নতুন উপদেষ্টা বানানোর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আপনি আবার নতুন কিছু উপদেষ্টা করেছেন। নতুন উপদেষ্টা করার অধিকার আপনার আছে। কিন্ত গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অংশীজন যারা তাদেরতো একটা অভিমত নেওয়া দরকার ছিল। যে মেয়েটি বিতর্কিত শেখ মুজিবের বায়োপিক ছবিতে অভিনয় করেছে। আপনারা তার স্বামীকে উপদেষ্টা বানিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারে বিএনপির সমর্থ রয়েছে বলে রিজভী বলেন, আপনি জনগণের সমর্থন নিয়ে আপনারা সরকার হয়েছেন। আপনাকে বিএনপি সমর্থন করেছে। যারা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছে তারা সমর্থন দিয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা সমর্থন দিয়েছে। কিন্ত আমরাতো আপনাদেরকেই সমর্থন করে যাচ্ছি। কিন্তু মাঝে মাঝে কথা বলতে হয় কেন।
তিনি বলেন, আলুর কেজি কেন হবে ৭৫-৮০ টাকা। আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেননা কেন। আপনি সিন্ডিকেটবাজদের কেন গ্রেপ্তার করতে পারছেনান। দুর্বলতা কোথায় এটা একটু জানতে চাই। এটাতো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মানুষের কাম্য নই। কেন এটা বাড়ছে,মানুষতো অনেক ধরনের প্রশ্ন করে।
অন্তর্বর্তী সরকারেক উদ্দেশ্য করে রিজভী আরও বলেন, আপনি নির্বাচনের কথা বলেন, কিন্ত নির্বাচনের কোন ডেটলাইন দেননা। কিন্ত এটা কেন। এটাতো রহস্যজনক। আপনারা সংস্কার করবেন। সবাই মনে করে অন্তবর্তীকালীন কি, স্কুলের হেডমাস্টার। আপনারা সংস্কারের একটা পাট দিবেন। সেটা তৈরী করে, সিলেবাস তৈরী করবেন,সিলেবাস তৈরী করে রাজনৈতিক দল গুলোকে আগে শিক্ষা দান করবেন। মনে হচ্ছে এটা তাদের ইচ্ছা। তারা এখন স্কুলের হেডমাস্টার বা শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। আপনারা মনে করছেন বিএনপির লোক যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আছে তারা অশিক্ষিত। আমরা তোমাদেরকে আগে সংস্কার শিখাই,সংস্কার শিখাই,তারপর তোমরা নির্বাচনের কথা বল।
এক উপদেষ্টার বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, তাদের একজন উপদেষ্টা বলছে, খালি নির্বাচন, নির্বাচন করলে হবে। উপদেষ্টাকে বলি আপনি কি হেডমাস্টার। আপনি আগে শিক্ষা দিবেন তারপর আমরা শিখব,পড়াশুনা করব। আমরা কি জানিনা সংস্কার কি। আপনারা প্রস্তাব দিতে পারেন। সেই প্রস্তাবটা দেবেন নির্বাচিত সরকারে কাছে। এজন্য নির্বাচন দিন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সারা দেশের মানুষ জেগে উঠেছে বলেই হাসিনার মত এত নির্মম, নিষ্ঠুর, এত রক্ত নিংড়ানো একটি স্বৈরাচারকে পরাজিত করা সম্ভব হয়েছে। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মনে করেছে তার বাপের জমিদারি। আর এই জমিদারি রক্ষার্থে সে দেশের জনগণকে জনগণ মনে করতনা। চাকর-বাকর মনে করত। জনগণকে চাকর-বাকর মনে করত বলে যারা প্রতিবাদ করেছে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় বক্তব্য রেখেছে,যারা মিছিল করেছে, জনসভা করেছে, স্লোগান দিয়েছে তাদেরকে সে শান্তিতে থাকতে দেয়নি। কাউকে অদৃশ্য করে দিয়েছে চিরদিনের জন্য, কাউকে বিচার বর্হিভূত হত্যার শিকার করিয়েছে। এই দানবকে বাংলােদেশর ছাত্ররা বিতাড়িত করেছে।
শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি টেনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বাপের বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে (ভারত) আপনি কি কি নিয়ে গেছেন। অভিযোগ করে বলেন, ভারতের আদানির সাথে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক দামে চুক্তি করেছে শেখ হাসিনা সরকার। যারা বিদ্যুতের সিন্ডিকেট করেছে,বাজারে বিভিন্ন ভাবে সিন্ডিকেট করেছে। সেই সিন্ডিকেটের টাকা কি আপনি আপনার স্বামীর বাড়িতে নিয়ে গেছেন। এটা জনগণের জিজ্ঞাসা, এটাই জনগণ আজকে জানতে চায়। আমরা বিদ্যুতের টাকা পাচার হওয়ার কথা শুনেছি, মেট্রোরেলের টাকা পাচার হওয়ার কথা শুনেছি। মেগা প্রজেক্টের অর্থ আত্মসাৎ হওয়ার কথা শুনেছি। আপনি দুর্নীতি করে নিজের লোকদের মধ্যে টাকা ভাগ করে টাকা গুলো পাচার করে দিয়েছেন। যার খেসারত জনগণকে দিতে হচ্ছে, অন্তর্বর্তীকালী সরকারকে দিতে হচ্ছে।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন,বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুর রহীম, এডভোকেট এবিএম জাকারিয়া, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আব্দুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য শামীমা বরকত লাকী, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস।
এ সময় নোয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য গোলাম মোমিত ফয়সাল, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো.মহসিন আলম উপস্থিত ছিলেন।