নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে মন্দিরগুলোতে জ্বলছে লাল সবুজ বাতি। তোরণ নির্মাণের পাশাপাশি কাঁশফোটা শরতের পরিপূর্ণ রুপ দিতে মন্দিরের প্রতিমাগুলিকে সাজানো হয়েছে অপরুপ সাজে। ঢাকিরা বাজাচ্ছে ঢোল। গানের তালে তালে চলছে নৃত্য। পুরোহিতরা ব্যস্ত সময় পার করছেন পূজো অর্চনা করে মন্দিরে মন্দিরে সাটানো হয়েছে জরুরি প্রয়োজনীয় মোবাইল নম্বর সম্বলিত ফেস্টুন, আযানের সময় জানান দিতে লাগানো হয়েছে আযান ও নামাজের সময়সূচি। নিছিদ্র নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। সুষ্ঠু, সুন্দর ও নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে উপজেলা প্রশাসন। ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। বুধবার (০৯ অক্টোবর) সকাল ৯টা ১০ মিনিটে স্ব স্ব মন্দিরে বেলগাছের নিচে ঘট স্থাপন করে ষোড়শ উপাচারে ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভে ষষ্ঠী পূজা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সপ্তমী, শুক্রবার (১১ অক্টোবর) অষ্টমী আর শনিবার (১২ অক্টোবর) হবে মহানবমীর পূজা। পঞ্জিকা মতে, এবার মহানবমী পূজার পরই দশমী বিহিত পূজা হবে। এবার উপজেলায় ১৫ টি মন্দির ও মণ্ডপে দূর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে।
যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় মন্দিরে মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী রয়েছেন সতর্ক অবস্থানে।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যার পরে শারদীয় উৎসবের খবর নিতে উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা ও থানা কর্মকর্তা ওসি আব্দুল হাননান। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আনসার ভিডিবি কর্মকর্তা রাজিব, পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি রনোজিত কুমার রতন।
বিভিন্ন মন্দির পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকগন। প্রতি মন্দিরে দ্বায়িত্বে নিয়োজিত আনসার সদস্য, গ্রাম পুলিশ সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা যথাযথভাবে তাদের দ্বায়িত্ব পালন করছেন তা সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে। পুরোদমে চলছে শারদীয় উৎসব আনুষ্ঠানিকতা। পরিবেশ পরিস্থিতি শান্ত আছে। এবারের শারদীয় দূর্গা পূজা উৎসব পালনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি ও জামায়াতের স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন ফলে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা নেই বলে আশা প্রকাশ করছেন উপজেলা প্রশাসন সেইসাথে মন্দিরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল হাননান বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের শারদীয় দূর্গোৎসব উপলক্ষে ব্যাপক নিরাপত্ততামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা জানান, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ৫দিন ব্যাপী দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে আশা করছি এখানে নিরাপদ এবং নির্বিঘ্নে শারদীয় দূর্গা উৎসব সম্পন্ন হবে।
সনাতনী শাস্ত্র অনুযায়ী, এ বছর দেবী দুর্গার আগমন হবে দোলায় বা পালকিতে। পালকি বা দোলায় দেবীর আগমন বা গমন হলে এর ফল হয় মড়ক। খাদ্যশস্যে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হবে ও রোগব্যাধি বাড়বে। এ ছাড়া দেবী স্বর্গে গমন করবেন ঘোটকে বা ঘোড়ায়। শাস্ত্র মতে, দেবীর গমন বা আগমন ঘোটকে হলে ফলাফল হয় ছত্রভঙ্গ। এটা সামাজিক ও রাজনৈতিক এলোমেলো অবস্থাকে ইঙ্গিত করে। উচু-নিচুর বিভেদ ভুলে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত করে মহাসম্মিলন ঘটনো হয় বলে এ পূজাকে বলা হয় সার্বজনীন পূজা। আর শরৎকালে হয় বলে বলা হয় শারদীয় উৎসব।