার পাশে ডোবার পানিতে ফেলে দিয়ে আসামি জামাল বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে এসে তার পরিহিত জামা কাপড় পরিবর্তন করে রাত দেড়টার দিকে পুনারায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে রিপনের মৃত্যু নিশ্চিত দেখে লাশটি কাঁধে নিয়ে মেঘনা নদীর কিনারায় ফেলে দেয়। পরে তার স্ত্রীকে বিশেষ প্রয়োজনে চট্টগ্রামে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ বলেন, এ ঘটনায় নিহতের ছেলে আরমান হোসেন বাদী হয়ে চরজব্বর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। হত্যা মামলায় ধৃত আসামির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চরজব্বর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।