রাজশাহীতে বিশ্বনন্দিত সংগীতশিল্পী, প্লেব্যাক সম্রাট, কন্ঠরাজ, এন্ড্রু কিশোরের ৬৯ তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে রাজশাহী মহানগরীর সি এন্ড বি মোড় এলাকায় সার্কিট হাউস রোডের পূর্ব পাশে খ্রিস্টান কবরস্থানে তার সমাধিতে, জন্মদিন উপলক্ষে নন্দন সাহিত্য একাডেমীসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয় ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নন্দন সাহিত্য একাডেমি প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লেখক ও সংগঠক শেখ সাইদুর রহমান সাইদ, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ও নন্দন সাহিত্য একাডেমির আজীবন সদস্য বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক অধ্যাপক আবু সালে মোঃ ফাত্তাহ,
সুরকার গীতিকার ও আবৃত্তিকার শাহাদাত আলম বকুল, নন্দন সাহিত্য একাডেমীর আজীবন সদস্য ক্রীড়া সংগঠক আলতাফ হোসেন, বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের সংগীত শিল্পী বেলাল উদ্দিন, সাউথিয়া জামান মিম সহ আরো অনেক সাংস্কৃতিক কর্মী।
এন্ড্রু কিশোর কুমার বাড়ৈ, সংগীত জগতে মঞ্চনাম এন্ড্রু কিশোর হিসেবেই বেশি পরিচিত। ০৪ নভেম্বর ১৯৫৫ তার জন্ম। তিনি রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার মহিষবাথান এলাকায় খ্রিষ্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশের বহু চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন, যে’জন্য তিনি ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ নামে পরিচিত। তার সবচেয়ে জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে “জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প”, “হায়রে মানুষ রঙ্গীন ফানুস”, “ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে”, “আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি”, “আমার বুকের মধ্যে খানে”, “আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন”, ” জীবনের গল্প, আছে বাকি অল্প,, ইত্যাদি।
এন্ড্রু কিশোর ছয় বছর বয়স থেকে সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুল, রবীন্দ্র, লোকসঙ্গীত ও দেশাত্মবোধক গান শাখায় তালিকাভুক্ত হন। চলচ্চিত্রে তার প্রথম গান মেইল ট্রেন (১৯৭৭) চলচ্চিত্রের “অচিনপুরের রাজকুমারী নেই”। তিনি বড় ভাল লোক ছিল (১৯৮২) চলচ্চিত্রের “হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস” গানের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে তার প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি সারেন্ডার (১৯৮৭), ক্ষতিপূরণ (১৯৮৯), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), কবুল (১৯৯৬), আজ গায়ে হলুদ (২০০০), সাজঘর (২০০৭) ও কি যাদু করিলা (২০০৮) চলচ্চিত্রের গানের জন্য আরও সাতবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
এছাড়া তিনি পাঁচবার বাচসাস পুরস্কার ও দুইবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার লাভ করেন। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক (মরণোত্তর), ২০২৪ ভূষিত করে। এছাড়াও তিনি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন।