বিশেষ প্রতিনিধি : চাকরি জীবনের শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নজরুল ইসলাম। তিনি চারঘাট উপজেলার জোতরঘু গ্রামের আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে। সেনাবাহিনীর চাকরি শেষে জমাকৃত টাকায় কেনা বাস গাড়িটি প্রতারকদের কাছে হারিয়ে তিনি এখন পথে পথে ঘুরছেন। এ বিষয়ে তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন।
জানা যায়, চাকরি জীবন শেষ করে শশুরের পরামর্শে গত বছরের মার্চ মাসে নজরুল ইসলাম একটি বাস গাড়ি কিনে রাজশাহী-আড়ানী রুটে চালানো শুরু করেন। ইফাদ মটরস থেকে ২৬ লাখ টাকা দামের ঢাকা মেট্রো- ব- ১৫- ৮৩৮২ নম্বরের গাড়িটি সাড়ে তিন লাখ টাকা জমা দিয়ে মাসিক কিস্তিতে গাড়িটি সংগ্রহ করেন। এরপর মে মাসে গাড়িটির ডেকোরেশনের কাজ করার জন্য গাড়িটি আবুল কালাম আজাদ তোতা নামের এক ব্যাক্তির মাধ্যমে ঢাকার আমিন বাজারের একটি গ্যারেজে নিয়ে যান। গ্যারেজের কাজ করা শেষে ঈদের মধ্যে ভাড়া দেওয়ার জন্য তোতা টাঙ্গাইল এলাকার হান্নান মিয়া নামের এক ড্রাইভারকে প্রদান করে। ঈদের ভাড়া আদায় শেষেও হান্নান মিয়া গাড়িটি আর ফেরত দেয়নি।
এ অবস্থায় নজরুল ইসলাম তার গাড়িটি খোঁজে আমিন বাজারের গ্যারেজ ও টাঙ্গাইলের মির্জাপুর এলাকায় যান। মির্জাপুরে গাড়ির খোঁজ পেলে তিনি সেখানকার জাহাঙ্গীর নামের একজন ব্যাক্তির মাধ্যমে গাড়িটি উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তাদের কথামত গাড়িটি পেতে ধার দেনা ৫৫ হাজার টাকাও প্রদান করেন। কিন্তু টাকা নিয়ে তারাও নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি স্থানীয় মির্জাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এখনো তিনি গাড়ি উদ্ধার করতে পারেননি।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, চাকরি জীবনের সব সঞ্চয় দিয়ে গাড়ির ব্যবসা শুরু করেছিলাম। গাড়িটি নিতে সাড়ে তিন লাখ টাকা জমা ও ডেকোরেশনের কাজসহ প্রায় ১২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতি মাসে কোম্পানি কিস্তির জন্য চাপ দিচ্ছে। এ অবস্থায় একমাত্র আয়ের উৎসটি হারিয়ে আমি পথে বসে গেছি। কিন্তু কোনো ভাবেই গাড়িটি উদ্ধার করতে পারছিনা। স্থানীয় থানা এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
চারঘাটের জোতরঘু গ্রামের ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন বলেন, নজরুল ভাই সৎ মানুষ। কিন্তু তার সাথে একটি প্রতারক চক্র প্রতারণার মাধ্যমে গাড়িটি আত্মসাতের চেষ্টা করছে। তার গাড়িটি উদ্ধার না হলে তিনি অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, প্রতারণা করলে কেউ পার পাবেন না। অভিযোগ বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।