সরকারি প্রক্রিয়ায় ভোগ্যপণ্য আমদানির লক্ষ্যে আজ রাশিয়ার সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আরিফুল হাসান, পিএসসি এবং রাশিয়ার পক্ষে দেশটির রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রদিনতর্গর মহাপরিচালক আন্দ্রে গোলোভানবের স্বাক্ষর করার কথা রয়েছে।
চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, দেশে পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে টিসিবির মাধ্যমে আমরা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য আমদানির উদ্যোগ নিয়েছি। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান প্রদিনতর্গের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি হচ্ছে।
চুক্তিতে আগ্রহী প্রদিনতর্গ রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশে জি টু জি ভিত্তিতে রাসায়নিক সার ও খাদ্যশস্য রপ্তানি করে আসছে। চুক্তির খসড়ায় বিভিন্ন ধরনের মসুর, মোটর ডালজাতীয় পণ্য, সূর্যমুখী তেলসহ অন্যান্য ভোগ্যপণ্য সরবরাহের কথা উল্লেখ রয়েছে। সরকারিভাবে টিসিবির মাধ্যমে পণ্য আমদানির উল্লেখ থাকলেও এই চুক্তির আওতায় বেসরকারি সংস্থা বা ব্যক্তিও রাশিয়া থেকে ভোগ্যপণ্য আমদানির সুযোগ পাবে। ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে এই চুক্তি। বর্তমানে দেশের ১ কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী মূল্যে খাদ্যসহায়তা দিচ্ছে সরকার। প্রতিযোগিতামূলক দামে টিসিবির মাধ্যমে রাশিয়া থেকে ভোগ্যপণ্য আনতে পারলে এ খাতে সরকারের ভর্তুকি হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সরকার দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ লক্ষ্যে ভারত, মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ভোগ্যপণ্য আমদানির বিষয়ে আলোচনা চলছে। এ পরিস্থিতিতে রাশিয়াও চাইছে বাংলাদেশে ভোগ্যপণ্য রপ্তানি করতে। সে কারণেই দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর হচ্ছে। সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাইয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশে খাদ্যপণ্য রপ্তানির আগ্রহ প্রকাশ করে প্রথম চিঠি দেয় রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান প্রদিনতর্গ। ওই চিঠির সূত্র ধরে গত অক্টোবরে ‘জি টু জি’ প্রক্রিয়ায় খাদ্যপণ্য রপ্তানির জন্য এমওইউ করার প্রস্তাব দেয় দেশটি। তবে সেই সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে সরকারের ব্যস্ততার কারণে এ বিষয়ে আলোচনা বেশিদূর এগোয়নি। নির্বাচন শেষে নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রদিনতর্গ আবারও চুক্তির তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠায়। এই চিঠিতে প্রতিষ্ঠানটি ১০ মার্চ চুক্তি করার বিষয়টি উল্লেখ করে।