Dhaka 3:48 am, Sunday, 5 January 2025

বাঘায় তফসিলভুক্ত জমি জবরদখল ও আম বাগান কর্তনের অভিযোগ

বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা পূর্ব পাড়া গ্রামের ভোগদখল কৃত বৈধ জমি দখল ও আম বাগান কর্তন এর ঘটনা ঘটেছে। বাউসা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আমির আলীর দুই ছেলে মোঃ আসলাম উদ্দিন ও মৃত কামাল উদ্দিন এর ক্রয়কৃত জমি ভোগদখল করে আসছেন দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর যাবত। তফসিলে উল্লেখিত বাউসা মৌজার ১২৯৯ খতিয়ানে দাগ নং ১০৪০০ জমির পরিমান ০.২৭ একর ও ১২৭২ খতিয়ানের দাগ নং ১০৬২৫ জমির পরিমান ০.৪৫ একর ক্রয় দলিল সূত্র ভোগদখল। উল্লেখিত ১০৪০০ নং দাগে ০.২৭ একর জমিতে ২ ভাই ভোগ দখলে আধাপাকা বসত বাড়ী ও ১০ টি আম গাছ রয়েছে প্রায় ৩৫ বছর যাবত। উল্লেখিত ১২৭২ খতিয়ানের ১০৬২৫ নং দাগে ০.৪৫ একর জমিতে মোঃ আসলাম উদ্দিন কৃষি কাজে ভোগ দখলে রয়েছে। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাজশাহী ২০-১৬৭ নং স্বারকের মাধ্যমে ১৬/৪ /২৪ ইং বাঘা ১১৬৮ পি/২৩ নং মামলার তফসিলভুক্ত জমির সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন বাঘা সহকারী কমিশনার(ভূমি)।

এর পরেও ০৮/৭/২৪ ইং বিজ্ঞ অতিরিক্ত  জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাজশাহীর ২০-২৬৫ নং স্বারকের মাধ্যমে পূনঃ তদন্ত প্রতিবেদনে সহকারী কমিশনার (ভূমি)মোঃ শামসুল ইসলাম প্রেরণ করেন। তদন্তে বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষ উপস্থিত ছিলেন।সরেজমিন যাচাই ও প্রয়োজনীয় শুনানী গ্রহন অন্তে প্রতীমান হয় যে বাদী কর্তৃক উল্লেখিত  ১০৪০০ নং দাগের ০.২৭ একর জমিতে বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিন ও তার ভাই মৃত কামাল উদ্দিন এর ওয়ারিশগণ আধাপাকা বাড়ী করে ভোগদখলে রয়েছেন এবং বাকী অংশে ১০ টি আম গাছ রয়েছে।

উল্লেখ্য,গত ১২/০৯/২৩ ইং বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিনগং বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত  রাজশাহী কর্তৃক ১১৬৮ পি/২০২৩ নং মামলার ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ধারা মোতাবেক তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নোটিশ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাঘা। ০৩/০৭/২৪ ইং  সকাল ১০ টার সময় সরেজমিনে তদন্তের জন্য বাদী -বিবাদী উভয়কে উপযুক্ত কাগজপত্রসহ উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শামসুল ইসলাম। উক্ত সময়ে বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিন গং বৈধ কাগজপত্র নিয়ে সময় মতো উপস্থিত থাকলেও  বিবাদী  নুর মোহাম্মদ তুফান ৫ নং বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সভাপতি  ঈদগাহ কমিটির বাউসা বাঘা হাজির হননি।

১৯৬২ সালের এস এ রেকর্ড অনুযায়ী মোঃ জামাল উদ্দিন এর নাম রয়েছে। বিগত ১৯৭২ সালে মোঃ জামাল উদ্দিন রেকর্ড মূলে উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করেন মোঃ আকবর আলী নিকটে। মোঃ আকবর আলী নিজ নামে নাম জারী(খারিজ) না করেই রেখে দেন।পরে ১৯৭৪ সালের আরএস রেকর্ডে থেকে যায় মোঃ জামাল উদ্দিন নিজ নাম। দলিলপত্র মূলে আকবর আলী গত ১৫/১১/১৯৭৯ তারিখে বিক্রয় দিলে এই একই সম্পত্তির দলিলে ক্রয় সূত্র মালিক হন মোঃ আসলাম উদ্দিন ও ভাই মোঃ কামাল উদ্দিন, উভয় পিতা মৃত আমির উদ্দিন প্রাং। একই ঘটনাক্রমে মোঃ আসলাম উদ্দিন  ও কামাল উদ্দিন পরে তাদের নিজ নামে নামজারী বা খারীজ না করে দলিল রেখে দেন।

পরিশেষে ২০২৩ সালে ১৯৭৪ সনের এসএ রেকর্ড মূলে মোঃ জামাল উদ্দিন নাম দেখে পুনরায় একই সম্পত্তি নিজ সন্তান ও তার স্ত্রীকে এবং ঈদগাহ নামে দান করেন মোঃ জামাল উদ্দিন। এনিয়ে গ্রাম্য শালিসি বৈধতা না পেয়ে আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন মোঃ আসলাম উদ্দিন গং।

এদিকে প্রতিবেদক অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে বুধবার (১জানুয়ারী২০২৫) গিয়ে দেখা যায়, বৈধ মালিক মোঃ কামাল উদ্দিন গং এর বড় বড় কয়েকটি আম গাছ স্থানীয় প্রভাবশালীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক কর্তন করা হচ্ছে। আদালতে মামলার বাদী পক্ষোকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

About Author Information

Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

বাঘায় তফসিলভুক্ত জমি জবরদখল ও আম বাগান কর্তনের অভিযোগ

আপলোড সময় : 05:17:40 pm, Thursday, 2 January 2025

বাঘা প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা পূর্ব পাড়া গ্রামের ভোগদখল কৃত বৈধ জমি দখল ও আম বাগান কর্তন এর ঘটনা ঘটেছে। বাউসা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত আমির আলীর দুই ছেলে মোঃ আসলাম উদ্দিন ও মৃত কামাল উদ্দিন এর ক্রয়কৃত জমি ভোগদখল করে আসছেন দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর যাবত। তফসিলে উল্লেখিত বাউসা মৌজার ১২৯৯ খতিয়ানে দাগ নং ১০৪০০ জমির পরিমান ০.২৭ একর ও ১২৭২ খতিয়ানের দাগ নং ১০৬২৫ জমির পরিমান ০.৪৫ একর ক্রয় দলিল সূত্র ভোগদখল। উল্লেখিত ১০৪০০ নং দাগে ০.২৭ একর জমিতে ২ ভাই ভোগ দখলে আধাপাকা বসত বাড়ী ও ১০ টি আম গাছ রয়েছে প্রায় ৩৫ বছর যাবত। উল্লেখিত ১২৭২ খতিয়ানের ১০৬২৫ নং দাগে ০.৪৫ একর জমিতে মোঃ আসলাম উদ্দিন কৃষি কাজে ভোগ দখলে রয়েছে। বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাজশাহী ২০-১৬৭ নং স্বারকের মাধ্যমে ১৬/৪ /২৪ ইং বাঘা ১১৬৮ পি/২৩ নং মামলার তফসিলভুক্ত জমির সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন বাঘা সহকারী কমিশনার(ভূমি)।

এর পরেও ০৮/৭/২৪ ইং বিজ্ঞ অতিরিক্ত  জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত রাজশাহীর ২০-২৬৫ নং স্বারকের মাধ্যমে পূনঃ তদন্ত প্রতিবেদনে সহকারী কমিশনার (ভূমি)মোঃ শামসুল ইসলাম প্রেরণ করেন। তদন্তে বাদী ও বিবাদী উভয়পক্ষ উপস্থিত ছিলেন।সরেজমিন যাচাই ও প্রয়োজনীয় শুনানী গ্রহন অন্তে প্রতীমান হয় যে বাদী কর্তৃক উল্লেখিত  ১০৪০০ নং দাগের ০.২৭ একর জমিতে বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিন ও তার ভাই মৃত কামাল উদ্দিন এর ওয়ারিশগণ আধাপাকা বাড়ী করে ভোগদখলে রয়েছেন এবং বাকী অংশে ১০ টি আম গাছ রয়েছে।

উল্লেখ্য,গত ১২/০৯/২৩ ইং বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিনগং বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত  রাজশাহী কর্তৃক ১১৬৮ পি/২০২৩ নং মামলার ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৪ ধারা মোতাবেক তফসিল বর্ণিত সম্পত্তির সরেজমিনে তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে নোটিশ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাঘা। ০৩/০৭/২৪ ইং  সকাল ১০ টার সময় সরেজমিনে তদন্তের জন্য বাদী -বিবাদী উভয়কে উপযুক্ত কাগজপত্রসহ উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ শামসুল ইসলাম। উক্ত সময়ে বাদী মোঃ আসলাম উদ্দিন গং বৈধ কাগজপত্র নিয়ে সময় মতো উপস্থিত থাকলেও  বিবাদী  নুর মোহাম্মদ তুফান ৫ নং বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সভাপতি  ঈদগাহ কমিটির বাউসা বাঘা হাজির হননি।

১৯৬২ সালের এস এ রেকর্ড অনুযায়ী মোঃ জামাল উদ্দিন এর নাম রয়েছে। বিগত ১৯৭২ সালে মোঃ জামাল উদ্দিন রেকর্ড মূলে উক্ত সম্পত্তি বিক্রি করেন মোঃ আকবর আলী নিকটে। মোঃ আকবর আলী নিজ নামে নাম জারী(খারিজ) না করেই রেখে দেন।পরে ১৯৭৪ সালের আরএস রেকর্ডে থেকে যায় মোঃ জামাল উদ্দিন নিজ নাম। দলিলপত্র মূলে আকবর আলী গত ১৫/১১/১৯৭৯ তারিখে বিক্রয় দিলে এই একই সম্পত্তির দলিলে ক্রয় সূত্র মালিক হন মোঃ আসলাম উদ্দিন ও ভাই মোঃ কামাল উদ্দিন, উভয় পিতা মৃত আমির উদ্দিন প্রাং। একই ঘটনাক্রমে মোঃ আসলাম উদ্দিন  ও কামাল উদ্দিন পরে তাদের নিজ নামে নামজারী বা খারীজ না করে দলিল রেখে দেন।

পরিশেষে ২০২৩ সালে ১৯৭৪ সনের এসএ রেকর্ড মূলে মোঃ জামাল উদ্দিন নাম দেখে পুনরায় একই সম্পত্তি নিজ সন্তান ও তার স্ত্রীকে এবং ঈদগাহ নামে দান করেন মোঃ জামাল উদ্দিন। এনিয়ে গ্রাম্য শালিসি বৈধতা না পেয়ে আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন মোঃ আসলাম উদ্দিন গং।

এদিকে প্রতিবেদক অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে বুধবার (১জানুয়ারী২০২৫) গিয়ে দেখা যায়, বৈধ মালিক মোঃ কামাল উদ্দিন গং এর বড় বড় কয়েকটি আম গাছ স্থানীয় প্রভাবশালীর সহযোগিতায় জোরপূর্বক কর্তন করা হচ্ছে। আদালতে মামলার বাদী পক্ষোকে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে।