Dhaka 10:22 pm, Saturday, 21 December 2024

ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই ব্রীজ নির্মাণ শুরু, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে- জনদুর্ভোগ চরমে!

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী বাজারে ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই চলাচলের প্রধান সড়কের ব্রীজটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলায়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিয়ে যাতায়াত করছেন। এছাড়াও নদীর আশেপাশের বাড়ি ঘর -দোকানপাট অপরিকল্পিত খননে ধসে পড়ার ঝুকিতে রয়েছে।

প্রায় ৪০ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে এক অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা ফেসবুকে নানারকম লেখালেখি করার পরও ডাইভারশান সড়কের বদলে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উল্টো পথে যাতায়াত করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে জনদূর্ভোগ ও হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবনের ঝুঁকি আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণে পুরাতন ট্রাংক রোড সুয়াগাজী বাজারের পাগলী নদীর ওপর দীর্ঘ একটি লম্বা ব্রীজ ছিল। ওই ব্রীজের ওপর দিয়েই স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রী ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু পাগলী নদীর ওপর থাকা প্রাচীন এই ব্রিজটি গত কয়েকবছর ধরে প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায়, এলাকায় ‘মরণ সেতু’ খ্যাত ওই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে ইতিমধ্যে পিলার দিয়ে বাধা প্রদান করা হয়েছিল।

এ অবস্থায় ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন করে সেখানে একটি বড় ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার।
জানা যায়, এলাকাবাসির মারাত্মক দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সম্প্রতি সেখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ইতিমধ্যে দরপত্র হয়ে যাওয়ার পর মেসার্স এনাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজটির কার্যাদেশ পায়।
কিন্তু অভিযোগ পাওয়া গেছে, কার্যাদেশ পাওয়ার পর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ি ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটির সম্প্রতি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলে। ফলে আশপাশের প্রায় ৪০ টি গ্রামের মানুষের সড়ক যাতায়াতে এক চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়।
এদিকে ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই আগের ব্রীজটি ভেঙ্গে ফেলায়, সৃষ্ট জনদূর্ভোগ নিয়ে স্থানীয়রা ফেসবুকে সচিত্র লেখালেখি শুরু করলে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল নিরব ভুমিকায় রয়েছেন ।
এলাকাবাসির অভিযোগ, ডাইভারশান সড়কের বদলে রহস্যজনক কারণে কেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও জনগণকে মহাসড়ক উল্টো মুখি করে দেয়া হল, সেটিই এলাকাবাসি বুঝতে পারছেনা।

ব্রিজ সংলগ্ন বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘ডাইভারশান সেতু না করেই পাকা ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায়, বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আসতে প্রতিদিন প্রচন্ড দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটির দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।’
বি এন পির স্থানীয় নেতা রুবেল বলেন, ‘ব্রীজটি ভাঙ্গার আগে নিয়ম অনুযায়ি ডাইভারশান সড়কটি কেন নির্মাণ করা হলনা, আমরা তার রহস্য জানতে চাই। পাশাপা এলাকাবাসিও জানতে চায়।
সুয়াগাজী এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া বলেন, ‘ডাইভারশান সড়ক নির্মাণের আগেই কেন ব্রীজটি ভাঙ্গা হল, সেটি সবার আগে খুঁজে বের করা দরকার। তাই ডাইভারশান সড়কসহ নতুন ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট সার্বিক সহযোগিতা চাই।

কাজের ধীর গতি ও ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী সোহাগ বলেন, আমার কাছে এই মূহুর্তে ওয়ার্ক অর্ডারের কাগজ না থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।

এদিকে এ বিষয়ে ব্রিজের কার্যাদেশ পাওয়া নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক এনাম হোসেন চিকিৎসা জনিত কারণে দেশের বাহিরে থাকায় বিস্তারিত জানা যায়নি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয়
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com

ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই ব্রীজ নির্মাণ শুরু, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে- জনদুর্ভোগ চরমে!

আপলোড সময় : 06:10:04 pm, Saturday, 7 December 2024

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সুয়াগাজী বাজারে ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই চলাচলের প্রধান সড়কের ব্রীজটি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলায়, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার হাজার হাজার শিক্ষার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকা -চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিয়ে যাতায়াত করছেন। এছাড়াও নদীর আশেপাশের বাড়ি ঘর -দোকানপাট অপরিকল্পিত খননে ধসে পড়ার ঝুকিতে রয়েছে।

প্রায় ৪০ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে এক অবর্ণনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা ফেসবুকে নানারকম লেখালেখি করার পরও ডাইভারশান সড়কের বদলে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের উল্টো পথে যাতায়াত করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে জনদূর্ভোগ ও হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবনের ঝুঁকি আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসির।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সদর দক্ষিণে পুরাতন ট্রাংক রোড সুয়াগাজী বাজারের পাগলী নদীর ওপর দীর্ঘ একটি লম্বা ব্রীজ ছিল। ওই ব্রীজের ওপর দিয়েই স্কুল, কলেজের ছাত্র ছাত্রী ও আশপাশের কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু পাগলী নদীর ওপর থাকা প্রাচীন এই ব্রিজটি গত কয়েকবছর ধরে প্রচন্ড ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায়, এলাকায় ‘মরণ সেতু’ খ্যাত ওই সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করতে ইতিমধ্যে পিলার দিয়ে বাধা প্রদান করা হয়েছিল।

এ অবস্থায় ব্রিজটি ভেঙ্গে নতুন করে সেখানে একটি বড় ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বর্তমান সরকার।
জানা যায়, এলাকাবাসির মারাত্মক দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে সম্প্রতি সেখানে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করে সড়ক ও জনপদ বিভাগ। ইতিমধ্যে দরপত্র হয়ে যাওয়ার পর মেসার্স এনাম এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজটির কার্যাদেশ পায়।
কিন্তু অভিযোগ পাওয়া গেছে, কার্যাদেশ পাওয়ার পর ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিয়ম অনুযায়ি ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রীজটির সম্প্রতি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলে। ফলে আশপাশের প্রায় ৪০ টি গ্রামের মানুষের সড়ক যাতায়াতে এক চরম দূর্ভোগে পড়তে হয়।
এদিকে ডাইভারশান সড়ক নির্মাণ না করেই আগের ব্রীজটি ভেঙ্গে ফেলায়, সৃষ্ট জনদূর্ভোগ নিয়ে স্থানীয়রা ফেসবুকে সচিত্র লেখালেখি শুরু করলে এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহল নিরব ভুমিকায় রয়েছেন ।
এলাকাবাসির অভিযোগ, ডাইভারশান সড়কের বদলে রহস্যজনক কারণে কেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও জনগণকে মহাসড়ক উল্টো মুখি করে দেয়া হল, সেটিই এলাকাবাসি বুঝতে পারছেনা।

ব্রিজ সংলগ্ন বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক বলেন, ‘ডাইভারশান সেতু না করেই পাকা ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলায়, বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের স্কুলে আসতে প্রতিদিন প্রচন্ড দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এটির দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।’
বি এন পির স্থানীয় নেতা রুবেল বলেন, ‘ব্রীজটি ভাঙ্গার আগে নিয়ম অনুযায়ি ডাইভারশান সড়কটি কেন নির্মাণ করা হলনা, আমরা তার রহস্য জানতে চাই। পাশাপা এলাকাবাসিও জানতে চায়।
সুয়াগাজী এলাকার বাসিন্দা হুমায়ুন মিয়া বলেন, ‘ডাইভারশান সড়ক নির্মাণের আগেই কেন ব্রীজটি ভাঙ্গা হল, সেটি সবার আগে খুঁজে বের করা দরকার। তাই ডাইভারশান সড়কসহ নতুন ব্রিজটি দ্রুত নির্মাণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট সার্বিক সহযোগিতা চাই।

কাজের ধীর গতি ও ব্রিজ নির্মাণের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী সোহাগ বলেন, আমার কাছে এই মূহুর্তে ওয়ার্ক অর্ডারের কাগজ না থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।

এদিকে এ বিষয়ে ব্রিজের কার্যাদেশ পাওয়া নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক এনাম হোসেন চিকিৎসা জনিত কারণে দেশের বাহিরে থাকায় বিস্তারিত জানা যায়নি।