নাটোরের লালপুরে অনাবৃষ্টি ও তীব্র তাপদহে বিপর্যস্ত জনজীবন। অধিকাংশ গ্রামে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। এতে গ্রামগুলোর কয়েক হাজার পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। অনাবৃষ্টিতে আম, লিচুসহ রবিশস্যের ফলনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তাই বৃষ্টির আশায় ধুমধাম করে ব্যাঙের বিয়ে দিয়েছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে উপজেলার বিলমাড়িয়া ইউনিয়নের নাগশোষা গ্রামে বাড়ি বাড়ি চাল ডাল তুলে বিয়ের এআয়োজন করা হয়। সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের বিশ্বাস ব্যাঙের সঙ্গে ব্যাঙের বিয়ে দিলেই অনাবৃষ্টি কেটে যাবে।
আয়োজকরা জানান, তীব্র গরমে নাভিশ্বাস অবস্থা। টিউবওয়েলে পানি উঠছে না, চাষাবাদের জন্যও পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে আম ও লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। অতিরিক্ত সেচের কারণে ফসলের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। একারণে যাতে বৃষ্টি হয়, সে জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত কুমার ও রবীন্দ্রনাথ দাস বলেন, সনাতন রীতি অনুযায়ী অনেক বছর ধরে এই প্রথা চালু আছে। অনাবৃষ্টি হওয়ায় এই গ্রামের সবাই মিলে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের কাছে এক প্রকার বিশ্বাস ব্যাঙের বিয়ে দিলেই বৃষ্টি হবে। সেই আশাতেই ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে ভগবানের কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হয়েছে।
এদিকে লালপুর উপজেলা জনপ্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রবিন হোসেন বলেন, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পানির লেয়ার পরীক্ষা করে দেখা গেছে গড়ে ৩২ ফিট নিচে নেমে গেছে। যা সাধারণত ২০/২২ ফিট থাকে। কোথাও যেন সুপেয় পানি সংকট না থাকে এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, চলতি মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো বৃষ্টির দেখা মেলেনি। বৃষ্টির অভাবে রবিশস্য এবং আম, লিচুর গুটি ঝরে যাচ্ছে। খরা মোকাবেলায় কৃষি বিভাগ থেকে ঘন ঘন সেচ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।