বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি
বড়াইগ্রামে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে শামীম সরদার (২২) নামে এক যুবককে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে, হাত-পায়ের নখ উপড়ে গুরুতর জখম করা হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় আহত অপর যুবক সোহান হোসেন (১৮) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে জোনাইল বাজারের হরিতকি তলায় মা ডেকোরেটর এন্ড সাউন্ড সিস্টেম নামে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। নিহত শামীম উপজেলার বড়াইগ্রাম ইউনিয়নের পিওভাগ গ্রামের সুলতান সরদারের ছেলে এবং সোহান পাশের জোনাইল ইউনিয়নের বোর্ণী গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ রাতেই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ডেকোরেটর মালিক পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের মৃত করম আলীর ছেলে মুক্তার হোসেন (৫০) ও তার ছেলে সুমন আলী (২৬) কে আটক করেছে। নিহত শামীমের ২২ মাস বয়সের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে ডেকোরেটরের মালপত্র একটি অনুষ্ঠানে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে ভ্যানচালক শামীমকে মোবাইলে ডেকে নেয়। পরে মাসখানেক আগে ওই ডেকোরেটরের মালামাল চুরির অপবাদ দিয়ে মুক্তার ও তার ছেলে সুমনসহ ৬-৭ জন যুবক শামীমকে ঘরের ভেতরে আটকে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে। এ সময় তারা ডেকোরেটর ঘরে থাকা ভাত রান্না করার লোহার হাতা (সান্টা) ও হাতুড়ি দিয়ে শামীমকে মারপিটসহ তার অন্ডকোষে গুরুতর জখম করে, প্লাস দিয়ে তার নখ উপড়ে ফেলে। তাদের মারপিটে শামীমের ডান পা ভেঙ্গে যাওয়াসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ক্ষতের সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বড়াইগ্রাম হাসপাতালে এবং পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমের মৃত্যু হয়। বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার শফিউল আযম খাঁন জানান, এই ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান সরদার বাদী হয়ে মামলা করলে রাতে মুল অভিযুক্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের আটকের চেষ্টা চলছে।