Dhaka 10:58 am, Thursday, 26 December 2024

ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় ৪ জনের মৃত্যু

কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিপর্যস্ত কুমিল্লা। বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। চলমান বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজন মাথায় গাছ পড়ে মারা গেছেন। 

মৃতরা হলেন- নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা শহরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪) এবং লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী জানান, বুধবার রাতে মাছ মারতে গিয়ে স্থানীয় একটি সেতুর নিচে তলিয়ে যান নাঙ্গলকোটের দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী। প্রবল স্রোতে হারিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে তা মেহ ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাফি (১৫) নামে কুমিল্লা নগরের এক কিশোর মারা যায়। কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক যোবায়ের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

   

চৌদ্দগ্রামে বন্যার পানিতে মাছ ধরার সময় গাছ পড়ে শাহাদাত হোসেন (৩৪) নামে এক প্রবাসী মারা যান। বুধবার সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া (আদর্শ গ্রাম) পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এর আগে গত সোমবার বিকেলে সোহরাব হোসেন নামে এক আইনজীবী বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। কুমিল্লা নগরীর সালাউদ্দিন মোড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রেখে বের হলে বৃষ্টির পানিতে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে তিনি মারা যান। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সবারই সতর্ক থাকা উচিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলমান বন্যায় দুর্গতদের সহায়তায় কাজ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মানুষদেরকে  বার বার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ করছি।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলায় ১৭টি চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। উপজেলা চিকিৎসক দল থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ভয়াবহ বন্যায় কুমিল্লায় ৪ জনের মৃত্যু

আপলোড সময় : 08:18:49 pm, Thursday, 22 August 2024

কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বিপর্যস্ত কুমিল্লা। বন্যা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। চলমান বন্যায় কুমিল্লায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন বন্যার পানিতে তলিয়ে, একজন বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এবং একজন মাথায় গাছ পড়ে মারা গেছেন। 

মৃতরা হলেন- নাঙ্গলকোট পৌরসভার দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী (৪৫), কুমিল্লা শহরের ছোট এলাকার কিশোর রাফি (১৫), চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সোনাকাটিয়া গ্রামের কানু মিয়ার ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৪) এবং লাকসামে পানিতে তলিয়ে মারা যাওয়া শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। 

স্থানীয়দের বরাত দিয়ে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেবাশীষ চৌধুরী জানান, বুধবার রাতে মাছ মারতে গিয়ে স্থানীয় একটি সেতুর নিচে তলিয়ে যান নাঙ্গলকোটের দাউদপুর এলাকার কেরামত আলী। প্রবল স্রোতে হারিয়ে গেলে স্থানীয় লোকজন তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে তা মেহ ভেসে ওঠে। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রাফি (১৫) নামে কুমিল্লা নগরের এক কিশোর মারা যায়। কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক যোবায়ের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

   

চৌদ্দগ্রামে বন্যার পানিতে মাছ ধরার সময় গাছ পড়ে শাহাদাত হোসেন (৩৪) নামে এক প্রবাসী মারা যান। বুধবার সকালে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সোনাকাটিয়া (আদর্শ গ্রাম) পূর্বপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ত্রিনাথ সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এর আগে গত সোমবার বিকেলে সোহরাব হোসেন নামে এক আইনজীবী বৃষ্টির মধ্যে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। কুমিল্লা নগরীর সালাউদ্দিন মোড়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রেখে বের হলে বৃষ্টির পানিতে পড়ে থাকা বৈদ্যুতিক তারে জড়িয়ে তিনি মারা যান। কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় সবারই সতর্ক থাকা উচিত। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চলমান বন্যায় দুর্গতদের সহায়তায় কাজ চলছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মানুষদেরকে  বার বার নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ করছি।

কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. নাছিমা আক্তার বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলায় ১৭টি চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। উপজেলা চিকিৎসক দল থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে চিকিৎসক দল গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও খাওয়ার স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে।