শীতের সকালে ঘাসের ডগায় জ্বলজ্বলে শিশির বিন্দু। আবছা কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে সূর্য।
হেমন্তের সকালে ঘাসের ডগায় জ্বলজ্বলে শিশির বিন্দু আবছা কুয়াশা ভেদ করে পূর্ব আকাশে উঁকি দিচ্ছে সূর্য খেজুর পাতার মাঝে সূর্যের উঁকি যেন চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে গাছির তবুও আপন মনে গাছ পরিচর্যায় করে যাচ্ছেন তিনি চারিদিকে পড়েছে শীতের আগমনী বার্তা শীতের আগমনী বার্তায় শুরু হয়েছে রস আহরণ তাই রাজশাহী দুর্গাপুর উপজেলার গাছিদেরও বেড়েছে ব্যস্ততা শীতের আগমনে খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে গাছিরা উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায়,বাড়ির উঠানে, জমির আইলে ও দিয়ে হাজার হাজার খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে গাছিরা তৎপর হয়ে উঠেছে বিকেল হবার সাথে সাথে চলছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য কলস লাগানোর ধুম আবার ভোর থেকেই এ কলসগুলো নামিয়ে রস জ্বাল দিয়ে লালি গুঁড় ও পাটালি গুড় তৈরি করা হয় জানা যায় রাজশাহী জেলা দুর্গাপুর উপজেলায় ৭ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এউপজেলায় প্রায় ৭৫ হেক্টর জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে খেজুর গাছ রয়েছে প্রতি বছর শীত মৌসুমে এসব খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা থেকে লালি গুড় পাটালি গুড় তৈরি করা হয় প্রায় ৮ থেকে ১০ মেট্রিক টন জানাই এ অঞ্চলে কৃষি কর্মকর্তা এসব লালি অত্যন্ত সুস্বাদু বিশেষ করে শীতের পিঠাপুলি খেজুরের রস বা গুঁড় ছাড়া কল্পনাই করা যায় না শীত মৌসুমের আগে আগে নভেম্বর মাস থেকে মার্চ এপ্রিল ৪ থেকে ৫ মাস পর্যন্ত রস সংগ্রহ করা যায় আর এ রস জাল করে লালি বা গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রির অর্থ দিয়ে প্রায় সারা বছর পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন গাছিরা গ্রামের এবং সড়কের পাশের খেজুর গাছ চুক্তিভিত্তিতে নিয়েছেন মালিকের কাছ থেকে প্রতিদিন প্রায় ১০০ খেজুর গাছ থেকে ৩- ৪মণ রস নামে। এ রস জাল করলে প্রায় দেড়/দুই মণ গুড় হয়। গুড়গুলো রাজশাহী বিভিন্ন বাজারে পাইকারি বাজারে বিক্রি করে যে অর্থ আসে এতে তারা খুব খুশি দুর্গাপুর পৌর শালঘড়িয়া এলাকার আবুল কালাম আজাদ বলেন,শীতের আগমনে হারিয়ে যায় সেই শৈশবে শীতের সকালে খেজুর রস আর মুড়ি ছাড়া যেন সকালই জমতো না আর’আমরা ছোটবেলায় দেখেছি আমাদের এলাকার গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহ করে বাজারে রস বিক্রি করতো এখন এলাকার গাছিরা আর খেজুর রস সংগ্রহ করে না গাছগুলো বছরের পর বছর পরিত্যক্ত থাকতো গত কয়েক বছর ধরে অন্য এলাকার গাছিদের কাছে গাছ চুক্তি দিচ্ছি। এতে করে গাছগুলোরও পরিচর্যা হচ্ছে আবার কিছু অর্থও আমরা পাচ্ছি এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানা পারভিন লাবনি বলেন, খেজুর গাছ একটি লাভজনক গাছ
এ গাছের পরিচর্যা করলে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যায় বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ অঞ্চলে খেজুর গাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে গাছিদের খেজুর গাছ কাটার কাজটি শিল্প আর দক্ষতায় ভরা ডাল কেটে গাছের শুভ্র বুক বের করার মধ্যে রয়েছে কৌশল, রয়েছে ধৈর্য ও অপেক্ষার পালাএ জন্য মৌসুম আসার সাথে সাথে দক্ষ গাছিদের কদর বাড়েএদিকে উপজেলার সচেতন মহল মনে করেন, খেজুর গাছ আমাদের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সাহিত্য তথা জীবনধারায় মিশে আছে। এই ঐতিহ্যকে আমাদের রক্ষা করতে হবে