Dhaka 12:50 pm, Sunday, 22 December 2024

রাজশাহীতে ৪০ লাখ টাকা না দিলে ব্যবসায়িক পার্টনারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ

ইফতেখার আলম বিশাল  : রাজশাহীতে সাইদুর রহমান (রানা) এবং মো: আলাউদ্দিন দীর্ঘ ৮ বছর ধরে যৌথভাবে (পার্টনারশীপে) পুকুর লীজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু সাইদুর রহমান হঠাৎ করেই মো: আলাউদ্দিনকে ব্যবসায়িক পার্টনার (অংশীদার) হিসেবে অস্বীকার করে উল্টো তার কাছেই ৪০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার এবং মিথ্যা মামলায় প্রশাসনের লোক দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। যদিও সাইদুর রহমান তার কাছ থেকে কোনো টাকাই পাবেন না। বরং আলাউদ্দিনই সাইদুরের কাছে ব্যবসায়িক লভ্যাংশের ২৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পাওনা রয়েছেন। এ নিয়ে আলাউদ্দিন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত সাইদুর রহমান নগরীর রাজপাড়া থানাধীন মহিষবাথান পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা। আর গোদাগাড়ী উপজেলার ভানকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হলেন ভুক্তভোগী অভিযোগকারী আলাউদ্দিন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে মোঃ আলাউদ্দীন বলেন, আমার সাথে আমার ব্যবসায়িক পার্টনার সাইদুর রহমান রানার ষ্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিনামা হয়। এতে ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর নোটারী পাবলিক এফিডেভিট রেজিস্টেশন নংঃ ০০০০৮৯৯৯ এ ১০ বছরের ব্যবসায়িক চুক্তিনামা সম্পন্ন হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন দেওপাড়া মৌজায় ৪০ দশমিক ৩১ বিঘা জমি পুকুর খনন করা হয় মাছ চাষের জন্য। এরপর আমরা দুইজন পার্টনার মিলে ১০ বছরের জন্য নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আক্কাস আলী ও এসএম পারভেজ নামে দুই ব্যক্তিকে উক্ত পুকুরটি লীজ দিই। কিন্তু লীজ গ্রহীতারা তাদের মেয়াদ পূর্তির আগেই প্রথম দুই বছর ব্যবসা করে আমাদেরকে উক্ত পুকুরটি বুঝিয়ে দেয়। এরপর আমরা দুই পার্টনার আবার ৫ বছরের জন্য মৌখিকভাবে গোলাম মোক্তাদির নামে এক ব্যক্তিকে লীজ দিই। পরে ১০ বছরের চুক্তিনামা অনুযায়ী শুরু থেকে পরবর্তী ৭ বছরের হিসাব অর্থাৎ (২ বছর ও ৫ বছর) চূড়ান্ত করা হয়। চুড়ান্ত হিসাব শেষে ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪ টাকা লভ্যাংশ দাঁড়ায়। সেই লভ্যাংশের পুরোটাই সাইদুর রহমান নিজের কাছে রেখে দেন। অথচ উক্ত লভ্যাংশের অর্ধেক আমার পাবার কথা।
অভিযোগে আলাউদ্দিন আরো বলেন, আমাকে লভ্যাংশের অর্ধেক টাকা না দিয়ে পুরো লভ্যাংশই তিনি নিজের কাছে রেখে দেন। লভ্যাংশের অর্ধেক টাকা নেয়ার জন্য তার বাড়িতে গেলে তিনি আমার সাথে দুর্ববহার করেন এবং আমাকে ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে অস্বীকার করে হুমকি দিয়ে বলেন এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে অসুবিধা আছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন পর্যায়ে আমার লোক আছে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিব। না হলে প্রাণে মেরে ফেলব। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইদুর রহমান রান বলেন, আমিও আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। এছাড়া এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাইনা। আইনিভাবে বিষয়টি দেখবো বলে জানান, তিনি।
গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি প্রেমতলি ফাড়ির এসআই শামিউল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

রাজশাহীতে ৪০ লাখ টাকা না দিলে ব্যবসায়িক পার্টনারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকির অভিযোগ

