Dhaka 3:30 pm, Sunday, 22 December 2024

ঢাকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তিতে আগ্রহী রোম

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায় রোম। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে আগ্রহী ইতালি। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার প্রত্যাশা করে দেশটি। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আসন্ন রাজনৈতিক পরামর্শক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ-ইতালি রাজনৈতিক পরামর্শক সভা হবে আগামীকাল রোববার। ওই সভায় যোগ দিতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল রিকার্ডো গুয়ারিগ্লিয়া। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

দু’দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শক সভা আয়োজনে গত বছর জুনে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় সভা হচ্ছে ঢাকায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সভায় অভিবাসন, বাণিজ্য, ইতালিতে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া ইতালির প্রতিনিধি দলের একটি অংশ আগামী ২৫ জুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, গত ৭ জানুয়ারির ভোটে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠি দিয়ে অভিনন্দন জানান। ওই সময় দু’দেশের সম্পর্ক গভীর করতে প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব করেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, ইতালি এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জামের বৈশিষ্ট্য, খুঁটিনাটি ও দাম উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছে। রিকার্ডো গুয়ারিগ্লিয়ার সফরে ওই প্রস্তাবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। প্রতিরক্ষা চুক্তির পাশাপাশি সমুদ্রে অংশীদারিত্ব বাড়াতে চায় ইতালি। এ জন্য বাংলাদেশের কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী দেশটি।

ইতালি থেকে বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম কেনে বাংলাদেশ। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে দেশটিতে। ফলে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি বাংলাদেশের কাছে গুরুত্ব পায়। তবে অবৈধ বাংলাদেশি ইস্যুতে অস্বস্তি রয়েছে ইতালি সরকারের মধ্যে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইউরোপে বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে। এর মধ্যে বেশি আবেদন পড়ছে ইতালিতে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ থেকে অবৈধ বাংলাদেশি ফেরাতে ২০১৭ সালে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ (এসওপি) নামে যে চুক্তি হয়, অবৈধ বাংলাদেশি ফেরাতে তার বাইরে গিয়ে আলাদা চুক্তি চায় ইতালি। এরই মধ্যে বাংলাদেশকে সে প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। ২৩ জুনের রাজনৈতিক পরামর্শক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশের অগ্রগতিকে খুবই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে রোম। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী দেশটি। ইতালির অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চায়। এ লক্ষ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও গুণীজন এরই মধ্যে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরামর্শক সভায় রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলাসহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও জাতিসংঘে দুই দেশের সহযোগিতা নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ঢাকার সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তিতে আগ্রহী রোম

আপলোড সময় : 05:31:01 pm, Saturday, 22 June 2024

প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায় রোম। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে আগ্রহী ইতালি। এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার প্রত্যাশা করে দেশটি। পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে আসন্ন রাজনৈতিক পরামর্শক সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশ-ইতালি রাজনৈতিক পরামর্শক সভা হবে আগামীকাল রোববার। ওই সভায় যোগ দিতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল নিয়ে দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল রিকার্ডো গুয়ারিগ্লিয়া। সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।

দু’দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে রাজনৈতিক পরামর্শক সভা আয়োজনে গত বছর জুনে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় সভা হচ্ছে ঢাকায়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, সভায় অভিবাসন, বাণিজ্য, ইতালিতে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও সম্ভাব্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া ইতালির প্রতিনিধি দলের একটি অংশ আগামী ২৫ জুন রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, গত ৭ জানুয়ারির ভোটে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী চিঠি দিয়ে অভিনন্দন জানান। ওই সময় দু’দেশের সম্পর্ক গভীর করতে প্রতিরক্ষা চুক্তি সইয়ের প্রস্তাব করেন তিনি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, ইতালি এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জামের বৈশিষ্ট্য, খুঁটিনাটি ও দাম উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছে। রিকার্ডো গুয়ারিগ্লিয়ার সফরে ওই প্রস্তাবের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হতে পারে। প্রতিরক্ষা চুক্তির পাশাপাশি সমুদ্রে অংশীদারিত্ব বাড়াতে চায় ইতালি। এ জন্য বাংলাদেশের কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী দেশটি।

ইতালি থেকে বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম কেনে বাংলাদেশ। বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশি রয়েছে দেশটিতে। ফলে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ইতালি বাংলাদেশের কাছে গুরুত্ব পায়। তবে অবৈধ বাংলাদেশি ইস্যুতে অস্বস্তি রয়েছে ইতালি সরকারের মধ্যে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইউরোপে বাংলাদেশিদের রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন বাড়ছে। এর মধ্যে বেশি আবেদন পড়ছে ইতালিতে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭ দেশ থেকে অবৈধ বাংলাদেশি ফেরাতে ২০১৭ সালে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ (এসওপি) নামে যে চুক্তি হয়, অবৈধ বাংলাদেশি ফেরাতে তার বাইরে গিয়ে আলাদা চুক্তি চায় ইতালি। এরই মধ্যে বাংলাদেশকে সে প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। ২৩ জুনের রাজনৈতিক পরামর্শক সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশের অগ্রগতিকে খুবই ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে রোম। তাই বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী দেশটি। ইতালির অনেক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য করতে চায়। এ লক্ষ্যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও গুণীজন এরই মধ্যে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, পরামর্শক সভায় রোহিঙ্গা সংকট, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ও সীমান্ত পরিস্থিতি, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলাসহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশল (আইপিএস) ও জাতিসংঘে দুই দেশের সহযোগিতা নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে।