বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্রগ্রাম নেওয়ার পথে ফেনীতে তার মৃত্যু হয়। এর আগে, একই দিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরফকিরা ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে এই ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, যুবকের মৃত্যুর বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছে।
নিহতের ভগ্নিপতি মো.জয়নাল আবেদীন আলমগীর অভিযোগ করে বলেন,গত ৬-৭ মাস আগে মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী (পলাতক) আমার থেকে ৩০ হাজার টাকা নিয়ে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭নম্বর ওয়ার্ডের মুছাপুর ক্লোজারের পশ্চিমের দা খালটি ইজারা দেয়। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর খালটি দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠে স্থানীয় কয়েকজন বিএনপি নেতা। গত বুধবার বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ও বিএনপি নেতা বাবরের নির্দেশে স্থানীয় সমীর খাঁন,জাবেদ,ওবায়দুল্যাহ খান সহ ১০-১৫জন দায়ের খালে আমাদের মাছ ধরার জালটি কেটে তাদের জাল বসিয়ে দেয়। খাল দখলকারীরা বলে আওয়ামী সরকার এখন নেই তাদের সময়ের দেওয়া ইজারা বাতিল। এই বলে তারা খালটি দখলে নেয়।
ভগ্নিপতি জয়নাল আবেদীন আলমগীর অভিযোগ করে আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আমিসহ আমাদের পরিবারের আরও চারজন সদস্য আমাদের জাল কেটে খাল দখল করে মাছ ধরার বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতে চরফকিরা ইউনিয়নের গুচ্ছ গ্রাম ঘাটে যাই। সেখানে স্থানীয় নেজাম (৪২) তার ছেলে সুজন (২৫) ও তারেক (২৬) এবং তাদের আত্মীয় তারেক (২৬) বাবলু (২৭) রুমনের (২৫ ) সাথে আমাদের বাগবিতন্ডা বেঁধে যায়। একপর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারি ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে নিজাম ডাকাত ও তার লোকজন ইউনুছ আলী এরশাদকে তলপেটে ছুরিকাঘাত করলে তার নাড়িভুড়ি বের হয়ে যায়। এছাড়া আরও চারজনকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। পরে গুরুতর আহত এরশাদকে প্রথমে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাত ৯টার দিকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্রগ্রাম নেওয়ার পথে ফেনীতে তার মৃত্যু হয়। এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর অভিযোগ করে বলেন,মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো.শাহজাহান ও তার ছোট ভাই উপজেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক মানছুরুল হক বাবরের নির্দেশে এই হামলা ও হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়।
চরফকিরা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি গোলাম রব্বানী বিপ্লব বলেন,বৃহস্পতিবার গুচ্ছ গ্রামের ঘাট এলাকায় একটি ভিটিতে মাটি ফেলাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে। এর সঙ্গে মুছাপুরের খাল দখলের বিষয়টিও জড়িত রয়েছে।
নিহতের ছোট ভাই সামছুদ্দিন বলেন, দুই মাস আগে উপজেলার গুচ্ছ গ্রামের সুভাষ নামে এক ব্যক্তির থেকে ১ ডিসমিল জমি তিন বছরের জন্য বন্ধক নেয় আমার বড় ভাই এরশাদ। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ওই জায়গার ওপর মাটি ফেলে ভিটি বাঁধার কাজ শুরু করে আমার ভাইয়েরা। তখন সুজন, জাবেদ,জিয়া খাঁন,সমীর খাঁন মেঘনা নদী হয়ে গুচ্ছ গ্রাম ঘাট দিয়ে সেখানে আক্রমণ চালায়। এতে আমার চার ভাই আহত হয়। বড় ভাইকে তলপেটে ছুরিকাঘাত করে। এছাড়া গত বুধবার বিকেলে বিএনপি নেতা শাহজাহান ও তার ভাই বাবরের নির্দেশে মুছাপুরের দায়ের খাল দখল করে আমাদের মাছ ধরার জাল কেটে হামলাকারীরা দখল করে।
নিহতের স্বজনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো.শাহজাহান অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, এই ঘটনার সাথে আমিও আমার ছোট ভাই বাবর কোনো ভাবেই জড়িত নেই। এটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। কোন নেতা ষড়যন্ত্র করে আমাদের নাম বলাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে বাবরের মুঠোফোনে কল করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।