বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ‘দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার গঠনের দুই মাসের মাথায় রবিবার (৩ মার্চ) শুরু হচ্ছে জেলা প্রশাসক সম্মেলন; যা সচরাচর ‘ডিসি সম্মেলন’ নামেই পরিচিত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ প্রেক্ষাপটে নতুন সরকারের লক্ষ্য ও করণীয় সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হবে চার দিনব্যাপী এ বছরের ডিসি সম্মেলনে; যা চলবে ৬ মার্চ (বুধবার) পর্যন্ত।
বাৎসরিক এই সম্মেলনে দেশের ৬৪টি জেলার প্রশাসক ও আটটি বিভাগের বিভাগীয় কমিশনাররা অংশ নেবেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনাসহ তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন ডিসিরা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে কার্য-অধিবেশনও রয়েছে তাদের। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা এবারই প্রথমবারের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও চার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গেও বৈঠক করবেন। এ ছাড়া স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠানও হয়ে থাকে এই সম্মেলনে।
তবে রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার কথা রয়েছে। তিনি দেশের বাইরে গেলে এবার ডিসিদের সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ হবে না। উল্লেখ্য, গত বছর ২০২৩ সালে তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হয়েছিল ২৪ জানুয়ারি, আর শেষ হয় ২৬ জানুয়ারি। তখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন মো. আব্দুল হামিদ। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০২৩ সালের ২৪ এপ্রিল শপথ নেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে তথ্য জানা গেছে, ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন শনিবার বিকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অনুবিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আগামী ৩ মার্চ (রবিবার) সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত বছরের মতো এবারও জেলা প্রশাসক সম্মেলনের মূল অনুষ্ঠান কার্য-অধিবেশনগুলো অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১১ জানুয়ারি নতুন মন্ত্রিসভা শপথের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবার আওয়ামী লীগ সরকারের যাত্রা শুরু হয়। জানা গেছে, নতুন সরকারকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা, কৃষিপণ্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোয় জোর দিতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের সরকারের লক্ষ্য ও করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গত ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠকেও এ বিষয়ে স্ব-স্ব করণীয় নির্ধারণ করে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সিদ্ধান্ত মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের সঙ্গে ওৎপ্রোতভাবে জড়িত জেলা প্রশাসকরা।