Dhaka 6:27 pm, Saturday, 21 December 2024
বেকিং নিউজ :
Logo রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন নিহত Logo দাউদকান্দির বারোপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে আওয়ামীলীগ পন্থী সদস্য সচিব, নেতাকর্মীদের তীব্র ক্ষোভ Logo ভিক্টোরিয়া কলেজ রোভার স্কাউটের ৫০ বছর উদযাপন Logo সংবিধান দিয়ে ফ্যাস্টিট হাসিনা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে:ইসহাক খন্দকার Logo সোনাইমুড়ীতে হোসেনপুর ফাতেমা (রা.) মহিলা মাদরাসার উদ্বোধন Logo মোহনপুরে ২০ বছর পরে আগামীকাল উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক কাউন্সিল Logo নাটোরে মহাশ্মশানে ডাকাতি, মন্দিরে লুটপাট ও খুন Logo রাজশাহী তানোরে দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রতারণায় প্রথম স্ত্রী নিঃস্ব Logo সাজাভোগ শেষে ভারত থেকে দেশে ফিরল ১৫ বাংলাদেশি নারী-শিশু Logo হোমনাকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রম্নতি ও অর্থছাড় বেড়েছে

এডিবি থেকে বাংলাদেশের ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই বাজারভিত্তিক সুদে নেওয়া। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকেও বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ  

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রম্নতি ও ঋণের অর্থছাড় বেড়েছে।

গত ২৫ ফেব্রম্নয়ারি প্রকাশিত ইআরডির প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহায়তা প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩০৬.১ শতাংশ, ঋণের অর্থছাড় বেড়েছে ৩.২৬ শতাংশ। একই সঙ্গে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ৪৪.৫২ শতাংশ।

উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে নতুন ৭.১৭ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের প্রতিশ্রম্নত ১.৭৬ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেকটাই বেশি।

 

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, ঋণ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যা প্রশংসনীয়।

তারা বলেন, অর্থবছরের শুরু থেকে অনেকগুলো প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ঋণচুক্তির উদ্যোগ নেওয়ার কারণে এই সাফল্য এসেছে। বিপরীতে আগের অর্থবছরে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নেওয়ায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পের চুক্তি বিলম্বিত হয়েছিল।

ইআরডির তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ ঋণের প্রতিশ্রম্নতি এসেছে প্রধান তিন উন্নয়ন সহযোগী এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক ও জাপান থেকে। তিন উন্নয়ন সহযোগী সম্মিলিতভাবে ৬.০৫ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সর্বোচ্চ ঋণের প্রতিশ্রম্নতি এসেছে এডিবি থেকে, মোট ২.৬২ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি এই সময়ে জাপান থেকে ২.০২ বিলিয়ন এবং বিশ্বব্যাংক থেকে ১.৪১ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রম্নতি পাওয়া গেছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়কালে উন্নয়ন সহায়তা সংস্থাগুলো মোট ৪.৩৯ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ৪.২৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।

এদিকে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাজারভিত্তিক ঋণের সুদহার বেড়েছে, যা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়িয়েছে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, সরকার অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে উন্নয়ন অংশীদারদের সুদ ও আসল পরিশোধে ১.৮৫ বিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়কালে ১.২৮ বিলিয়ন ডলার ছিল।

ইআরডির তথ্‌থ্যানুসারে, অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে শুধু সুদের অর্থ পরিশোধ বেড়েছে ১০৭.৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সুদ পরিশোধের জন্য ৭৬০.৭৪ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়েছে।

এই সময়ে সরকার বিভিন্ন ঋণের আসলের ১.০৯ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে।

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সোফর রেট ছিল ১ শতাংশের কম।

এছাড়া এ সময়ে বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণগ্রহণও ক্রমেই বাড়ছে, যার ফলে দেশের সুদ পরিশোধ বাড়ছে।

এডিবি থেকে বাংলাদেশের ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই বাজারভিত্তিক সুদে নেওয়া। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকেও বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ।

তাছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক থেকেও সীমিত পরিসরে বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নেয়।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান আন্তর্জাতিক সুদের হার অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ১.১৯ বিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ করবে বলে প্রক্ষেপণ হয়েছে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩), বাংলাদেশের সুদ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৯৪৪ মিলিয়ন ডলার, এর আগের অর্থবছরে যা ছিল ৪৬৯ মিলিয়ন ডলার।

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, সুদ পরিশোধের পাশাপাশি আসল পরিশোধের চাপও বাড়বে। বিভিন্ন বাজার সহায়তা ঋণ এবং কর্ণফুলী টানেল ও পদ্মা রেল লিঙ্কের মতো মেগা প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর এখন এসব ঋণের আসলের অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়

রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিনজন নিহত

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রম্নতি ও অর্থছাড় বেড়েছে

আপলোড সময় : 09:03:14 pm, Tuesday, 27 February 2024

এডিবি থেকে বাংলাদেশের ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই বাজারভিত্তিক সুদে নেওয়া। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকেও বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ  

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে বাংলাদেশের জন্য বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রম্নতি ও ঋণের অর্থছাড় বেড়েছে।

গত ২৫ ফেব্রম্নয়ারি প্রকাশিত ইআরডির প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে উন্নয়ন সহায়তা প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৩০৬.১ শতাংশ, ঋণের অর্থছাড় বেড়েছে ৩.২৬ শতাংশ। একই সঙ্গে সরকারের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেড়েছে ৪৪.৫২ শতাংশ।

উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে নতুন ৭.১৭ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের প্রতিশ্রম্নত ১.৭৬ বিলিয়ন ডলার থেকে অনেকটাই বেশি।

 

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, ঋণ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, যা প্রশংসনীয়।

তারা বলেন, অর্থবছরের শুরু থেকে অনেকগুলো প্রকল্পের জন্য উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ঋণচুক্তির উদ্যোগ নেওয়ার কারণে এই সাফল্য এসেছে। বিপরীতে আগের অর্থবছরে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নেওয়ায় বেশ কয়েকটি প্রকল্পের চুক্তি বিলম্বিত হয়েছিল।

ইআরডির তথ্য অনুসারে, বেশির ভাগ ঋণের প্রতিশ্রম্নতি এসেছে প্রধান তিন উন্নয়ন সহযোগী এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি), বিশ্বব্যাংক ও জাপান থেকে। তিন উন্নয়ন সহযোগী সম্মিলিতভাবে ৬.০৫ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছে।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে সর্বোচ্চ ঋণের প্রতিশ্রম্নতি এসেছে এডিবি থেকে, মোট ২.৬২ বিলিয়ন ডলার। পাশাপাশি এই সময়ে জাপান থেকে ২.০২ বিলিয়ন এবং বিশ্বব্যাংক থেকে ১.৪১ বিলিয়ন ডলার পাওয়ার প্রতিশ্রম্নতি পাওয়া গেছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়কালে উন্নয়ন সহায়তা সংস্থাগুলো মোট ৪.৩৯ বিলিয়ন ডলার অর্থছাড় করেছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ৪.২৫ বিলিয়ন ডলার ছিল।

এদিকে বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বাজারভিত্তিক ঋণের সুদহার বেড়েছে, যা বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ আরও বাড়িয়েছে।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, সরকার অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি মেয়াদে উন্নয়ন অংশীদারদের সুদ ও আসল পরিশোধে ১.৮৫ বিলিয়ন ডলার ছাড় করেছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়কালে ১.২৮ বিলিয়ন ডলার ছিল।

ইআরডির তথ্‌থ্যানুসারে, অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে শুধু সুদের অর্থ পরিশোধ বেড়েছে ১০৭.৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত সুদ পরিশোধের জন্য ৭৬০.৭৪ মিলিয়ন ডলার ছাড় করা হয়েছে।

এই সময়ে সরকার বিভিন্ন ঋণের আসলের ১.০৯ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে।

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সিকিউরড ওভারনাইট ফাইন্যান্সিং রেট (সোফর) ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। এ যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সোফর রেট ছিল ১ শতাংশের কম।

এছাড়া এ সময়ে বাংলাদেশের বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণগ্রহণও ক্রমেই বাড়ছে, যার ফলে দেশের সুদ পরিশোধ বাড়ছে।

এডিবি থেকে বাংলাদেশের ঋণের প্রায় ৭৫ শতাংশই বাজারভিত্তিক সুদে নেওয়া। এছাড়া এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) থেকেও বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নিয়ে থাকে বাংলাদেশ।

তাছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক থেকেও সীমিত পরিসরে বাজারভিত্তিক সুদহারে ঋণ নেয়।

ইআরডির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান আন্তর্জাতিক সুদের হার অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ ১.১৯ বিলিয়ন ডলার সুদ পরিশোধ করবে বলে প্রক্ষেপণ হয়েছে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩), বাংলাদেশের সুদ পরিশোধের পরিমাণ ছিল ৯৪৪ মিলিয়ন ডলার, এর আগের অর্থবছরে যা ছিল ৪৬৯ মিলিয়ন ডলার।

ইআরডি কর্মকর্তারা বলেন, সুদ পরিশোধের পাশাপাশি আসল পরিশোধের চাপও বাড়বে। বিভিন্ন বাজার সহায়তা ঋণ এবং কর্ণফুলী টানেল ও পদ্মা রেল লিঙ্কের মতো মেগা প্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার পর এখন এসব ঋণের আসলের অর্থ পরিশোধ করতে হবে।