আপলোড সময় : 01:24:28 am, Tuesday, 24 September 2024
ইফতেখার আলম বিশাল  : রাজশাহীতে সাইদুর রহমান (রানা) এবং মো: আলাউদ্দিন দীর্ঘ ৮ বছর ধরে যৌথভাবে (পার্টনারশীপে) পুকুর লীজ নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু সাইদুর রহমান হঠাৎ করেই মো: আলাউদ্দিনকে ব্যবসায়িক পার্টনার (অংশীদার) হিসেবে অস্বীকার করে উল্টো তার কাছেই ৪০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। শুধু তাই নয়, টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার এবং মিথ্যা মামলায় প্রশাসনের লোক দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিবেন বলে হুমকি দিয়েছেন। যদিও সাইদুর রহমান তার কাছ থেকে কোনো টাকাই পাবেন না। বরং আলাউদ্দিনই সাইদুরের কাছে ব্যবসায়িক লভ্যাংশের ২৫ লাখ ৩৯ হাজার টাকা পাওনা রয়েছেন। এ নিয়ে আলাউদ্দিন রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত সাইদুর রহমান নগরীর রাজপাড়া থানাধীন মহিষবাথান পূর্ব পাড়া এলাকার বাসিন্দা। আর গোদাগাড়ী উপজেলার ভানকাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হলেন ভুক্তভোগী অভিযোগকারী আলাউদ্দিন।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে মোঃ আলাউদ্দীন বলেন, আমার সাথে আমার ব্যবসায়িক পার্টনার সাইদুর রহমান রানার ষ্ট্যাম্পে লিখিত চুক্তিনামা হয়। এতে ২০১৫ সালের ২৯ নভেম্বর নোটারী পাবলিক এফিডেভিট রেজিস্টেশন নংঃ ০০০০৮৯৯৯ এ ১০ বছরের ব্যবসায়িক চুক্তিনামা সম্পন্ন হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানাধীন দেওপাড়া মৌজায় ৪০ দশমিক ৩১ বিঘা জমি পুকুর খনন করা হয় মাছ চাষের জন্য। এরপর আমরা দুইজন পার্টনার মিলে ১০ বছরের জন্য নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আক্কাস আলী ও এসএম পারভেজ নামে দুই ব্যক্তিকে উক্ত পুকুরটি লীজ দিই। কিন্তু লীজ গ্রহীতারা তাদের মেয়াদ পূর্তির আগেই প্রথম দুই বছর ব্যবসা করে আমাদেরকে উক্ত পুকুরটি বুঝিয়ে দেয়। এরপর আমরা দুই পার্টনার আবার ৫ বছরের জন্য মৌখিকভাবে গোলাম মোক্তাদির নামে এক ব্যক্তিকে লীজ দিই। পরে ১০ বছরের চুক্তিনামা অনুযায়ী শুরু থেকে পরবর্তী ৭ বছরের হিসাব অর্থাৎ (২ বছর ও ৫ বছর) চূড়ান্ত করা হয়। চুড়ান্ত হিসাব শেষে ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৪ টাকা লভ্যাংশ দাঁড়ায়। সেই লভ্যাংশের পুরোটাই সাইদুর রহমান নিজের কাছে রেখে দেন। অথচ উক্ত লভ্যাংশের অর্ধেক আমার পাবার কথা।
অভিযোগে আলাউদ্দিন আরো বলেন, আমাকে লভ্যাংশের অর্ধেক টাকা না দিয়ে পুরো লভ্যাংশই তিনি নিজের কাছে রেখে দেন। লভ্যাংশের অর্ধেক টাকা নেয়ার জন্য তার বাড়িতে গেলে তিনি আমার সাথে দুর্ববহার করেন এবং আমাকে ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে অস্বীকার করে হুমকি দিয়ে বলেন এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে অসুবিধা আছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন পর্যায়ে আমার লোক আছে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিব। না হলে প্রাণে মেরে ফেলব। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাইদুর রহমান রান বলেন, আমিও আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি। এছাড়া এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাইনা। আইনিভাবে বিষয়টি দেখবো বলে জানান, তিনি।
গোদাগাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনিরুল ইসলাম অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগটি প্রেমতলি ফাড়ির এসআই শামিউল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।