ডলারের চাহিদা মেটানোর অন্যতম উৎস প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া লেগেছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে কমে আসছে। চলতি মাসের প্রথম ২১ দিনে ১৯১ কোটি ৪৩ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এই হিসাবে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৯ কোটি ১২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স।
রবিবার (২৩ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, চলতি জুন মাসের প্রথম ২১ দিনে দেশে এসেছে ১৯১ কোটি ৪৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর গত মে, এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারির প্রথম ২১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল যথাক্রমে ১৫৬ কোটি ৬৬ লাখ, ১৩৫ কোটি ৮৭ লাখ, ১৩৫ কোটি ৩ লাখ, ১৫০ কোটি ৩৬ লাখ ও ১৪২ কোটি ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে চলতি মাসে অনেক বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।
ধর্মীয় উৎসবগুলোকে সামনে রেখে দেশের অভিবাসী কর্মীরা সাধারণত বেশি অর্থ পাঠান। চলতি মাসের শুরু থেকেই কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে দেশে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাঠিয়েছেন তারা। ফলে বেড়েছে দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, ঈদকে কেন্দ্র করে প্রবাসীরা বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। পাশপাশি বাড়তি প্রণোদনা পাওয়ায় বৈধ পথে বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এছাড়া ডলার রেটও প্রভাব ফেলছে প্রবাসী আয়ে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে জুনে বিপুল পরিমাণ রেমিট্যান্স আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে বৈধ চ্যানেলে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় দেশে পাঠালে প্রতি ১০০ টাকায় প্রণোদনার সঙ্গে প্রবাসীদের বাড়তি আরো আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি অর্থ প্রদানের নির্দেশনা কার্যকর করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারের দেয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি অতিরিক্ত আরো আড়াই শতাংশ অর্থ বেশি দিয়ে রেমিট্যান্স কিনতে পারবে ব্যাংকগুলো।
এদিকে জুনের ২১ দিনে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৪ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে ৫ কোটি ২৪ লাখ ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪১ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার ও বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৪৮ লাখ ৭০ ডলার রেমিট্যান্স।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরো জানায়, জুনের ১৫ থেকে ২১ তারিখ পর্যন্ত দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। গত ৮ থেকে ১৪ জুন দেশে এসেছে ৯২ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স। আর জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছিলেন ৭২ কোটি ৬২ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স।
এর আগে গত মে মাসে দেশে এসেছে চলতি অর্থবছরের সর্বোচ্চ ২২৫ কোটি ৩৮ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। আর এপ্রিল, মার্চ, ফেব্রুয়ারি ও জানুয়ারিতে দেশে যথাক্রমে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০৪ কোটি ৩০ লাখ ৬০ হাজার, ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ৫০ হাজার, ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ও ২১০ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স।